Advertisment

করোনা সংক্রমণে চিনকে ছাড়াল ভারত, দ্বিতীয় তরঙ্গ আসন্ন?

কেরালা, হিমাচল প্রদেশ, আসাম, এবং গোয়ার মতো রাজ্যে নতুন সংক্রমণ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু গত কয়েকদিনে এই রাজ্যগুলিতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা।   

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
china india corona cases

ছবি: কমলেশ্বর সিং, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এখনও হয়তো এটা বলার সময় আসে নি, কিন্তু দেশের বেশ কিছু রাজ্যে নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের 'সেকেন্ড ওয়েভ' বা দ্বিতীয় তরঙ্গের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। কেরালা, হিমাচল প্রদেশ, আসাম, এবং গোয়ার মতো রাজ্যে নতুন সংক্রমণ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু গত কয়েকদিনে এই রাজ্যগুলিতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনা।

Advertisment

একমাসের ওপর কোনও নতুন সংক্রমণ ঘটে নি গোয়ায়। মার্চের শেষদিকে যে সাতজন সংক্রমিত হন, তাঁরা সকলেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। তবে গত দু'দিনে আটজন নতুন করে সংক্রমিতের খবর পাওয়া গিয়েছে, সকলেই ভিনরাজ্য থেকে গোয়ায় ফিরেছেন। একইভাবে হিমাচল প্রদেশেও চলতি মাসের শুরুর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ৪১ জন করোনা রোগী, কিন্তু গত সপ্তাহখানেকের মধ্যে ৩৪ জন নতুন সংক্রমিতের খবর পাওয়া গিয়েছে।

আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তের ৯০ শতাংশ ১০ রাজ্যে

কেরালায় যে সংক্রমণ একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এমন নয়, তবে একক সংখ্যায় নেমে গিয়েছিল সংক্রমিতের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার ২৬ জনের নতুন করে সংক্রমণের খবর এসেছে কেরালা থেকে, যা কিনা ৩০ মার্চের পর একদিনে সর্বোচ্চ। শুক্রবার যোগ হয় আরও ১৬ টি নতুন কেস। গত তিনদিনে রাজ্যে ৫২ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন, ফলে কেরালায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ৫৭৬। আবারও একবার বহিরাগতরাই রয়েছেন এর নেপথ্যে। কেরালার ক্ষেত্রে উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে ফেরত আসা সাম্প্রতিকতম ভারতীয়দের মধ্যে ২২ জনের দেহে মিলেছে করোনার উপসর্গ। কিছু ক্ষেত্রে ভিনরাজ্য থেকে ফেরা কয়েকজনও পজিটিভ ঘোষিত হয়েছেন।

আসামে গত এক সপ্তাহে ৪০টি নতুন কেস নথিভুক্ত হয়েছে। তবে এর আগের বারের ৪৫ জন আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

china india corona cases শুক্রবার, ১৫ মে'র হিসেব

দেশজুড়ে মূলত অন্য রাজ্যে আটক নাগরিকদের যাতায়াত চলতে থাকছে, যার ফলে আগামী দিনে আরও বাড়বে সংক্রমিতের সংখ্যা। ওড়িশা, বিহার, তেলঙ্গানা, এবং অন্ধ্রপ্রদেশেও দ্রুতগতিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে রয়েছেন অন্যান্য রাজ্য থেকে ঘরে ফেরা শ্রমিকরা। এই কারণেই শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়াতে অনিচ্ছুক একাধিক রাজ্য।

এদিকে শুক্রবার করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চিনকে ছাড়িয়ে গিয়েছে ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। চিনে মোট আক্রান্ত ৮৪,৬৪৯ জন, তবে গত দুমাসে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা নামমাত্র। ভারতে গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন ৪,০০০ জন। গত ১ মার্চ চিনে সংক্রমিতের সংখ্যা ছুঁয়েছিল ৮০ হাজার, তবে তার পর থেকে নাটকীয়ভাবে কমেছে সংক্রমণের মাত্রা, প্রায় হোঁচট খেয়ে থেমে গিয়েছে বলা চলে। এতটাই, যে পরের আড়াই মাসে মাত্র ৪,৫০০ নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রসঙ্গত, জানুয়ারির শেষের দিকে কেরালায় তিনজনকে বাদ দিলে, ভারতে প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়েন চিনের সংক্রমণ ৮০ হাজার ছাড়ানোর বেশ কিছুটা পরে।

শুক্রবার পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৫,৬৮১। এঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন অন্তত ৩১ হাজার জন। দেশে মৃতের সংখ্যা ২,৭৫০ ছাড়িয়েছে।

উল্লেখযোগ্য, শুক্রবার দেখা যায়, পাঞ্জাবে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। এর কারণ, লুধিয়ানায় অরনা পজিটিভ ঘোষিত ৩০ জন রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের কর্মীকে রাজ্য থেকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় পুলে, যে পুলে রয়েছেন বিএসএফ কর্মী বা ভিনরাজ্য থেকে আগত পরিযায়ীদের মতো অন্যান্যরাও। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাঞ্জাবে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১,৯৩৫, কিন্তু শুক্রবার নতুন করে হিসেব করার পর সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১,৯৩২। এই প্রথম দেশে হিসেবের সমন্বয়ের ফলে কোনও রাজ্যে কমল আক্রান্তের সংখ্যা। এর আগে মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে পরীক্ষিতদের সংখ্যা, যেহেতু অন্যান্য রাজ্যেরও অজস্র নমুনা মহারাষ্ট্রে পরীক্ষা করানো হচ্ছিল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment