Advertisment

করোনাসংক্রমণ- দেশে ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যাই উদ্বেগজনক

মঙ্গলবার নতুন এক বিতর্কের সূচনা হয়েছে যখন দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বলেছে রাজধানীতে মৃতের যে সংখ্যা দেওয়া হচ্ছে, আসল সংখ্যা তার অন্তত দ্বিগুণ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Covid 19 death in India

কিছু রাজ্য সরকার কোভিড-১৯-এর ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা লুকোনোর চেষ্টা করেছিল

ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমিতের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে, কিন্তু যে পরিসংখ্যান বেশি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে তা হল ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা। যদিও গত এক মাসে সংক্রমিতের সঙ্গে মৃত্যুর অনুপাত কমেছে, কিন্তু মোট হিসেবে এই সংখ্যা বেশ বড় আকার ধারণ করেছে - যা হাসপাতাল এবং শ্মশানের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে, কারণ মৃত্যুর ঘটনা হাতে গোনা কয়েকটা জায়গাতেই বেশি পরিমাণে ঘটছে।

Advertisment

বৃহস্পতিবার সারা দেশে মোট ৩৫৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যা আগের সংখ্যার তুলনায় অনেকটাই বেশি। এর আগে এক দিনে সর্বাধিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৯৪ এক মাস আগেও প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১০০-র কম। গত এক মাসে দৈনিক গড়ে ১৯০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। সারা দেশে ১১ মে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২২০৬, ১১ জুন সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১০২-এ।

আরও পড়ুন, কোভিড-১৯ উপসর্গবিহীন সংক্রমণ কতটা গুরুতর, তথ্যপ্রমাণ কী বলছে

সংক্রমণে মৃত্যুহার যদিও গত এক মাসের তুলনায় কমছে। এক মাস আগে যা ছিল ৩.২৯ শতাংশ, এখন তা দাঁড়িয়েছে ২.৮৩ শতাংশে, নিঃসন্দেহে যা আশাব্যঞ্জক।

মোট মৃত্যুর তিন চতুর্থাংশ ঘটেছে মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও দিল্লিতে, এবং এই সংখ্যাটা বাড়ছে। এক মাস আগে দেশের সমস্ত মৃত্যুর ৬৫ শতাংশ ছিল এই তিন রাজ্যে। কিন্তু তার পর থেকে দিল্লিতে মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। ১১ মে-তে দিল্লিতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৭৩, যে সংখ্যা এখন ১১৮৫। এখন এই তিন রাজ্যে দেশের মোট মৃত্যুর ৭৫ শতাংশ ঘটেছে।

এই রাজ্যগুলির প্রশাসনের কাছে এখন মূল লক্ষ্য হল মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস, অন্যদের কাছেও তাই। মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক সমস্ত কথাবার্তাতেই কেন্দ্রের তরফ থেকে রাজ্যকে জীবন বাঁচানোর ব্যাপারে শক্তিপ্রয়োগ করতে বলা হয়েছে।

মুম্বইয়ের হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে রোগীর পাশে শবদেহ রেখে দেওয়ার খবর প্রকাশিত হচ্ছে, শ্মশান থেকে মৃতদেহ ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে কারণ সেখানে পৌঁছনো সব মৃতদেহ দাহ করার ক্ষমতা তাদের নেই।

আরও পড়ুন, বর্তমানে সংক্রমিত ও মোট সুস্থের সংখ্যা তুলনাযোগ্য নয়

কিছু রাজ্য সরকার কোভিড-১৯-এর ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা লুকোনোর চেষ্টা করেছিল। এপ্রিলের মাঝামাঝি পশ্চিমবঙ্গে ৩০ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল, আরও ৭২ জনের মৃত্যু অন্য রোগের কারণে হয়েছে বলে দেখিয়েছিল তারা। তাদের উপর চাপ দিয়ে ওই ৭২ জনকেও মৃতের তালিকায় যুক্ত করা হয়।

একইভাবে দিল্লিতেও মে মাসে হাসপাতালগুলি যা মৃতের সংখ্যা বলছিল, রাজ্যের বুলেটিনে তার চেয়ে কম মৃত্যু দেখানো হচ্ছিল। পরে সেই সংখ্যা রাজ্য সরকার মৃতের তালিকায় যুক্ত করে এবং সেই থেকে সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

মঙ্গলবার নতুন এক বিতর্কের সূচনা হয়েছে যখন দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বলেছে রাজধানীতে মৃতের যে সংখ্যা দেওয়া হচ্ছে, আসল সংখ্যা তার অন্তত দ্বিগুণ।

বৃহস্পতিবার দেশে ১০৮০০ জনেরও বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সারা দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা এখন তিন লক্ষের সামান্য কম। মহারাষ্ট্র থেকে নতুন সংক্রমণের দৈনিক হিসেবে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রথমবার সংক্রমণ সংখ্যা ৩৫০০-র বেশি।

তবে দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার এখন চার শতাংশের নিচে এবং দ্বিগুণত্বের হার ১৮ দিনের চেয়ে বেশি।

coronavirus
Advertisment