Coronavirus (COVID-19): এখনও সংক্রমিতের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম হলেও আগামী কয়েকদিনে নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে পারে বিহারে। শুক্রবার সে রাজ্যে আক্রান্তের তালিকায় যোগ হন আরও ৫৩ জন, ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা আপাতত ২২৩। ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত একক সংখ্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছিল রাজ্যে করোনা আক্রান্তের হার, কিন্তু গত চারদিনে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে তা।
বৃহস্পতিবার সারা দেশের পক্ষেই ছিল রেকর্ড বৃদ্ধির দিন, তবে শুক্রবার সেই সংখ্যা ফের পড়তির দিকে যায়। শুক্রবার মোট ১,৩৭৬ টি সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়, যা বৃহস্পতিবারের ১,৬৯৭ টি কেসের তুলনায় অনেকটাই কম। ভারতে শনিবার পর্যন্ত সরকারিভাবে ২৪,৯৪২ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৫,২০৯ জন সেরে উঠে হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়েছেন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭৯।
ভারতে আক্রান্তদের তালিকার শীর্ষে এখনও মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট। শুক্রবার মহারাষ্ট্রে ৩৯০ জন করোনা পজিটিভ ঘোষিত হন, যা কিনা বৃহস্পতিবারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। শুক্রবারের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬,৮১৭, যাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯৫৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ: ৮ দিনে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে
ওদিকে গুজরাটে শুক্রবার নতুন করে আক্রান্ত হন ১৯১ জন, যার ফলে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ২,৮১৫। ক্রমবর্ধমান রাজ্যে মৃত্যুর হারও। শুক্রবার ১৫ জনের মৃত্যুর খবর জানায় গুজরাট। সেই হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে এখন পর্যন্ত মৃত ১২৭ জন, যা মহারাষ্ট্রের পর সর্বোচ্চ। সেই তালিকারও শীর্ষে রাজধানী আহমেদাবাদ, যেখানে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। ভারতে মুম্বইয়ের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে আহমেদাবাদেই।
এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ভারতের যে পাঁচটি শহরে মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ, সেগুলি হলো:
মুম্বই - ১৭৮
আহমেদাবাদ - ৮৩
পুণে - ৬৭
ইন্দোর - ৫৫
দিল্লি - ৫০
এখন পর্যন্ত ভারতে মোট মৃত্যুর ৩০০ টিরও বেশি ঘটেছে মহারাষ্ট্রে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছে যে রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৫৭ জন করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হলেও এঁদের অধিকাংশেরই মৃত্যুর তাৎক্ষণিক কারণ সরাসরি COVID-19 নয়। রাজ্যে COVID-19 রোগীদের মৃত্যু খতিয়ে দেখতে যে অডিট কমিটি গঠন করেছে সরকার, সেই কমিটির মতে ওই ৫৫ জনের মধ্যে স্রেফ ১৮ জনের মৃত্যুর জন্য COVID-19 কে সরাসরি দায়ী করা যেতে পারে। সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "বাকি ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে গুরুতর কোমরবিডিটির ফলে, যেগুলি মৃত্যুর তাৎক্ষণিক কারণ, এবং তাঁরা ঘটনাচক্রে COVID-19 এও আক্রান্ত ছিলেন।"
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু সঠিকভাবে চিহ্নিত করা কেন জরুরি
দেশে পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যেখানে COVID-19 রোগীর মৃত্যু আদৌ সরাসরি ভাইরাসের কারণে হয়েছে, না অন্য কোনও কারণে, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি অডিট কমিটি গঠিত হয়। তবে এই পদক্ষেপ মনে ধরেছে অন্যান্য বেশ কিছু রাজ্যেরও, এবং সঠিক মৃতের সংখ্যা জানাতে প্রবল অনিচ্ছা দেখা দিচ্ছে অনেক রাজ্যেই।
ভারতের যে শহরে মৃতের সংখ্যা সর্বাধিক, সেই মুম্বই আপাতত আর মৃতের তালিকা প্রকাশ করছে না, এবং করোনা পজিটিভ রোগীদের মৃত্যু খতিয়ে দেখতে অডিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুম্বই প্রশাসনও। একই পথে হেঁটেছে দিল্লি, এবং পাঞ্জাবও অডিট কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশ এবং তেলঙ্গানাও নিজ নিজ রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বড় একটা জানায় না। এখন পর্যন্ত গুজরাট এবং কর্ণাটকই তাদের রাজ্যে মৃতের সংখ্যা স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন