Advertisment

নর্দমার জল থেকে করোনা সংক্রমণ হতে পারে কি?

ব্রিটেনের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও সতর্ক করেছেন যে শ্বাসনালীতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নেগেটিভ হওয়ার ৩৩ দিন পর পর্যন্তও মানুষের মলে এই ভাইরাস মিলতে পারে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Coronavirus sewage water

করোনাভাইরাস জলের মাধ্যমে মুখ্যত সংক্রমিত হয় না, কিন্তু এই ভাইরাস কণা সংক্রামক কিনা তা এখনও অস্পষ্ট

নর্দমার জল দিয়ে নভেল করোনাভাইরাস বাহিত হচ্ছে কিনা তা বোঝার সুবিধের জন্য একটি নয়া প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা। এই নজরদারি প্রযুক্তির মাধ্যমে ভাইরাসের রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিডকে চিহ্নিত করা যাবে।

Advertisment

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও সে দেশের জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা CSIRO-র গবেষকরা কুইন্সল্যান্ডের অপরিশোধিত জলে করোনাভাইরাসের হদিশ পেয়েছেন। তাঁরা একটি শহরতলির পাম্পিং স্টেশন ও দুটি নর্দমার জলের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। এই জলের নমুনা তাঁরা আরটি-পিসিআর টেস্ট করেন, যাতে সার্স কোভ ২ ভাইরাসের জিনের অংশ মিলেছে। এভাবেই হাসপাতালগুলিতে মানবদেহের নমুনা থেকে ভাইরাস চিহ্নিত করা হয়।

আরও পড়ুন, করোনা আক্রান্তের ৯০ শতাংশ ১০ রাজ্যে

তাঁদের গবেষণাপত্র সায়েন্স ফর দ্য টোটাল এনভায়ার্নমেন্ট জার্নালে প্রকাশের জন্য অনুমোদিত হয়েছে।

নর্দমার জলে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে সমীক্ষা

এই গবেষণার প্রেক্ষিত ছিল কিছু কোভিড ১৯ রোগীদের মলে ভাইরাসের হদিশ। উপসর্গবিহীন ও উপসর্গযুক্ত উভয় ধরনের রোগীর মলেই ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই তথ্য অপরিশোধিত নর্দমার জলে ভাইরাস চিহ্নিত করতে সাহায্য করেছে।

করোনাভাইরাস জলের মাধ্যমে মুখ্যত সংক্রমিত হয় না, কিন্তু এই ভাইরাস কণা সংক্রামক কিনা তা এখনও অস্পষ্ট। মল-মুখ পথে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয় কি না, তাও এখনও প্রমাণিত নয়।

হল্যান্ডের কেডব্লুআর ওয়াটারসাইকেল রিসার্চ ইনস্টিট্যুট অনুসারে, এই ভাইরাসের আরএনএ কেবলমাত্র নোংরা জলে স্থিতিশীল থাকতে পারে, যদি তা প্রোটিনের আবরণ দ্বারা সুরক্ষিত হয়। এই সংস্থা এও বলেছে যে নোংরা জলে উপস্থিত ভাইরাস মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

সংস্থার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, "আমরা এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য সংক্রমণ কার্যকারিতা নিয়ে খুব সামান্যই জানি কিন্তু এখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছে, নর্দমার জলে উপস্থিত করোনাভাইরাস মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে না।"

ব্রিটেনের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও সতর্ক করেছেন যে শ্বাসনালীতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নেগেটিভ হওয়ার ৩৩ দিন পর পর্যন্তও মানুষের মলে এই ভাইরাস মিলতে পারে।

২০০৩ সালে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল মানুষের মলে উপস্থিত সার্স ভাইরাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৪-৫ দিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।

আরও পড়ুন, অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় মাঝারি, ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলি কী পেল?

তাহলে এই গবেষণা জরুরি কেন?

নোংরা জল ভিত্তিক এই ধরনের মহামারী বিশ্লেষণের ফলে একটি এলাকায় সম্ভাব্য কতজন ভাইরাস আক্রান্ত তার হিসেব মিলতে পারে। বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে অনেকেরই কোনও রকম উপসর্গ নেই, সেখানে সংক্রমিত রোগী চিহ্নিত করা কঠিন হতে পারে।

নোংরা জলে ভাইরাসের উপস্থিতি রোগ সংক্রমণের সংকেতও দিতে পারে, যার ফলে বোঝা যায় যে এই সংক্রমণ কমছে না বাড়ছে। তবে গবেষকরা বলছেন নোংরা জলের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে পরিমাণগত অনুমান করা একটা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।

এই প্রবণতা যদি আবিষ্কার করা সম্ভব হয় তাহলে সিদ্ধান্ত প্রণেতাদের পক্ষে কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যাপক পরিমাণ টেস্ট বাড়ানো যাবে। মঙ্গলবার গার্ডিয়ান পত্রিকায় এই পরীক্ষার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে এবং বলা হয়েছে ভিক্টোরিয়ার স্বাস্থ্য দফতর জুন থেকে নিয়মিত অপরিশোধিত জলের টেস্টিং শুরু করতে পারে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment