সংক্রমণ সংখ্যার স্ফীতি এবার দোরগোড়ায়

মহারাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত ৩৩ হাজার জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যেখানে সারা দেশে সংখ্যাটা ৯৫,৬০৯।

মহারাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত ৩৩ হাজার জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যেখানে সারা দেশে সংখ্যাটা ৯৫,৬০৯।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Corona Number Surge

শহর কলকাতায় ঘরবন্দি এক প্রবীণ (ছবি- শশী ঘোষ)

রবিবার ৫০০০-এর বেশি করোনো আক্রান্ত ধরা পড়েছে ভারতে, এখনও পর্যন্ত যা সর্বাধিক। লকডাউনে শিথিলতার জেরে যে ব্যাপক স্ফীতির আশঙ্কা করা গিয়েছিল, তা এবার দোরগোড়ায়।

Advertisment

এমনকি শনিবারও ৪৮০০ জনের বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, কিন্তু তা মূলত গুজরাটের আমেদাবাদে গত এক সপ্তাহে সংক্রমণে খোঁজার যে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তাতে ৭০০ জনেরও বেশি সংক্রমণ সামনে আসায়। এ ছাড়া প্রায় এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৩৬০০ থেকে ৩৮০০-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল, তার আগে তা থাকছিল ৩০০০ থেকে ৩৫০০-র মধ্যে।

ভারতে গত ৪ মে থেকে প্রথমবার লকডাউনের নিয়মাবলী শিথিল করা হয় এবং পরিযায়ীদের নিজেদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। এর জেরে গত দু সপ্তাহে কয়েক লক্ষ মানুষ চলাচল শুরু করেছেন। যদিও এঁদের মধ্যে কয়েকশ মানুষের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে, সব মিলিয়ে সংখ্যায় তেমন বৃদ্ধি হয়নি।

আরও পড়ুন, মহামারীর ইতিবৃত্ত, এবং মানবজাতির আবহমানকালের লড়াই

Advertisment

নতুন সংক্রমণের যে সংখ্যা প্রতিদিন সামনে আসছিল, তা থেকে একটা ছাঁদ বোঝা যাচ্ছিল যা লকডাউন শিথিল হওয়ার আগের পর্যায় থেকে ভিন্ন। সংক্রমণে দ্বিগুণত্বের হার ক্রমশ কমছিল, যা শিথিলতার পক্ষে ভাল চিহ্নায়ক।

এবার সেটা বদলাতে শুরু করবে বলেই মনে হয়, সোমবার থেকে  যে নতুন বিধি লাগু হয়েছে তাতে ব্যাপক পরিমাণ কাজকর্ম শুরু ব্যাপারে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র, করোনাভাইরাস মহামারীর অন্যতম কেন্দ্র যে রাজ্য, সেখানে রবিবার ২৩০০ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দৈনিক হিসেবে এ রাজ্যে সর্বাধিক। এর মধ্যে মুম্বইতেই ১৬০০ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

মহারাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত ৩৩ হাজার জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যেখানে সারা দেশে সংখ্যাটা ৯৫,৬০৯।

রাজ্যমোট সংক্রমণনতুন সংক্রমণমৃত্যু
মহারাষ্ট্র৩৩৫০৩২৩৪৭১১৯৮
গুজরাট১১৩৮০৩৯১৬৫৯
তামিলনাড়ু১১২২৪৬৩৯৭৮
দিল্লি৯৭৫৫৪২২১৪৮
রাজস্থান৫০৯০২৪২১৩১
মধ্যপ্রদেশ৪৯৭৭১৮৭২৪৮
উত্তরপ্রদেশ৪৪৬৪২০৬১১২
পশ্চিমবঙ্গ২৬৭৭১০১২৩৮
অন্ধ্রপ্রদেশ২২৬৫২৫৫০
পাঞ্জাব১৯৬৪১৮৩৫

বিহার ও ওড়িশার মত রাজ্যগুলিতে পরিযায়ী যে সব শ্রমিকরা এসে পৌঁছচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। বিহারে শনিবার ১৪৫ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, রবিবার সেখানে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে আরও ১০৬ জনের। রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১২৮৪। ওড়িশায় রবিবার ৯১ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মোট সংখ্যা ৯১৯।

এই দুই রাজ্যের আরেকটা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, ওড়িশায় ৯০ শতাংশ সংক্রমিত বড় শহুরে কেন্দ্রের মধ্যে, টায়ার ২ ও টায়ার তিন শহরে দেখা যাচ্ছে। অন্য সব রাজ্যেই সংক্রমণের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ বড় শহরে, মহারাষ্ট্রে মুম্বই ও পুনেতে, গুজরাটের আমেদাবাদে, রাজস্থানের জয়পুরে, মধ্যপ্রদেশে ভোপাল ও ইন্দোরে, তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়।

এছাড়া, রবিবার গোয়ায় ১০ জনের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৭ জনের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর প্রায় এক মাসে এ রাজ্যে নতুন সংক্রমণ হয়নি, কিন্তু গত চারদিনে ১৮ জনের নতুন সংক্রমণ দেখা গিয়েছে, যাঁদের সকলেই অন্য জায়গা থেকে ফিরেছেন। শেষ দলটি ট্রেনে করে নয়া দিল্লি থেকে ফিরেছে।

বেশ কিছু রাজ্যে নতুন করে সংক্রমণও দেখা দিতে শুরু করেছে। তেলেঙ্গানা ও কেরালায় গত কয়েকদিন ধরে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিতে শুরু করেছে, এবং তার পরিমাণ আগের চেয়ে বেশি। হিমাচল প্রদেশ ও আসামে দীর্ঘ বিরতির পর নতুন সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19