Earth ring: পৃথিবীর চারপাশেও অতীতে শনির মত বলয় ছিল। সেই বলয় সম্ভবত এই গ্রহকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছিল। এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের ধারণা, প্রায় ৪৬৬ মিলিয়ন বছর আগে, ধ্বংসপ্রাপ্ত গ্রহাণুর ধ্বংসাবশেষ-সহ একটি বলয় বিষুবরেখার ওপরে ছিল। আর, তার প্রভাব পড়েছিল পৃথিবীর ওপর। শনির বলয়গুলো সম্ভবত সৌরজগতের সবচেয়ে অত্যাশ্চর্য বৈশিষ্ট্য। তা নিয়ে যখন গবেষণা তুঙ্গে, সেই সময়ই চলতি মাসের শুরুতে আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স লেটার্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় পৃথিবীর বলয় সম্পর্কে জানা গেল।
গবেষক যা জানিয়েছেন
অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটির গ্রহ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক অ্যান্ড্রু টমকিন্স এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'এই ধরনের একটি বলয়ের অস্তিত্ব, প্রায় ৪৬৬ মিলিয়ন বছর আগে তৈরি হয়েছিল। শুধু তাই নয়। ওই বলয় কয়েক মিলিয়ন বছর পৃথিবীর চারপাশে টিকেও ছিল। ওই বলয় আমাদের গ্রহের অতীতের বিভিন্ন ধাঁধার হদিশ দিতে পারে।'
আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীতে
গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর চারপাশে যে বলয় ছিল, সেটা অনেকটাই শনি, ইউরেনাস, নেপচুনের চারপাশে দেখতে পাওয়া বলয়ের মতই। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে বলয়ের গ্রহাণু তার কাছে চলে গিয়ে ভেঙে অসংখ্য টুকরো হয়ে গিয়েছিল। গ্রহাণুর এই ছোট-বড়, নানা আকারের টুকরো মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে। বেশিরভাগই বায়ুমণ্ডলে পুড়ে গিয়েছিল। বড় টুকরোগুলো নিরক্ষরেখার কাছাকাছি পৃথিবীর পৃষ্ঠে এসে বড় পাথরের স্তূপের আকার নিয়েছিল। অথবা গর্ত তৈরি করেছিল।
আরও পড়ুন- চিনকে ঠেকাতেই কোয়াড? মোদী-বাইডেনের বৈঠকে বাড়ল জল্পনা
কীভাবে এল বলয়ের ভাবনা?
এই ধরনের পাথরের টুকরোগুলোর উৎস খুঁজতে গিয়েই গবেষকদের মাথায় বলয়ের তত্ত্ব আসে। অর্ডোভিসিয়ান সময়কালের ৪৮৮ মিলিয়ন থেকে ৪৪৩ মিলিয়ন বছর আগে এমন ২১টি গর্তের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেনিয়ে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, সেই ২১টি গর্তই বিষুবরেখার কাছাকাছি। অ্যান্ড্রু টমকিন্স এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'বলয়ের পাথরের আঘাতে পৃথিবীতে গর্ত তৈরি হয়েছিল। সেই বহু পুরোনো গর্তগুলোর চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়েই আমরা বলয়ের কথা জানতে পারি। ২১টি গর্তই বিষুবরেখা বা নিরক্ষরেখার কাছে পাওয়া গিয়েছে। একই জায়গায় এতগুলো গর্ত কেন, তা বোঝার চেষ্টা করতে গিয়েই আমাদের মাথায় গ্রহের বলয়ের ভাবনাটা আসে।'