Advertisment

জল-সাবানই কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ আটকানোর মোক্ষম অস্ত্র

করোনাভাইরাস হাওয়ার মাধ্যমে ছড়ায় না, ছড়ায় কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে যেসব ক্ষুদ্রাকার ফোঁটা নির্গত হয়, তা থেকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Coronavirus, Soap Water

সংক্রমণ আটকাতে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ হল হাত সাফ সুতরো রাখা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (CDC) ও ইউনিসেফ একযোগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বারবার অন্তত ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ধোবার কথা বলেছে।

Advertisment

সাবান দিয়ে হাত ধুলে কী হয়?

করোনাভাইরাস সংক্রমণ: কেন আপনার হাত ধোওয়া দরকার

দূষিত জায়গায় স্পর্শ করার ফলে বেশ কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ হয়। রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বলছে, সংক্রমণ আটকাতে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ হল হাত সাফ সুতরো রাখা।

করোনাভাইরাস ও ইতালির নিষেধাজ্ঞা

করোনাভাইরাস হাওয়ার মাধ্যমে ছড়ায় না, ছড়ায় কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে যেসব ক্ষুদ্রাকার ফোঁটা নির্গত হয়, তা থেকে। আপনি নিজের মুখ, চোখ বা নাকে হাত দেবার আগে যদি কোনও সংক্রমিত স্থান স্পর্শ করে থাকেন, তাহলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। ওই ফোঁটাগুলি শুকিয়ে গিয়েছে মানেই ভাইরাস আর কার্যক্ষম নেই, এমনটা কিন্তু নয়।

ফলে সংক্রমণ আটকাতে সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার কথা বলা হচ্ছে।

জল-সাবানে কীভাবে করোনাভাইরাস আটকাবে?

নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক পাল্লি থোডারসন এ ব্যাপারে টিইটারে বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি বলেছেন প্রায় সব ভাইরাসই তৈরি হয় প্রোটিন, আরএনএ ও লিপিড দিয়ে। ভাইরাসের শরীরে প্রোটিন অতি গুরুত্বপূর্ণ, যা তার নিজের শরীরের প্রতিলিপি তৈরিতে সাহায্য করে। অন্যদিকে লিপিড ভাইরাসের বাইরে আস্তরণ তৈরি করে। কোনও শরীরের কোষে প্রবেশের সময়ে বা ছড়িয়ে পড়বার সময়ে এই আস্তরণ ভাইরাসকে সুরক্ষাকবচ দেয়। আরএনএ, প্রোটিন ও লিপিডের যোগে ভাইরাস তৈরি হয়। এই কাঠামো সাধারণভাবে ভাঙা কঠিন। কিন্তু জল ও সাবানের ব্যবহারে এই ভাইরাস ভেঙে পড়ে, ফলে তা ত্বক থেকে মুক্ত হয়ে গিয়ে ধুয়ে যায়।

তা ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাইরাস বিভিন্ন ভাবে কাজ করে। যেমন কাঠ, কাপড় ও ত্বকে ভাইরাস যেমন আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে তাকে পোর্সিলিন বা স্টিলের ক্ষেত্রে তেমনটা থাকে না।

করোনা আক্রান্তদের কী ওষুধ দেওয়া হচ্ছে?

থোডারসন বলছেন, "ভাইরাসের জন্য ত্বক হল একেবারে আদর্শ জায়গা। ত্বক যেহেতু অপেক্ষাকৃত অমসৃণ তল, যাতে বহু কোণ ও খাঁজ রয়েছে, সে কারণে ওই তল থেকে ভাইরাস বিমুক্ত করতে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে ধোয়া জরুরি।"

থোডারসন বলছেন শুধু জল ব্যবহার করলে ভাইরাস ত্বকের সঙ্গে আঠার মত লেগে যাবে, উপকার হবে না।

সাবানের মধ্যে ফ্যাটজাতীয় যে বস্তু রয়েছে, তাতে ওই আঠাভাব কেটে যায় এবং তার কাঠামো ভেঙে পড়ে। সাবান ভাইরাস ও ত্বকের মধ্যে যোগাযোগ নষ্ট করে দেয়। সাবান ও জলের যৌথ কার্যকারিতায় ভাইরাস পৃথক হয়ে গিয়ে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে। ভাইরাসের মৃত্যু ঘটে।

করোনাভাইরাস সঙ্কট: বিদেশে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান কি বাতিল করা উচিত?

থোডারসন বলছেন, অ্যালকোহল বেসড জীবাণুনাশক এবং স্যানিটাইজারও ব্যবহার করা যেতে পারে, কিন্তু সাবান ও জলের মত আর কিছু নেই।

গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং সংস্থার মতে রোগের কারণ যেসব জীবাণু ধুলো, গ্রিজ ও স্বাভাবিক তেলের সঙ্গে আপনার হাতে লেগে থাকে, সেগুলি শুধু জল দিয়ে ধুলে যায় না। তারা বলছে, জীবাণু দূর করতে সব সাবানই সমান কার্যকর, যার অর্থ হল সাধারণ সাবান ও বিজ্ঞাপনে দেখানো অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল সাবানের মধ্যে তেমন কোনও তফাৎ নেই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus
Advertisment