ধূমপায়ীদের করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলেছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময়ে ধূমপান করা উচিত নয়।
ধূমপায়ীরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন
ধূমপায়ীদের ফুসফুস এবং শ্বাসনালী অনেকটাই ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত, ফলে তাঁদের SARS CoV-2 সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। এই ভইারাসের আক্রমণে প্রথমে শ্বাসের সমস্যা হয় এবং বহু ক্ষেত্রে শ্বাসের সমস্যার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। লুধিয়ানার ফোর্টিস হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের ডিরেক্টর ডক্টর হরমিন্দর সিং পান্নুর কথায়, "আগে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত শ্বাসযন্ত্রে নতুন সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।"
"এমনকি যাঁরা অনিয়মিত ধূমপায়ী তাঁরাও আমি তো মাঝে মাঝে একটা বা দুটো সিগারেট খাই বলে পালাতে পারবেন না। বিষয়টা হল আপনার শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি আপনি করছেন। নিয়মিত ধূমপায়ীরা এমনিতেই মানসিকভাবে ধূমপানের উপর নির্ভরশীল এবং তাঁরা একের পর এক সিগারেট খেয়েই চলেন। কিন্তু কোভিড ১৯-এর ঝুঁকি নিয়মিত ও অনিয়মিত ধূমপায়ী, উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান।"
গন্ধ বা স্বাদ পাচ্ছেন না! আপনার করোনা সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে
তিনি বলেন, ধূমপায়ীদের ঝুঁকি যাঁরা তামাক চেবান, তাঁদের চেয়ে বেশি। "তামাক চেবালে মুখের ক্ষতি হয়। সিগারেট খেলে ফুসফুসের ক্ষতি হয়।"
লুধিয়ানার ক্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর বিকাশ লুম্বার কথায়, "কোভিড ১৯ যদিও নতুন রোগ এবং এ ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চলছে, তা সত্ত্বেও এটা ঘটনা যে করোনাভাইরাস পরিবার প্রথমে মানবশরীরের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে। যাঁরা ১০ প্যাকেট ইয়ার বা তার কম সিগারেটও খান, তাঁরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।" (একজন দিনে ক প্যাকেট সিগারেট খান তার ভিত্তিতে প্যাকেট ইয়ারের হিসেব করা হয়ে থাকে)
ছেড়ে দিলেই ভাল
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ান ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথের সাহায্যে ক্যানসার কাউন্সিল ভিক্টোরিয়া একটি কর্মসূচি চালায়, যার নাম কুইট। তারা বলছে, "... যাঁরা আগে ধূমপান করতেন এবং এখন ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁদের সংক্রমণ হলেও জটিলতার সম্ভাবনা কম। অন্তত যাঁরাএখনও ধূমপান করে চলেন, তাঁদের তুলনায়। ধূমপান ছেড়ে দেবার কয়েক মাসের মধ্যে ফুসফুসের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। স্বাস্থ্যের জন্য ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ভাল।"
করোনাভাইরাস বাতাসেও ছড়াতে পারে, বলছে গবেষণা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকার করে নিয়েছে কোনও সংকটের সময়ে বেদনা, ধকল, সংশয়, ভয়, রাগ এসবই স্বাভাবিক। কিন্তু সে সবের সঙ্গে যুঝতে ধূমপান, মদ্যপান বা অন্য কোনও ড্রাগ সেবনের দিকে পা না বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছে তারা।
এই অতিমারী নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত দিনে একটা সিগারেটও না খাবার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ডক্টর পান্নু বলছেন, "ধূমপায়ীদের অবিলম্বে সিগারেট বন্ধ করা উচিত, অন্তত যতদিন না অতিমারী শেষ হয় এবং সংক্রমিত হবার আশঙ্কা না কমে। সবচেয়ে বাল হয় এই কোভিড ১৯ প্রকোপের সময়ে ধূমপান সম্পূর্ণ ছেড়ে দিলে।"