Advertisment

পুলড টেস্টিং কীভাবে হয়, কোন ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি কার্যকর?

যেখানে সংক্রমণের সংখ্যা ৫ শতাংশের বেশি, সে সব জায়গায় আইসিএমআর এ পদ্ধতি প্রয়োগের বিরুদ্ধে। সরকারি সূত্র অবশ্য বলছে যে সব জেলায় এখনও অবধি কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি, সেসব এলাকাতেই পুলড টেস্টিং হবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আইসিএমআর বলে দিয়েছে একত্রিত নমুনা পরীক্ষায় নমুনার ঊর্ধ্বসীমা ৫, যাতে অতিরিক্ত মিশ্রণের ফলে ফলস নেগেটিভের সম্ভাবনা কমে

ভারতে পরীক্ষার পরিমাণ অপর্যাপ্ত এ নিয়ে প্রভূত সমালোচনা ঘরে বাইরে চলছেই। এরই মাঝে যেসব জেলায় সংক্রমণের খবর নেই, সেখানে পুলড টে্স্টিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে একদিকে ওইসব জায়গায় সত্যিই সংক্রমণশূন্য কিনা তা যেমন জানা যাবে, তেমনই পরিকাঠামোগত সম্পদও বাঁচানো যাবে।

Advertisment

পুলড টেস্টিং কী?

এখন যে প্রযুক্তিতে (RT-PCR) একজনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, এই পদ্ধতিতে ওই একই প্রযুক্তিতে একাধিক নমুনা পরীক্ষা করা যাবে।

কোভিড ১৯: ফলস নেগেটিভ টেস্টের বিপদ

নাক ও গলা থেকে নমুনা নিয়ে সেগুলি নির্দিষ্ট অনুপাতে একটি সলিউশনে মেশানো হবে। বাকি নমুনা আলাদাভাবে রক্ষিত থাকবে। একত্রিত নমুনা পরীক্ষার পর যদি ফলাফল নেতিবাচক হয়, তাহলে সমস্ত নমুনাই বাতিল হবে। যদি তা নাহয়, তাহলে প্রতিটি নমুনা আলাদা করে পরীক্ষা করে দেখা হবে, তার মধ্যে কোনটা পজিটিভ।

গত সপ্তাহে আইসিএমআর যেসব জেলায় সংক্রমণের হার কম, সেখানে পুলড টেস্টিং পদ্ধতির সাহায্য নেবার অ্যাডভাইজরি জারি করেছে।

কীভাবে সার্স কোভ ২-এর নমুনা সংগ্রহ, প্রেরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে?

অ্যাডভাইজরিতে বলা হয়েছে “ভারতে কোভিড ১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। সে কথা মাথায় রেথে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো কঠিন... ফসে যদি একত্রিত নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং সে নমুনা যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে আলাদা করে পরীক্ষা করার খরচ বাঁচানো সম্ভব হবে। এর ফলে ল্যাবরেটরিতে আরও বেশি সংখ্যক পরীক্ষা করা যাবে।”

লখনউয়ের কিং জর্জস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ভাইরাস রিসার্চ অ্যান্ড  ডায়াগনোস্টিক ল্যাবরেটরির একটি গবেষণা অনুসারে এই অ্যাডভাইজরি জারি করা হয়েছে।

একই সঙ্গে আইসিএমআর বলে দিয়েছে একত্রিত নমুনা পরীক্ষায় নমুনার ঊর্ধ্বসীমা ৫, যাতে অতিরিক্ত মিশ্রণের ফলে ফলস নেগেটিভের সম্ভাবনা কমে। তবে গবেষণার জন্য আরও বেশি সংখ্যক নমুনা সংমিশ্রণ করা যেতে পারে।

পুলড টেস্টিং কোথায় হতে পারে?

আইসিএমআর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে “যেসব জায়গায় কোভিড ১৯ সংক্রমণ সংখ্যা কম, (বর্তমান সংখ্যার চেয়ে ২ শতাংশের নিচে) সেখানেই এই পদ্ধতি নেওয়া যেতে পারে। তবে সেখানে পজিটিভের সংখ্যা বাড়ছে কিনা সে ব্যাপারেও নজর রাখতে হবে।”

“যেসব জায়গায় পজিটিভের সংখ্যা ২ থেকে ৫ শতাংশ, সে সব জায়গায় এই পদ্ধতি কেবলমাত্র উপসর্গবিহীনদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যাঁরা সংক্রমিতদের সংস্পর্শে এসেছেন বা কোভিজ ১৯ রোগীদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রযোজ্য নয়। এ ধরনের ব্যক্তিদের আলাদা পরীক্ষা করতে হবে।”

আইসিএমআর যেখানে সংক্রমণের সংখ্যা ৫ শতাংশের বেশি, সে সব জায়গায় এ পদ্ধতি প্রয়োগের বিরুদ্ধে।

সরকারি সূত্র অবশ্য বলছে যে সব জেলায় এখনও অবধি কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি, সেসব এলাকাতেই পুলড টেস্টিং হবে।

গত সপ্তাহে বেসরকারি হাসপাতাল পুলড টেস্টিংয়ের রাস্তায় হাঁটছে এ খবর প্রকাশিত হবার পর আইসিএমআরের মহামারী ও সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডক্টর আর আর গঙ্গাখেড়েকর বলেন, “যেখানে সংক্রমণের হার ২ শতাংশের কম, সেখানেই এই পদ্ধতি নেওয়া উচিত... ৫ টি নমুনা একত্রে পরীক্ষা করা যেতে পারে। এর ফলে কম পরীক্ষার মাধ্যমে বেশি মানুষ ছাড় পেতে পারেন। বেসরকারি হাসপাতালের কথা যদি ওঠে, তাহলে বলার এ পদ্ধতি ব্যক্তিগত পর্যায়ের ডায়াগনোসিসের জন্য নয়। এর ফলে টেস্টের ফল বদলে যাবে। বেসরকারি হাসপাতালের বিষয়টি ভাবা উচিত।”

  অন্য কোথাও এই পদ্ধতি নেওয়া হচ্ছে?

 আমেরিকার কিছু জায়গায়, যেখানে সংক্রমণ হার কম, সেখানে এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে। যেমন স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায় সংক্রমণ কতটা তা দেখবার জন্য এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এ পদ্ধতি নিচ্ছেন। RT-PCR প্রক্রিয়া যেসব পরীক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তার সবগুলিতেই এই পদ্ধতি নেওয়া থাকে, এইচআইভি পরীক্ষার ক্ষেত্রে তো এটি একটি রুটিন প্রক্রিয়া।

coronavirus
Advertisment