সংসদে ক্যাব বিতর্কে বারবার উঠে এসেছে নেহরু-লিয়াকত চুক্তির কথা। ১৯৫০ সালে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল দিল্লিতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ওই চুক্তি অনুসারে ভারত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিলেও পাকিস্তান তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁর দাবি, এই ভুলের সংশোধন হবে ক্যাবের মাধ্যমে।
Advertisment
ভারত সরকার ও পাকিস্তানের মধ্যে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার সম্পর্কিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৫০ সালের ৮ এপ্রিল। সে সময়ে জওহরলাল নেহরু ভারতের ও লিয়াকত আলি খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
নেহরু-লিয়াকত চুক্তি দিল্লি চুক্তি নামেও পরিচিত। দুই দেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কীরকম আচরণ করা হবে তার পরিকাঠামোর কথা ছিল এই চুক্তিতে।
দেশভাগের পর সংখ্যালঘুদের অবস্থা এবং প্রভূত পরিমাণ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিলক্ষিত করবার পর এই চুক্তির প্রয়োজন অনুভূত হয়। ১৯৫০ সালে ভারত ও পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)-এর ১০ লক্ষেরও বেশি হিন্দু ও মুসলমান উদ্বাস্তু হন। ১৯৫০ সালে পূর্ব পাকিস্তানে এবং নোয়াখালিতে ব্যাপক দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতেই এই অবস্থা হয়েছিল।
ভারত ও পাকিস্তান কিসে সহমত হয়েছিল?
চুক্তির শুরুতেই বলা হয়েছে, "ভারত ও পাকিস্তানের সরকার উভয়েই নিজেদের এলাকায় সংখ্যালঘুদের ধর্ম নির্বিশেষে নাগরিকত্বে সমমর্যাদা, জীবন, সংস্কৃতি, সম্পত্তি এবং আইন মোতাবেক ব্যক্তিগত সম্মান ও নিজ দেশে চলাফেরা, পেশা, বক্তব্য ও অর্চনার স্বাধীনতা দিতে সম্মত হয়েছে।"
বলা হয়েছিল, "সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগুরুদের মতই দেশের সামাজিক জীবনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, রাজনৈতিক ও অন্যান্য পদে থাকতে পারবেন, এবং দেশের প্রশাসনিক ও সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করতে পারবেন। উভয় সরকারই এগুলিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করছে এবং এগুলিকে কার্যকর করবে।"
আরও বলা হয়েছিল, "ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভারতের সংবিধানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যেখানে সমস্ত সংখ্যালঘুদের এই অধিকারগুলি সুনিশ্চিত করা হয়েছে, এবং পাকিস্তানের প্রঝানমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের গণপরিষদেও এই লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।"
"দুই সরকারই নিজ নিজ দেশের প্রতি সংখ্যালঘুদের আনুগত্যের বিষয়টি জোর দিতে চায় এবং নিজ নিজ দেশের সরকার তাদের ক্ষোভের প্রতিকার করবে।"