বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন করোনাভাইরাসজনিত লকডাউনের মধ্যে পৃথিবীর চলাচল কমেছে।
এর দুদিন আগেই বেলজিয়ামের রয়্যাল অবজার্ভেটরির ভূকম্পনবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মার্চের মাঝামাঝি থেকে ভূকম্পনজনিত আওয়াজ ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে। ওই সময় থেকেই স্কুল ও ব্যবসা বন্ধ হতে শুরু করে। ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভে এবার সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ভূকম্পনজনিত আওয়াজ হ্রাস নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করেছে।
এই আওয়াজ কী?
ভূবিদ্যা অনুসারে বিভিন্ন কারণে মাটিতে যে ক্রমাগত কম্পন হয়, তাই হল ভূকম্পনজনিত আওয়াজ। এই সংকেতগুলি সিসমোমিটার নামক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রে রেকর্ড হতে থাকে। সিসমো মিটারে ভূমির বিভিন্ন ধরনের গতিই রেকর্ড হয়, যেমন ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত ও বিস্ফোরণ।
এই আওয়াজের মধ্যে মানুষের ক্রিয়াশীলতার কম্পন রয়েছে, যেমন উৎপাদন ও পরিবহণ এবং এর ফলে বিজ্ঞানীদের বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূকম্পনজনিত তথ্য সংগ্রহে অসুবিধা হয়। ভূবিদ্যা ছাড়া ভূকম্পনজনিত আওয়াজ তৈল অনুসন্ধান, জলবিজ্ঞান এবং ভূকম্পন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বেলজিয়ামের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে পৃথিবীব্যাপী লকডাউনের কারণে ভূত্বকে কম্পনের মাত্রা কমেছে।
ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের এক ভূকম্পনবিজ্ঞানী ডক্টর ব্রায়ান বাপ্টির মতে, "আমরা সিসমোমিটার দিয়ে ভূকম্পেনর মাত্রা পরিমাপ করি। এগুলি অতীব সংবেদনশীল যার মাধ্যমে কম্পনের উৎসও বোঝা যায়- যথা রাস্তার যানপরিবহণ, যন্ত্রপাতির চলন, এমনকী মানুষের চলনও।"
"আমরা হিসেব করে দেখেছি ব্রিটেনের সিসমিক স্টেশনগুলিতে আওয়াজের মাত্রা কোভিড ১৯ লকডাউন পরবর্তী দু সপ্তাহ সময়ে বছরের শুরু থেকে কমেছে। আমাদের অধিকাংশ স্টেশনগুলিতে এই হ্রাসের মাত্রা ১০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে।"
এই হ্রাসে বিজ্ঞানীদের কী সুবিধা হবে?
মামুষের ক্রিয়াকলাপের দরুণ ভূকম্পনজনিত আওয়াজের কম্পাঙ্ক বেশি (১-১০০ হার্জের মধ্যে)। সাধারণভাবে যথাযথ উপায়ে ভূকম্পনজনিত প্রাকৃতিক আওয়াজ মাপার জন্য পৃথিবীর ১০০ মিটার নিচে তাঁদের যন্ত্রগুলি বসান।
তবে লকডাউনের পর থেকে ভূতলের উপর থেকেই প্রাকৃতিক কম্পনের হদিশ মিলছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
আওয়াজের মাত্রা কম হবার কারণে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন এতদিন তাঁদের যন্ত্রে যে সামান্য ভূকম্পন ধরা পড়ত না, তারও হদিশ মিলবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন