গুজরাট হাইকোর্ট একটি ফৌজদারি মানহানির মামলায় তাঁর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে করা রাহুল গান্ধীর আবেদন খারিজ করেছে। ওই ফৌজদারি মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসে সুরাটের এক দায়রা আদালত, তার আগের মাসে এক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বারা গৃহীত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার নির্দেশের বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেতার আপিল খারিজ করেছিল। যার জেরে ২০১৯ সালে কেরলের ওয়ানাদ থেকে লোকসভায় নির্বাচিত রাহুল গান্ধী সাংসদ পদে যোগ্যতা হারান। এবার হাইকোর্টও তাঁর পাশে না-দাঁড়ানোয় রাহুল গুজরাট হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে পারেন।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলাটা কী নিয়ে?
ঘটনাটি ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিলের। রাহুল গান্ধী লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রচার করছিলেন। সেই সময় তিনি কর্ণাটকের কোলারে একটি নির্বাচনী সমাবেশে হিন্দিতে বলেছিলেন, 'কেন সব চোর, সে নীরব মোদী (পলাতক অলঙ্কার ব্যবসায়ী), ললিত মোদী (প্রাক্তন ক্রিকেট প্রশাসক), বা নরেন্দ্র মোদী, উপাধি কি মোদী?' উল্লিখিতদের মধ্যে নীরব ও ললিত মোদীর বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। এই তিন জনকে একাসনে বসাতেই রাহুল গান্ধী নীরব ও ললিত মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর তুলনা টেনেছিলেন।
দুই বছরের সাজা
রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার পরের দিনই গুজরাট বিজেপির স্থানীয় নেতা তথা গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদী সুরাটের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি ব্যক্তিগত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগে তিনি মোদী নাম দিয়ে সকলের মানহানি করার অভিযোগ এনেছিলেন কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ ম্যাজিস্ট্রেট এইচএইচ ভার্মা রাহুলকে আইপিসি ধারা ৫০০-এর অধীনে ফৌজদারি মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তাঁকে সেই ধারার অধীনে সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- আর ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন না, জানালেন মহিলা পরিচালিত বুথের প্রিসাইডিং অফিসার
সাংসদ পদে অযোগ্য
আদালতের এই সিদ্ধান্ত ১৯৫১ সালের প্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারা অনুযায়ী রাহুল গান্ধীকে সাংসদ পদে অযোগ্য ঘোষণা করে। কারণ, এই আইন অনুযায়ী, 'কোনও অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে, সেই ব্যক্তিকে এই ধরনের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তারিখ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। আর, তাঁর মুক্তির পর থেকে আরও ছয় বছরের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়।'