পৃথিবীব্যাপী অতিমারীর মোকাবিলায় এখন মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ আটকানোর দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ভাইরাস বর্জ্য জলের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
ব্রিটেনে স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড কুইলামের একটি নতুন গবেষণায় এই সাবধানবাণী উচ্চারিত হয়েছে। এনভায়ারনমেন্ট ইনটারন্যাশনাল জার্নালে প্রফেসর কুইলিয়াম এবং তাঁর সহকর্মীরা তাঁদের উদ্বেগের বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য সম্পদ লগ্নির আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
এক বিবৃতিতে অধ্যাপক কুইলিয়ম বলেছেন, “আমরা জানি যে কোভিড-১৯ কাশি ও হাঁচির ফোঁটা থেকে ছড়ায় অথবা এমন কিছু থেকে ছড়ায় যা সংক্রমণ বহন করে।
তবে সম্প্রতি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে মানুষের মল থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে এবং তা কোভিড-১৯ উপসর্গের শ্বাসনালীর পরীক্ষায় নেগেটিভ আসার ৩৩ দিন পর পর্যন্তও। এখনও জানা যায়নি যে মল-মুখ পথে এই সংক্রমণ ছড়ায় কিনা, তবে আমরা জানি যে পাক যন্ত্রে ভাইরাল শেডিং শ্বাসনালীতে ভাইরাল শেডিংয়ের চেয়ে বেশি দিন টিকে থাকতে পারে। ফলে এখনও পর্যন্ত মাপা না গেলেও এর ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা যে বাড়তে পারে, এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এই গবেষণাপত্রে ২০০২-০৩ সালের সার্স প্রকোপের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে সার্স-কোভ ১ ভাইরাস (যা কোভিড ১৯-এর জন্য দায়ী সার্স কোভ ২-এর সঙ্গে যুক্ত)চিনের দুটি হাসপাতালের বর্জ্যনালীতে পাওয়া গিয়েছিল। অধ্যাপক কুইলিয়ম জোর দিয়ে বলেছেন, যেহেতু বেশিরভাগ কোভিড-১৯ রোগীরা উপসর্গবিহীন বা সামান্য উপসর্গে ভুগছেন, এবং তাঁদের হাসপাতালে না রেখে বাড়িতেই রাখা হচ্ছে, তাঁদের নর্দমার মাধ্যমে রোগবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রভূত বেশি।
কেন সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেল অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ?
গবেষকরা আরও বলেছেন ভাইরাসের গঠন থেকে মনে হচ্ছে যে জলীয় পরিবেশে তা ভিন্নভাবে আচরণ করবে। কোভিড-১৯ বিভিন্ন পরিবেশে কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে তথ্য এখনও সীমিত, কিন্তু নর্দমার জলে অন্য করোনাভাইরাস ১৪ দিন সক্রিয় থাকতে পারে।
মানুষের মধ্যে সংক্রমণ বিষয়ে গবেষকরা বলেছেন, “করোনাভাইরাস জলের মধ্যে দিয়ে বাহিত হলে খুব দ্রুত তা বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে নর্দমার মধ্যে দিয়ে বাহিত জলের মাধ্যমে। বর্জ্য জলের ফোঁটা থেকে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কিনা তা এখনও বোঝা যায়নি কিন্তু এর মাধ্যমে সরাসরি মানুষের শ্বাসে সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকেই যায়, বিশেষ করে নর্দমার পাম্পিং স্টেশনে, ওয়েস্টওয়াটার ট্রিটমেন্টের কাজে এবং যেসব নদী বা জলাধারে বর্জ্য জল বাহিত হয়, সেখান থেকেও।”
পৃথিবীর যেসব জায়গায় খোলা জায়গায় মলত্যাগ করা হয়, অথবা যেখানে শৌচের ব্যবস্থা সীমিত এবং যেসব জায়গায় নদী বা পুকুরের জল শৌচ এবং গৃহস্থালি, উভয় কাজের জন্যই ব্যবহৃত হয়, সেখানে আশঙ্কার পরিমাণ বেশি।
সূত্র- স্টার্লিং ইউনিভার্সিটি
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন