মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সঙ্কট চরমে। উদ্ধব সরকারকে চাপে ফেলতে পাল্টা আস্থা ভোটের দাবি জানানোর তোড়জোড় করছে বিদ্রোহীরা। শিণ্ডে শিবির এই মর্মে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করে অবিলম্বে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মহা বিকাশ আঘাড়ি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের দাবি জানাতে চলেছে। শোনা যাচ্ছে মুম্বই ফিরছেন একনাথ শিণ্ডে। তবে আদৌ কি দলত্যাগ বিরোধী আইনের প্যাঁচে পড়বেন শিণ্ডেরা?
আইন কি বলছে এবং কোনও ছাড় আছে?
দলত্যাগ বিরোধী আইনে কোনও বিধানসভার সদস্য যদি তাঁর দলের প্রাথমিক সদস্যপদ ছেড়ে দেন তাহলে তাঁকে এই আইনে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করা হতে পারে। আবার যদি তিনি দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিধানসভায় কোনও বিল বা জরুরি বিষয়ে ভোটদানে বিরত থাকেন তাহলেও বিধায়ক পদ খারিজ হতে পারে এই আইনে।
তবে বিধায়ক পদ বাঁচানোর উপায় আছে। যদি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য অন্য কোনও দলের সঙ্গে জুড়ে যান তাহলে তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ হবে না। ২০০৩ সালে সংবিধানেক ৯১তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বিধায়ক পদ খারিজ হবে না যদি কোনও দলের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য একটি আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করেন। সেক্ষেত্রে শিণ্ডে শিবিরের কাছে শিবসেনার ৫৫ জনের মধ্যে ৩৭ জন রয়েছেন। দুই-তৃতীয়াংশ শক্তি রয়েছে একনাথ শিণ্ডের সঙ্গে।
আরও পড়ুন Explained: শিবসেনার প্রতীক দখলের ইচ্ছা, কিন্তু তা হাতিয়ে নেওয়া শিন্ডের পক্ষে বেশ কঠিন
আদালত কী বলেছে?
এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বম্বে হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চ রায় দেয় যে, ২০১৯ সালে বিজেপিতে চলে যাওয়া ১০ জন কংগ্রেস এবং দুজন মহারাষ্ট্র গোমন্তক পার্টির বিধায়কের খারিজ হবে না। কারণ, বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হওয়া এই বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস গোষ্ঠী আগেই এক-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতায় রয়েছে।
দুই-তৃতীয়াংশ আইন
বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞর মতে, যদি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য দল ছেড়ে বেরিয়ে যায় তাহলে একটা উপায়েই তাঁদের বিধায়ক পদ বাঁচতে পারে সেটা হল হয় তাঁরা বড় কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন বা আলাদা বিধায়কদের দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবেন। সিনিয়র আইনজীবী দেবদত্ত কামাত, যিনি শিবসেনার সদস্য বলেছেন, যতক্ষণ না বিদ্রোহী শিবির অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছে ততক্ষণ তাঁদের দলত্যাগ বিরোধী আইনের খাঁড়ায় ঝুলতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে ১৯৯৪ সালের রবি নায়েক মামলায় আদালতের এই মর্মে রায় রয়েছে।
বিধায়ক পদ খারিজের নোটিস
আরও একটি বিষয় সামনে এসেছে ১৬ জন বিদ্রোহী বিধায়কের পদ খারিজের নোটিস ঘিরে। তাঁরা কি আইনের হাত থেকে ছাড় পাবেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহারাষ্ট্র বিধানসভার আইন অনুযায়ী, ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্ত শেষ কথা নয়। তাহলে তাঁর জারি করা নোটিসের ভিত্তিতে বিধায়ক পদ খারিজ হওয়া যুক্তিযুক্ত নয় বলে মনে করছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল শ্রীহরি আনে।