বৃহস্পতিবার দেশে প্রথমবারের জন্য করোনাসংক্রমণের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়াল। মোট ২৬৫০০ জন সংক্রমিত হয়েছেন এদিন, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭.৯৩ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। এদিনের হিসেবে রোগাক্রান্তদের মধ্যে ৪,৯৫ লক্ষ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সারা দেশে ৪৭৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এই নিয়ে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছল ২১৬০৪-এ।
আরও পড়ুন, কোভিড চিকিৎসায় রেমডেসিভিরের তুলনায় ডেক্সোমেথোসোনে নজর দেওয়া কেন জরুরি?
তেলেঙ্গানা ও কর্নাটকে করোনাসংক্রমণের অতি বৃদ্ধি যখন সকলের নজর টেনেছে সেই সময়ে অলক্ষ্যে ওড়িশায় সংক্রমণের হার বাড়ছে ব্যাপক পরিমাণে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে যখন মূলত গুজরাট থেকে পরিযায়ীরা ওড়িশায় নিজভূমে ফিরতে শুরু করেন, সে সময়ে বহুল পরিমাণ সংক্রমণ সে রাজ্যে ধরা পড়তে থাকে। সে সময়ে দেশের অন্যতম দ্রুত রোগবৃদ্ধির রাজ্যের অন্যতম ছিল কলিঙ্গ। তার পর থেকে সে রাজ্যে এ হার ক্রমহ্রাসমান ছিল।
কিন্তু গত এক সপ্তাহে ওড়িশায় সংক্রমণে অতিবৃদ্ধি ঘটেছে। প্রায় ৪০০০ নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে এ পর্যায়ে, রাজ্যে মোট সংক্রমিত প্রায় ১২ হাজার ছুঁইছুঁই। ওড়িশায় বর্তমান বৃদ্ধি হার ৫.৭১ শতাংশ, তাদের আগে রয়েছে কেবল কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও আসাম। উল্লেখ্যে জাতীয় ক্ষেত্রে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ৩.৪৫ শতাংশ।
নতুন সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে গঞ্জাম, খুরদা ও জাজপুর এলাকায়, প্রথমবারের সংক্রমণও এসব জায়গাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা পরিযায়ীদের অধিকাংশ এখানেই রয়েছেন। ৩৪০০-র বেশি নিশ্চিত সংক্রমণ হয়েথে গঞ্জামে। মেট্রো শহর, টায়ার ১ বা টায়ার ২ শহর বাদ দিয়ে বাকি শহরের হিসেবে এখানেই দেশের মধ্যে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন, ১৭ মিলিয়ন মানুষের উপর গবেষণা থেকে কোভিড সম্পর্কে কী জানা গেল?
ওড়িশার বৈশিষ্ট্য হল মূল নগরকেন্দ্র কটক, ভুবনেশ্বর এবং সম্বলপুরে সংক্রমণের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম, এখানে রোগ ছড়িয়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট শহরগুলিতে। গঞ্জাম, খুরদা ও জাজপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হলেও রাজ্যের প্রায় প্রতিটি ছোট শহরেই বেশ ভাল পরিমাণ সংক্রমণ রয়েছে।
গত চারদিনে রাজ্যে ৫০০-র বেশি সংক্রমণের খবর এসেছে, এবং বৃহস্পতিবার সেখানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭৫-এ। রাজ্যে মৃতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত ওড়িশায় করোনাসংক্রমণে ৫৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে, গত এক সপ্তাহে মারা গিয়েছেন ২৫ জন।
বৃহস্পতিবার কর্নাটকেও একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড দেখা গিয়েছে, সেখানে নতুন সংক্রমণ ২২২৮, মোট সংক্রমণে তারা এবার তেলেঙ্গানাকে ছাড়িয়ে গেল। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩১১০৫ জন সংক্রমিত, তেলেঙ্গানায় সে সংখ্যা ৩০৯৪৬। দেশের মধ্যে এই দুই রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার দ্রুততম, এর পরেই রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ।
আসামেও গত কয়েকদিনে সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে, গত এক সপ্তাহে ৫০০০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। গুয়াহাটি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ইতিমধ্যেই লকডাউন নতুন করে শুরু হয়েছে।