বিমান যাত্রার চাহিদায় বাধ্যতামূলক টান পড়েছে। টান দিয়েছে বিভিন্ন দেশের প্রশাসন। কোভিড-১৯ সংক্রমণ আটকানোর এই পদক্ষেপের জেরে বিমানসংস্থাগুলির লোকসান শুরু হয়েছে, কারণ তাদের যে স্থায়ী খরচ, যার পরিমাণ যথেষ্ট বেশি, তা কমেনি। এর ফলে ভারতের বিমানসংস্থা সহ বেশ কিছু বিমানসংস্থা বন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন বিমানের উড়ানে যে কাটছাঁট চলছে, তাতে উড়ান মূল্যের যে শৃঙ্খল তা ধ্বংস হয়ে যেতে বসেছে। এই শৃঙ্খলে প্রথম নগদ অর্থ সংগৃহীত হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। সেখান থেকে শৃঙ্খল চলে বিমানবন্দর, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংস্থা, জ্বালানি সরবরাহকারী, বিমানপ্রস্তুতকারী সংস্থা, ক্যাটারার পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসের কারণে বিমানসংস্থাগুলি এতটা প্রভাবিত হচ্ছে কেন?
বিমান সংস্থাগুলি হল উচ্চ স্থায়ী মূল্যের শিল্প যারা নগদ নির্ভর। উৎপাদন শিল্প যেমন বর্তমান মন্দা পরে কাটিয়ে উঠতে পারে, বিমানসংস্থার ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। তাদের প্রোডাক্ট হল তাদের আসন, যা তারা জমিয়ে রেখে পরে বিক্রি করতে পারবে না। প্রতিটি খালি আসনের অর্থ স্থায়ীভায়ে আয়ের ক্ষেত্রে লোকসান। ফলে তাদের আয়ে কোনও রকম কাটছাঁট মানেই হল তাদের নগদপ্রবাহে আঘাত যা তাদের ক্ষতি করবেই।
চলতি ত্রৈমাসিকে ভারতীয় বিমানসংস্থাগুলির মোট ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন ডলার। এর ফলে সংশ্লিষ্ট শিল্পের চাকরি থেকে শুরু করে অস্তিত্ব, সবটাই সংকটের মুখে। সাধারণ সময়ে বিমান সংস্থাগুলি টিকিট বিক্রির মাধ্যমে নগদ সৃষ্টি করতে পারে। তারা নতুন বিমানের ডেলিভারি নেয় এবং লিজে থাকা বিমানের ভাড়া বাবদ অর্থ দিতে থাকে।
আয় কমবার ফলে এবং নগদ সংকট তৈরি হওয়ার ফলে নতুন বিমানের ডেলিভারি নিতে দেরি হবে বলেই মনে হচ্ছে। একই রকমভাবে এয়ারপোর্ট অপারেটররা মাটিতে থাকা বিমানের পার্কিং ফি হিসেবে বেশি অর্থ নেবেন, কারণ বিমান উড়ছে কম। এর ফলে ল্যান্ডিংয়ের জন্য যে চার্জ তা কমবে এবং এয়ারপোর্টের দোকানের মত সহায়ক আয়ও কমবে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিমানসংস্থার সামনে কী অপেক্ষা করছে?
সারা বিশ্বেই উড়ানশিল্প সরকারের কাছে সাহায্য চাইছে। দৈনন্দিন খরচ মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় নগদ অর্থ থাকার উপর নির্ভর করছে তাদের অস্তিত্ব। বেশ কিছু বিমান সংস্থা মাইনে কমানো সহ বিভিন্ন খরচ কমানোর কথা ঘোষণা করেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কিছু সংস্থা খরচ কমাবার জন্য অস্থায়ীভাবে তাদের অপারেশন বন্ধ করে দিতে পারে।