Constituent Assembly debated the questions of citizenship: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সোমবার (১১ মার্চ) নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ লাগু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সংসদে যখন এই আইনটি পাশ করানো হয়, তখন এই আইন নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। কারণ, আগের ভাবনা থেকে সরে এসে এই আইন ধর্মকে যুক্ত করেছিল। সংশোধিত আইন অনুযায়ী- হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টানরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে প্রবেশ করে থাকলে, নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় পাবেন। ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সিএএর পক্ষে বা বিপক্ষের অনেক যুক্তিই ৭০ বছর আগে গণপরিষদে উঠে আসা বিভিন্ন যুক্তিরই প্রতিধ্বনি। কীভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া যায়, তা নিয়ে গণপরিষদে দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছিল। যার শেষে সংবিধান প্রণেতারা নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার সঙ্গে ধর্মকে যুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
'সব হিন্দু, শিখকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত'
আজকের মতোই, গণপরিষদের কিছু সদস্য বিশ্বাস করতেন যে সমস্ত হিন্দু এবং শিখের ভারতে একটি বাড়ি থাকা উচিত। কারণ, তাঁদের 'নিজের দেশ বলে অন্য কোনও দেশ নেই।' বেরার থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য পিএস দেশমুখ ১৯৪৯ সালের ১১ আগস্ট বিধানসভায় বলেছিলেন, 'এখানে আমরা একটি জাতির হাজার বছরের ইতিহাস এবং বাস্তবতা সত্ত্বেও এই দাবিকে বাতিল করতে যাচ্ছি। বিশ্বে হিন্দু এবং শিখদের অন্য কোথাও জায়গা নেই। তাই, হিন্দু এবং শিখদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। কারণ, অন্যরা তাঁদের অপছন্দ করে। আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তারপরও বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে প্রত্যেক হিন্দু বা শিখের নিজস্ব একটি বাড়ি থাকা উচিত তা স্বীকার করতে চাই না। তাই, মুসলমানরা যদি নিজেদের জন্য পাকিস্তান নামে একটি একচেটিয়া জায়গা চায়, তাহলে ভারতকে কেন হিন্দু ও শিখদের বাড়ি হিসেবে গণ্য করা উচিত হবে না?' ইউনাইটেড প্রদেশের কংগ্রেসম্যান শিব্বান লাল সাক্সেনা দেশমুখকে সমর্থন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'আমাদের একথা বলতে লজ্জা হওয়া উচিত নয়, যে হিন্দু বা শিখরা অন্য দেশের নাগরিক নন। তাই তাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী। ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির বাস্তব প্রয়োগ প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন- বরাতজোরে নয়! বিমান ধ্বংস হলেও অত্যাধুনিক কারিগরি দক্ষতায় বাঁচলেন তেজসের পাইলট, কীভাবে?
'পার্সি, খ্রিস্টানদের কী হবে?'
বেরারের পার্সি কংগ্রেস নেতা আরকে সিধওয়া বলেছিলেন, 'এই সুবিধা শুধুমাত্র হিন্দু এবং শিখদের পাওয়া উচিত না। আমার কথা হল, আমাদের কোনও সম্প্রদায়ের উল্লেখ করার দরকার নেই। যদি আমরা তা করি, তাহলে মনে হবে যে আমরা অন্যান্য সম্প্রদায়কে উপেক্ষা করছি। সেই সব সম্প্রদায়কে, যাঁদের প্রতি আমাদের মনোযোগ দেওয়ার দরকার ছিল। পাকিস্তানে আজ লক্ষাধিক পার্সি ও খ্রিস্টান আছেন, যাঁরা ফিরে আসতে চান। কেন তাঁদের রাস্তা বন্ধ করবেন?'