শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং যে কোনও বয়সের মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন বলে দেখা গিয়েছে। কিন্তু গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ শিশুরা সংক্রমিত হতে পারে কিনা এবং গর্ভবতী অবস্থায় সংক্রমণ অন্য কোনও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে কিনা তা এখনও অজ্ঞাত। জার্নাল অফ রিপ্রোডাক্টিভ ইমিউনোলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এ সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এতদিন পর্যন্ত গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কী সুপারিশ ছিল?
হু বলেছিল গর্ভবতী মহিলাদের অতিরিক্ত আশঙ্কার কারণ নেই। তাদের পরামর্শ ছিল গর্ভবতী মহিলারা বারবার হাত ধোবেন, জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলবেন এবং শ্বাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
মার্কিন সংস্থা সিডিসি-ও একই মর্মে গাইডলাইন দিয়েছিল। তারা বলেছিল মাতৃদুগ্ধ পান করাবার সময়ে ভাইরাস সংক্রমণের সমস্ত সম্ভাবনা যাতে রোধ করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।
সংখ্যা কী বলছে
কোভিড ১৯ নিয়ে চিন ও হুয়ের যৌথ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে সমস্ত গর্ভবতী মহিসাদের ৮ শতাংশ মারাত্মক আকার নিয়েছিল। একই সঙ্গে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের হিসেবে চিনে ১৬ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১৪৭ জন গর্ভবতী মহিলার মধ্যে (৬৪ জন সংক্রমিত, ৮২ জন সন্দেহজনক ও একজন উপসর্গবিহীন) এক শতাংশ মারাত্মক ভাবে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত। এ থেকে গর্ভবতী মহিলাদের মৃত্যুহার আঁচ করা না গেলেও সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে গরভবতী মহিলারা কোভিড ১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ঝুঁকিপ্রবণ।
গর্ভবতীদের ঝুঁকি কেন বেশি?
আমরা জানি যে কোনও রোগের মতই সার্স কোভ ২ ভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। একজন গর্ভবতী মহিলার প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা বদলাচ্ছে সে অনুসারেই তাঁর শরীর ওই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারবে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে মাতৃত্বকালীন প্রতিরোধ ব্যবস্থা বহিরাগত প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে সুরক্ষায় যেমন অনেকটাই এগিয়ে থাকে তেমনই কিছু প্রতিরোধী কোষ ওই সময়ে সামান্য দুর্বল থাকে। গর্ভাবস্থায় ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের আধিক্যের কারণে ঊর্ধ্বশ্বাসনালী ফুলে থাকে এবং ফুসফুসের বৃদ্ধি থাকে নিয়ন্ত্রিত, যে কারণে এই মহিলাদের ঝুঁকি বেশি।
মায়ের গর্ভে সংক্রমণের কোনও প্রমাণ না থাকলেও এই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, আগের গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েচে য়ে সার্স সংক্রমণে গর্ভনাশ ও সময়পূর্ব প্রসবের সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভবতী কোভিড ১৯ সংক্রমিত মহিলাদের তদারকি কীভাবে করা হবে?
প্রবন্ধের লেখকরা বলছেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পরেও প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভবতী মহিলাদের উপর বেশি নজর দিতে হবে এবং জরায়ুস্থ ফিটাসের উপর ভালভাবে পর্যবেক্ষণ জারি রাখতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন