The Supreme Court: বিজেপির আইটি সেলের বিরুদ্ধে একটি ইউটিউব ভিডিও পুনরায় টুইট করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার জেরে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের হয়েছিল। যা নিম্ন আদালতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মানা করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এই ব্যাপারে বলেছে, পুনরায় টুইট করার মানেই যে সমর্থন করা, এমনটা কিন্তু না। যদি এর অর্থ সমর্থন করা হয়, তবেই এক্ষেত্রে আইন নিজের পথে চলতে পারে। কিন্তু এর অর্থ এমনটাও হতে পারে, আপনি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইটে কিছু খুঁজে পেয়েছেন, আর সেই তথ্য ভাগ করে নিচ্ছেন। আদালতে কেজরিওয়ালের হয়ে সওয়াল করেছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, 'যদি ইন্টারনেটে শেয়ার করাটা ভুল হয়েছে বলে জানা থাকত, তবে ভুলটা স্বীকার করতে আমার মক্কেলের কোনও বাধা নেই।'
কী এই মামলা, এর সমস্যাটাই বা কোথায়?
কেজরিওয়াল যে ইউটিউব ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন, সেটা ২০১৮ সালে প্রথম পোস্ট করেছিলেন ইউটিউবার ধ্রুব রাঠি। সেই মানহানিকর ভিডিও পুনরায় টুইট করার জন্যই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে সমন করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সমনের নির্দেশ বহাল রেখেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই মামলাই এবার সুপ্রিম কোর্ট এগিয়ে নিয়ে যেতে বারণ করল। হাইকোর্টের বিচারপতি স্বরানা কান্ত শর্মা তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন যে, মানহানির অভিযোগে দুষ্ট প্রতিটি টুইট পুনরায় টুইট করা আইপিসি ধারা ৪৯৯-এর অধীনে 'প্রকাশনা' হিসেবে গণ্য হতে বাধ্য। যখন কোনও ব্যক্তি মানহানিকর পোস্ট টুইট করেন, তখন তার প্রভাব 'শুধুমাত্র কানে কানে ফিসফিস করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। তার বাইরেও প্রসারিত হয়।' কেজরিওয়াল মোট দুটি আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি আদেশে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে এক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে তলব করেছিল। অপরটি ২০১৯ সালের অক্টোবরের। ২০১৯ সালের অক্টোবরে দায়রা আদালত সমনের বিরুদ্ধে কেজরিওয়ালের পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। অভিযোগকারী বিকাশ সাংকৃত্যন দাবি করেছিলেন যে রাঠি ইউটিউবে 'বিজেপি আইটি সেল পার্ট-২' শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করেছিলেন, যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে, 'কিছু মানহানিকর বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।'
আরও পড়ুন- আইডি বিস্ফোরণ! শুনলেই কেঁপে ওঠেন আমজনতা, কিন্তু কী এই বিস্ফোরক?
মানহানি হয়েছে, তা আইন কীভাবে ঠিক করে?
ভারতীয় আইন অনুসারে, মানহানি একটি দেওয়ানি বা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। সিভিল বা দেওয়ানি মামলায় মানহানি হতে পারে লেখার মাধ্যমে বা কথ্যভাষায় অপবাদের মাধ্যমে। যার বিরুদ্ধে নির্যাতন আইন প্রয়োগ করা যায়। এটি শাস্তিযোগ্য। পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিপূরণেরও যোগ্য। ক্ষতির সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে দেওয়ানি মামলায় ক্ষয়ক্ষতি গণনা করা হয়। ফৌজদারি মামলায়, মানহানির অভিযোগ অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। সন্দেহের বাইরে তা প্রমাণিত হতে হবে। ভারতীয় দণ্ডবিধির (ফৌজদারি মানহানি) ধারা ৪৯৯ বলে, 'যে কেউ, শব্দ দ্বারা বলা বা পড়ার উদ্দেশ্যে, লক্ষণ বা দৃশ্যমান উপস্থাপনা দ্বারা ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে অথবা জেনেবুঝে বা না-বুঝে কোনও ব্যক্তির সম্পর্কে কোনও অভিযোগ তুললে বা প্রকাশ করলে, সেই ধরনের অভিযোগের জেরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির খ্যাতির ক্ষতি হবে বলে বিশ্বাস করার কারণ থাকলে, তা মানহানির পর্যায়ে পড়বে।' ধারার ৫০০ অনুযায়ী, ফৌজদারি মানহানি মামলায় ব্যক্তির জরিমানা-সহ বা জরিমানা ছাড়াই দুই বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।