Consumption divide across Indian states: ভারতের কোন রাজ্য কতটা ভোগ করে, তার অনেকটাই নির্ভর করে লোকসভা নির্বাচনের ওপর? বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সেই অনুযায়ী ঠিক হয়ে যায় বাজেট বরাদ্দ। শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা উত্তরপ্রদেশ বলে কথাটা নয়। দেশের সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা সত্যি। কয়েক দশক ধরেই এসব চলে আসছে। আর, আজও সেই পার্থক্যটা বজায় আছে।
ব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, ব্যাংক অফ বরোদার অর্থনীতিবিদরা মার্চে (FY2024) শেষ হওয়া আর্থিক বছরে ভারতীয় রাজ্যগুলোর আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। সেই রিপোর্টে তিনটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে রাজ্যগুলোর আর্থিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেসব হল: রাজ্যগুলো নিজেরাই কত টাকা সংগ্রহ করেছে। রাষ্ট্রের উত্পাদনশীল ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য রাজ্যগুলো কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্ত অর্থ কতটা ব্যয় করেছে। আর, রাজ্যগুলো বাজার থেকে কতটা ধার নিয়েছে।
রাজস্ব ঘাটতি
ওই রিপোর্টে দেখা গেছে যে বেশিরভাগ রাজ্যই তাদের রাজস্ব ঘাটতি (ব্যয় এবং আয়ের মধ্যে ব্যবধান পূরণের জন্য তাদের ধার করা অর্থের পরিমাণ) বাজেটের (চার্ট) মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছে। এটি রাজ্যগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব। কারণ, ব্যয় বাজেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রাখলে রাজ্যগুলোকে অতিরিক্ত ধার দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে হাত পাততে হত। এতে রাজ্যগুলোর ধারও বাড়ত। আর, তাতে বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে ঋণ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছেও অল্প অর্থ থাকত।
মূলধনী ব্যয় এবং কর রাজস্ব
রাজ্য সরকার রাস্তা এবং সেতু তৈরির মত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করে থাকে। যা সরকারের, মূলধনী ব্যয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। একটি রাজ্যের মোট কর রাজস্বকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। একটি: নিজস্ব কর রাজস্ব (OTR)। অপরটি, কেন্দ্রীয় কর। রাজ্যের করের মধ্যে রয়েছে পণ্য ও পরিষেবা কর। যা প্রায় ৩২%। এছাড়া রয়েছে রাজ্য আবগারি এবং বিক্রয় কর। যা প্রায় ২২%। পাশপাাশি রয়েছে স্ট্যাম্প এবং নিবন্ধন কর। যা প্রায় ৭%।
আরও খবর- গণনার নিয়ম বদল কমিশনের, বিরাট আশঙ্কায় বিরোধীরা! কমিশন কর্তাদের কাছে দরবার
কোন রাজ্যের খরচ কতটা
কোন রাজ্যের খরচ কতটা, তা নির্ধারণ করতে গবেষকরা জিএসটি সংগ্রহের ওপর নজর দিয়েছেন। কারণ হল, জিএসটি একটি ভোগ-ভিত্তিক কর। এই কর সেই জায়গায় দেওয়া হয়, যেখানে কোনও পণ্য বা পরিষেবা ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, যদি একটি গাড়ি তামিলনাড়ুতে তৈরি করা হয় কিন্তু ইউপিতে কেনা হয়, তাহলে জিএসটি ইউপিতেই ধার্য করা হয় এবং সেখানেই সংগ্রহ করা হয়। আর, তারই ভিত্তিতে বিশ্লেষকরা বলেছেন, রাজ্যভিত্তিক মাথাপিছু জিএসটি বণ্টনই দেশে ভোগের প্রকৃত প্রতিফলন। যার অর্থ, কোন রাজ্য কতটা জিএসটি করের অর্থ কেন্দ্রের থেকে পেয়েছে, তার ওপরই সেই রাজ্যবাসীর ভোগের ক্ষমতা নির্ভর করছে।