Advertisment

Explained: সেন্ট্রাল ভিস্তা ও হেরিটেজে আঁধার

Central Vista: আপাতত সারা দেশে ভিস্তা নিয়ে নানা প্রশ্ন। হেরিটেজের এত বড় দুর্দিন আগে এসেছে কি?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Central Vista

হেরিটেজের এত বড় দুর্দিন আগে এসেছে কি?

Central Vista Explained: কোভিড-কালেও সংসদ ভবন চত্বর ঢেলে সাজানোর সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প-প্রক্রিয়া এগোচ্ছেই। কিন্তু জনপথে হেরিটেজ বিল্ডিং, ন্যাশনাল মিউজিয়াম, ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য আর্টস, এবং ন্যাশনাল আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়া-র ভবিষ্যৎ কী? এই তিন হেরিটেজই হারাতে চলেছে দেশ। কারণ, সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের এলাকাতেই রয়েছে এই তিনটি।

Advertisment

ন্যাশনাল আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়া

কেন্দ্রীয় গৃহনির্মাণ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি বলেছিলেন, 'কোনও হেরিটেজ বিল্ডিংই ভিস্তা প্রকল্পের জন্য ভেঙে ফেলা হবে না।' এবং ন্যাশনাল আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়ার মূল বাড়ির গায়ে ছিটেফোঁটা আঁচও আসবে না। যদিও সেন্ট্রাল ভিস্তার নকশা অন্য কথা বলছে। বলছে, ন্যাশনাল আর্কাইভের অ্যানেক্স বিল্ডিংটি ভেঙে ফেলতে হবে, কারণ তা ভিস্তার পরিকল্পিত অফিস বাড়ির পথের কাঁটা।

একটু এর ইতিহাসে উঁকি দিই। ন্যাশনাল আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়ার ইতিহাস সোনা-খচিত। ১৮৮৯ সালে বম্বের এলফিস্টোন কলেজের অধ্যাপক জি ডবলিউ ফরেস্টকে বলা হয় গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়ার ফরেন ডিপার্টমেন্টের রেকর্ডসে নজর দিতে। ফরেস্ট কেন্দ্রীয় ভাবে সব রেকর্ড রক্ষণাবেক্ষণে জোর সওয়াল করেন। তারই জেরে ১৮৯১ সালের ১১ মার্চ, কলকাতায় ইম্পিরিয়াল রেকর্ডস ডিপার্টমেন্ট খোলা হয় ইম্পিরিয়াল সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং-এ। ১৯১১ সালে কলকাতা থেকে নতুন দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তরিত হয়।

১৯২৬ সালে ইম্পিরিয়াল রেকর্ডস ডিপার্টমেন্ট এই ন্যাশনাল আর্কাইভের বিল্ডিংয়ে চলে আসে। স্বাধীনতার পর যার নাম হয়, ন্যাশনাল আর্কাইভ অফ ইন্ডিয়া। এডুইন লুটিয়েন্স এই বিল্ডিংয়ের নকশা করেছিলেন, নকশার পয়েন্ট বি-তে এটিতে রাখা হয়। কিংসওয়ে মানে রাজপথ এবং কুইন্সওয়ে মানে জনপথ যেখানে একে অপরকে ছেদ করছে, সেই অঞ্চলে এই বাড়ি। এখানে রয়েছে ৪৫ লক্ষ ফাইল, ২৫ হাজার দুর্লভ পান্ডুলিপি, এক লক্ষের বেশি মানচিত্র, এবং মুঘল-যুগের হাজারো নথিপত্র।

আরও পড়ুন Explained: মারণ জীবাণুর সংক্রমণ থেকে কেন বাঘ-সিংহও রক্ষা পাচ্ছে না?

ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য আর্টস

ভিস্তার নীল নকশা অনুযায়ী ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য আর্টস বা আইজিএনসিএ কমপ্লেক্স বিল্ডিং ভেঙে ভাঙা হবে। ইন্ডিয়া গেটের কাছে ১৫ একরের জামনগর হাউসে আইজিএনসিএ স্থানান্তরিত হবে। এমনই পরিকল্পনা। কয়েক মাস আগে এই স্থানান্তর প্রসঙ্গে জানিয়েছেন আর্কিটেক্ট ও প্ল্যানার বিমল প্যাটেল স্বয়ং, যাঁর সংস্থা এইচসিপি সেন্ট্রাল ভিস্তার এই দুরন্ত কনট্রাক্টটি পেয়েছে।

আইজিএনসিএ তৈরি হয় ১৯৮০ সালের শেষে। আমেরিকার আর্কিটেক্ট রালফ লারনেরের নকশা অনুযায়ী। একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হয়েছিল এর নকশা বাছতে। ১৯০টি থেকে বেছে নেওয়া হয়েছিল রালফের নকশা। ১৯৮৫ সালে তৎকালীন প্রধানন্ত্রী রাজীব গান্ধী তাঁর মা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নামে নামকরণ করেন এই বাড়ির। জানানো হয়েছে, নতুন বিল্ডিং যতক্ষণ না পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে, এখানে থাকা সব শিল্পসামগ্রী, পুরাকর্ম সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে হোটেল জনপথে। মন্ত্রী হরদীপ পুরীর বলেছেন, সিডনি ও নিউইয়র্কের মতো আন্তর্জাতিক স্তরের সংগ্রহালয় তৈরির জন্য এই পদক্ষেপ। যেটি তৈরি হবে আইজিএনসিএ-র নতুন স্থায়ী ঠিকানা ওই জামনগর হাউসে।

আরও পড়ুন একমাসে ৬২% কমেছে সক্রিয় সংক্রমণ! ফাঁকা হচ্ছে বেড, হাঁফ ছাড়ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

ন্যাশনাল মিউজিয়াম

ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ভাগ্যও ভাল হবে না ভিস্তায়। এই মিউজিয়াম নর্থ ও সাউথ ব্লক বিল্ডিংয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, সে জন্য সময় লাগবে সম্ভবত ৫ বছর। নর্থ ও সাউথ ব্লকে বিভিন্ন মন্ত্রকের অফিস রয়েছে, তা সরানো প্রয়োজন, সেন্ট্রাল ভিস্তায় সে জন্য নতুন বাড়ি তৈরি হবে আগে। নর্থ ও সাউথ ব্লক খালি হওয়ার পরই সেখানে মিউজিয়াম স্থনান্তরিত সম্ভব হবে। ফলে ২০২৫-২৬ পর্যন্ত বর্তমান বাড়িতেই থাকছে ন্যাশনাল মিউজিয়াম এবং ন্যাশনাল মিউজিয়াম ইনস্টিটিউট।

এই মিউজিয়াম প্রথমে কিন্তু রাষ্ট্রপতি ভবনের মধ্যেই ছিল। সূত্রপাত ১৫ অগস্ট, ১৯৪৯-এ। মিউজিয়ামের বর্তমান বিল্ডিংয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। সেটা ১৯৫৫ সালের ১২ মে। বিল্ডিংয়ের প্রথমাংশের সূচনা হয়েছিল তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি এস রাধাকৃষ্ণনের হাতে। ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৬০-এ। আর দ্বিতীয় পর্বের কাজ শেষ হয় ১৯৮৯-তে।

আপাতত সারা দেশে ভিস্তা নিয়ে নানা প্রশ্ন। হেরিটেজের এত বড় দুর্দিন আগে এসেছে কি?

অনুবাদ: নীলার্ণব চক্রবর্তী

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Explained Central Vista
Advertisment