আশঙ্কা সত্যি করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনকে চারদিক থেকে ঘিরতে শুরু করেছে রুশ ফৌজ। রাশিয়া দুই বিদ্রোহী অঞ্চল দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কের বিদ্রোহীদের অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে মদত জোগাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে লক্ষ রুশ সেনা ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন হয়ে যায়। কয়েক দিন সেই সংখ্যা ২ লক্ষ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ইউক্রেনে হামলা করেছে রাশিয়া।
পুতিন এদিন সকালে যুদ্ধ ঘোষণার পরই রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে ইউক্রেনজুড়ে একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে। রাজধানী কিয়েভ এবং খারকিভে রুশ বিমান বোমাবর্ষণ শুরু করেছে। কিন্তু যুদ্ধে কার জোর বেশি, সেনা-সমরাস্ত্রের ভাণ্ডার কার শক্তিশালী, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
বিশ্বের শক্তিধর দেশ রাশিয়া
কয়েক সপ্তাহে পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেন সীমান্তে বিরাট সামরিক গাড়িতে মিসাইল-রকেট মোতায়েন করেছে রুশ সেনা। মিসাইল প্রযুক্তিতে বিশ্বগুরু রাশিয়া। রাশিয়ার মিসাইল ইউক্রেনের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে গুঁড়িয়ে দিতে বেশি সময় নেবে না। তার পর পদাতিক বাহিনী একবার ঢুকে পড়লে বন্দর-বিমানবন্দর, পরিকাঠামো এবং ইউক্রেনের সেনাকে তছনছ করে দিতে পারে রাশিয়া।
আরও পড়ুন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ঝাঁজ পাইকারি বাজারে, উর্ধ্বমুখী হবে ভোজ্য তেলের দাম
যেখানে পশ্চিম ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলি ইউক্রেনকে সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করছে, সেখানে তাদের সামরিক ক্ষমতা রাশিয়ার তুলনায় নগণ্য। রাশিয়ার সেনা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এবং আধুনিক বলে গণ্য হয়। তার ধারেকাছে আসবে না ইউক্রেন। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে রাশিয়া সামরিক খাতে ইউক্রেনের থেকে দশগুণ বেশি ছিল। ইউক্রেনের খরচ ছিল ৫৯০ কোটি মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন রাশিয়া-ইউক্রেনের দুনিয়া কাঁপানো দ্বন্দ্ব, পুতিন কি সোভিয়েত ইউনিয়নে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর?
হেড-টু-হেড তুলনায় দুই দেশের মধ্যে রাশিয়া প্রায় সব বিভাগেই ইউক্রেনকে ছাপিয়ে গিয়েছে। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া সামরিক শক্তিতে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ইউক্রেন সেখানে ১৪০টি দেশের মধ্যে ২২ নম্বরে রয়েছে।
সেনা সম্ভার ও বাহিনী
রাশিয়ার প্রায় সাড়ে আট লক্ষ সৈনিক রয়েছে। যা ইউক্রেনের থেকে তিন গুণ। ইউক্রেনের সৈন্য সংখ্যা আড়াই লক্ষ। রাশিয়ার সামরিক ভাণ্ডারে রয়েছে ৪১০০-র বেশি সেনাবিমান-হেলিকপ্টার, তার মধ্যে ৭৭২টি ফাইটার জেট। ইউক্রেনের মাত্র ৩৮১টি, যার মধ্যে ৬৯টি ফাইটার জেট। সেনার ভাণ্ডারে রাশিয়ার হাতে রয়েছে সাড়ে বারো হাজার ট্যাঙ্ক, ৩০ হাজারের বেশি সাজোয়াঁ গাড়ি। ইউক্রেনের রয়েছে মাত্র ২,৬০০টি ট্যাঙ্ক, এবং ১২ হাজার সাজোয়াঁ গাড়ি। নৌসেনাতেও ধারে ভারে এগিয়ে রাশিয়া। রাশিয়ার কাছে রয়েছে ৬০০টি নৌতরী। তার মধ্যে একটি রণতরী। ইউক্রেনের আছে মাত্র ৩৮টি নৌতরী। রাশিয়ার কাছে রয়েছে ৭০টি সাবমেরিন, ইউক্রেনের একটিও নেই।
আরও পড়ুন Explained: মণিপুরে বিচ্ছিন্নতাবাদের মেঘ কী রকম গর্জাচ্ছে?