শেহবাজ শরিফ ক্ষমতায় ফিরতেই পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সম্পর্ক ক্রমশ বদলাতে শুরু করেছে। পশ্চিমের দেশগুলোর কাছের মানুষ এই শরিফ ভাইয়েরা। বড় শরিফ নওয়াজ পাকিস্তান থেকে নির্বাসিত হওয়ার পরও দীর্ঘদিন ইংল্যান্ড আর সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। আর, ছোট শেহবাজ ক্ষমতায় এসেই আমেরিকার কাছের হয়ে উঠেছেন। বিশ্বজুড়ে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরোধিতা করেনি নয়াদিল্লি।
যার জন্য ভারতের সঙ্গে আমেরিকা এবং ইউরোপের কিছু দেশের সম্পর্ক সামান্য হলেও তিক্ত হয়েছে। যাদের বারবার বলার পরও রাশিয়া থেকে স্বল্পমূল্যে তেল আমদানি ভারত বন্ধ করেনি। কিন্তু, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক সামান্য বিস্বাদ হতেই আসরে নেমে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ঠান্ডা যুদ্ধের দিনগুলোর মত সম্প্রতি বেশ কয়েকবার পাকিস্তানের হয়ে কথা বলেছে মার্কিন প্রশাসনের একাংশ।
কিন্তু, এতেই থামতে নারাজ শেহবাজ। ইমরান খানের জমানায় আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক তিক্ত হয়েছিল। সেই সময় চিনের সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়েছিলেন ইমরান। বারবার চিন সফর করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি, ইমরান আর তাঁর দল পাকিস্তানে বিপুল জনসমর্থন পাচ্ছেন। এর পিছনে চিনের হাত রয়েছে। এই অনুমান করে এবার সটান বেজিঙে হাজির হয়েছেন শেহবাজ। কিন্তু, চিন মানেই ভারতের বিরোধিতার এক কেন্দ্রভূমি। মুখে যাই বলুক, চিন কাজে ভারতের বিরোধিতা চালিয়েই যায়। উপরি জুটে গিয়েছে পাকিস্তান।
এবার কী এই দুই শত্রুশক্তির লক্ষ্য? তা জানার চেষ্টা করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তবে, প্রকাশ্যে অবশ্য শেহবাজের চিন সফরের পিছনে অন্য কারণে দেখাচ্ছে পাকিস্তান ও চিন। সেই কারণ হল, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তৃতীয়বারের জন্য সেদেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তারপর চিন সফরকারী প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবেই শেহবাজের এই দুই দিনের বেজিং সফর। কিন্তু, শুধু শুভেচ্ছা
জানাতেই দু'দিন!
আরও পড়ুন- টুইটার নিয়ে মাস্কের উচ্চাভিলাষ এক ভারতীয়ই পূরণ করছেন, জানেন কে?
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষবার বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তবে, তখন ইমরান ছিলেন তখতে। এতদিন ক্ষমতায় থেকেও শেহবাজ যাননি। তাহলে আচমকা কীসের দরকার পড়ল, তা-ও চিনে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের আর্থিক যোগাযোগ রয়েছে। সেটা এই সফরের অন্যতম কারণ। ইমরান জমানার চেয়ে এমনিতেই পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতিকে ভালো করেছেন ছোট শরিফ। সেই কারণে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার ঋণও পাচ্ছে পাকিস্তান।
এই পরিস্থিতিতে শরিফ চিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চান। তিনি পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় চিন শরিফের প্রশংসা করেছিল। চিনের সঙ্গে সেই সম্পর্কই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও চাইছেন নওয়াজ। এমনটাই মনে করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। সফরের বাকি উদ্দেশ্যটা যেন বলে দেবে সময়ই।
Read full story in English