প্রশ্ন ছিলই! কিন্তু সম্প্রতি এটা নিশ্চিত হয়েছে যে একবার করোনা আক্রান্ত হলেও দ্বিতীয়বার সেই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হতে পারে। করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেই যে আর কোভিড-১৯ ভাইরাস আক্রমণ করবে না এমনটা নয়। অন্তত সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনা তা বলছে না। এখন এই প্রেক্ষাপটেই ভ্যাকসিনের গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কীভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরও দ্বিতীয়বারের জন্য করোনা আক্রান্ত হতে হচ্ছে?
আমরা সকলেই জানি ভ্যাকসিন আদতে হল সেই রোগেরই নিষ্ক্রিয় ভাইরাস, যা শরীরে প্রবেশ করানো হয় মূল ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য। আক্রান্ত হওয়ার আগেই যদি ভ্যাকসিন দেওয়া থাকে তাহলে করোনা ভাইরাস যখন আক্রমণ করবে দেহ তৎক্ষণাৎ তাঁকে চিনতে পারবে এবং ভাইরাসটিকে সহজাত প্রবৃত্তি দিয়েই ধ্বংস করার চেষ্টা করবে দেহকোষ।
আরও পড়ুন, মানবদেহেই রয়েছে করোনা প্রতিরোধী টি-সেল! প্রমাণ পেলেন গবেষকরা
এখন যেটা বিপরীত মত তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন নিয়ে তা হল যদি করোনা ভাইরাস আক্রমণের পর নিজের থেকেই দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে তাহলে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন কোথায়? প্রয়োজন তো রয়েছে। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেও আবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি করছে ভ্যাকসিনের গুরুত্ব। কিন্তু এই সপ্তাহের শুরুতে হংকং এই করোনার পুন:আক্রমণের ঘটনা ভ্যাকসিনের কাজ নিয়ে সন্দেহ তৈরি করছে । আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন গবেষকরা, তা হল যে ব্যক্তির করোনা সংক্রমণ এবং উপসর্গ যত তীব্র তাঁদের দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতাও তত ভালো তৈরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন, করোনা থেকে সুস্থ হলেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস, ময়নাতদন্তে উঠে এল নয়া তথ্য
মানবদেহ একবার প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে শুরু করলে তা টি-সেলের মেমোরিতে থেকে যায়। এটাই সহজাত ক্ষমতা। এখন যে সব ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে তা কি চিরকালীন সুরক্ষা দিয়ে যাবে এই নোভেল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সেটির নিশ্চয়তা এখনও জানা যায়নি। তার চেয়েও বড় কথা হংকংয়ের ওই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন দিলেও কিন্তু তাঁর ফের রিপোর্ট পজিটিভই আসে। এবার তাই ভ্যাকসিন কতটা সুরক্ষা দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন, একবার আক্রান্ত হলেই মানবদেহে করোনা ভাইরাস থাকছে তিন মাস! কতটা মারাত্মক?
একবার ভ্যাকসিন দিলেই ভাইরাস নির্মূল হবে, এমন কথা কোনওদিন বিজ্ঞান বলবে না। কারণ অনেকসময় তা সম্ভব হয় না। কোনও কোনও ভ্যাকসিন একাধিকবার দিয়ে যেতে হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যেমন পোলিও। একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর ধীরে ধীরে শরীরে সেই রোগের বিরুদ্ধে কঠিন সুরক্ষা বলয় তৈরি হয়ে যায়। যেহেতু এখনও সবকটি ভ্যাকসিনই ট্রায়ালে রয়েছে তাই এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়তো এখনই সম্ভব হবে না।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন