মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রায় ৪০০০ নতুন করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ভারতের কোনও রাজ্যে এ যাবৎ এত করোনা সংক্রমণ এক দিনে ধরা পড়েনি। এমনকি মহারাষ্ট্র, যেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা দিল্লির দ্বিগুণ, সেখানেও এত নতুন সংক্রমণ এক দিনে দেখা যায়নি।
দিল্লিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার জাতীয় বৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণ। এখানে এখন মোট সংক্রমণের পরিমাণ ৬৬,৬০২। সম্ভবত আজই সংক্রমণ সংখ্যায় মুম্বইকে পিছনে ফেলে দেবে দিল্লি। মুম্বইতে সংক্রমণ সংখ্যা এখন ৬৮,৪১০। সেখানে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার অনেকটাই শ্লথ, মঙ্গলবার মুম্বইতে মাত্র ৮৪২টি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
দিল্লিতে সংক্রমণের এই আধিক্যের একটা বড় কারণ টেস্টের সংখ্যাবৃদ্ধি। এই সংখ্যা গত এক সপ্তাহে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, এই সময়েই সংক্রমণ সংখ্যাও বেশি বেড়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রায় ১৭ হাজার টেস্ট হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগেও দিল্লিতে নমুনা পরীক্ষা হত ৫ থেকে ৭ হাজার, যে সময়ে নতুন সংক্রমণ দেখা যাচ্ছিল ১৫০০ থেকে ২০০০। উল্টোদিকে মুম্বইতে দীর্ঘদিন ধরেই দৈনিক নমুনা পরীক্ষা ৪৫০০-র আশেপাশে থাকছে।
আরেকটি রাজ্যেও টেস্টের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটছে, তেলেঙ্গানায়। দীর্ঘদিন ধরে তেলেঙ্গানায় দৈনিক ৫০০-র কম টেস্ট হচ্ছিল, এবং সংক্রমণের সংখ্যাও কম হচ্ছিল। রাজ্যের হাইকোর্ট কঠোর কিছু মানদণ্ড স্থির করে দেওয়ার পর, অবশেষে সেখানে এখন দৈনিক ৩০০০-এর মত টেস্ট হচ্ছে, এবং নতুন সংক্রমণের সংখ্যাও বাড়ছে। গত পাঁচদিন ধরে প্রতিদিনই রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণ ধরা পড়ছে এই রাজ্যে।
মঙ্গলবার তেলেঙ্গানায় মোট ৮৭৯ জনের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ মাসে মোট সংক্রমণ রাজ্যে বেড়েছে তিনগুণ। মঙ্গলবারের হিসেব অনুসারে তেলেঙ্গানায় সংক্রমিত ৯৯৫৩। তেলেঙ্গানায় সংক্রমণের বৃদ্ধি হার বড় সংখ্যক সংক্রমিত রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ, ৮.৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি কী?
আগামী কয়েকদিন ভারতের সংখ্যাবৃদ্ধি সম্ভবত স্থির হবে দিল্লি, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ু থেকে। কিন্তু যেহেতু নতুন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে, ফলে অন্যান্য জায়গা থেকেও সংখ্যাবৃদ্ধির খবর আসতে পারে।
মুম্বই ও পুনে উভয়েই এই নতুন অনুমোদিত র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করেছে সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য। এই পরীক্ষায় মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে ফল পাওয়া যায়, এবং অনেক শস্তাও বটে। এই টেস্টে খরচ পড়ে ৪৫০ টাকা। এই পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি পরিকাঠামোরও প্রয়োজন হয় না।
মুম্বই ও পুনে উভয়েই জানিয়েছে তারা এই কিটের মাধ্যমে এক লক্ষ টেস্ট করবে। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের টেস্টের সংখ্যা স্থির থেকে যাবার জন্য। মনে করা হচ্ছে, বহু সংক্রমিতদের টেস্ট করা হচ্ছে না সেখানে। মুম্বই ও পুনে মিলিয়ে দিনে মোট ৬০০০ টেস্ট করছে এখন। অ্যান্টিজেন টেস্টের ফলে এই দুই শহর থেকেই সংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
মঙ্গলবার দেশে প্রায় ১৫ হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, এখনও পর্যন্ত দেশে পজিটিভ হয়েছেন প্রায় ৪ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে ২.৫ লক্ষ ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,০১১।