Advertisment

কেন ভারতে মানসিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা তৈরি হওয়া জরুরি, তা বুঝিয়ে দিল অতিমারী

টেলি-মেডিসিন পরিষেবা প্রদানকারী কিছু চিকিৎসক রয়েছেন বটে, তবে তাঁরা অধিকাংশই বিশেষজ্ঞ, সংখ্যায় সীমিত। এবং দেশের ডিজিটাল বিভাজনও এক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India mental healthcare

ভারতে কি অবহেলিত মানসিক স্বাস্থ্য? প্রতীকী ছবি

অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল প্রয়াণ এবং করোনাভাইরাস মহামারী জনিত লকডাউনের বিষণ্ণতার যদি আদৌ কোনও ইতিবাচক দিক থেকে থাকে, তা হলো দেশের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বৃহত্তর ক্ষেত্রে আলোচনার সূত্রপাত। 'আ পারফেক্ট স্টর্ম' শীর্ষক প্রতিবেদনে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শিং স্কোয়ার জনস্বাস্থ্যের অধাপক বিক্রম প্যাটেল লিখছেন, "ভারতে এর আগেই অসুখের ক্ষেত্রে বড় রকমের অবদান ছিল মানসিক স্বাস্থ্যের", কিন্তু "তা অলক্ষ্যে"।

Advertisment

দু'ভাবে এই মহামারীর ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নজর পড়েছে, বলছেন প্যাটেল। এক, মহামারীর ফলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনের অঙ্গ - "ব্যক্তিগত ভাবে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে শুরু করে পৃথিবীর কঠোরতম লকডাউন পালন করা সত্ত্বেও দেশে বাড়তে থাকা সংক্রমণ, বা কবে আগের ছন্দে বা তার কাছাকাছি ফিরবে জীবন, বা কোন খবরটা বিশ্বাস করব, বা আমাদের আর্থিক ভবিষ্যৎ কী হবে" - এবং তার ফলে ব্যাপক হারে বেড়েছে উদ্বেগ।

প্যাটেলের কথায়, বর্তমানের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই স্বাভাবিক। তবে তিনি বলছেন যে "যাঁরা এর আগেই মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ধরনের উদ্বেগ চরম অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে"।

আরও পড়ুন: পাল্টানো সময়ে ক্রমশ একলা হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম

মহামারীর দ্বিতীয় দিকটি আরেকটু ভীতি উৎপাদক হতে পারে। আসন্ন ঘোর অর্থনৈতিক সঙ্কটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্যাটেল বলছেন, দারিদ্রের গ্রাসে পড়ে যাওয়া বিপুল সংখ্যক মানুষ, এবং দেশের "খণ্ডিত মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা" মিলে তৈরি হতে পারে "পারফেক্ট স্টর্ম"।

টেলি-মেডিসিন পরিষেবা প্রদানকারী কিছু চিকিৎসক রয়েছেন বটে, তবে তাঁরা অধিকাংশই বিশেষজ্ঞ, সংখ্যায় সীমিত। এবং দেশের ডিজিটাল বিভাজনও এক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করছে। বরং প্যাটেল আশা দেখছেন কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে, যাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিলে তাঁরা কার্যকরী ভাবে "অটিজম থেকে শুরু করে মানসিক অবসাদ অথবা মদ্যপানের সমস্যার ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করতে পারবেন"।

তাঁর আরও বক্তব্য, সমস্ত মানসিক সমস্যার কোনও একটি সমাধান অবশ্যই থাকতে পারে না, তবে কিছু সাধারণ নীতি মাথায় রেখে চলাই যায়।

এক, শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্যও। দুই, "মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভাগ করে নেওয়াটা শুধু যে কিছুটা ভালো থাকার সুনিশ্চিত উপায় তাই নয়, সামাজিক কলঙ্কের বোঝা কমাতেও এটি সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা"।

প্যাটেল আরও বলেন যে অন্যকে সাহায্য করার গুরুত্ব অনেকটা, "কারণ বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে যে অন্য কারোর যত্ন নেওয়া অথবা সমাজসেবা শুধু আপনার জীবনকে সমৃদ্ধই করে না, দীর্ঘায়িতও করে"। যুগান্তকারী এই সময়ও একদিন পেরিয়ে যাবে, বলছেন তিনি, তবে এই সুযোগে যেন মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আরও বেশি বিনিয়োগ করা হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Advertisment