Advertisment

Explained: যুক্তরাষ্ট্রের চরিত্র রক্ষায় মাঠে এক মুখ্যমন্ত্রী, মোদীকে চিঠিতে কী সওয়াল করলেন তিনি?

কী কী বিষয় মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন তুলে ধরেছেন?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
MK Stalin, Narendra Modi, Inter-state council, cooperative federalism india, inter-state council news, sarkaria commission, india federal structure, indian federalism, indian express

এম কে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এ নিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন।

কোঅপারেটিভ ফেডারালিজম বা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রবাদ। নতুন করে এতে আলোর ঝলকানি পড়েছে। জুনের ১৬ তারিখ তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এ নিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন। বলেছেন, প্রতি বছর ইন্টার স্টেট কাউন্সিল বা আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠক অন্তত তিন বার করতে হবে, যাতে কোঅপারেটিভ ফেডারালিজম আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

Advertisment

স্ট্যালিন এমনও বলছেন যে, জাতীয় গুরুত্ব রয়েছে যে সব বিলের, সেগুলি যেন সংসদে পেশের আগে এই কাউন্সিলে আলোচনা করা হয়। কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যেকার যোগাযোগ যেহেতু তলানিতে, তাই এটা প্রয়োজন বলে মনে করেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।

ইন্টার স্টেট কাউন্সিল কী?

কেন্দ্র-রাজ্য এবং রাজ্যগুলির মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখাই ইন্টার-স্টেট কাউন্সিলের মূল কাজ। সংবিধানের ২৬৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে এই কাউন্সিল। যে ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি যদি প্রয়োজন মনে করেন, তা হলে এই কাউন্সিল তৈরি করতে পারেন। এটি বিভিন্ন রাজ্য সরকারের মধ্যে নানা ইস্যুতে আলোচনার একটি ফোরাম। ১৯৮৮ সালে সারকারিয়া কমিশনের সুপারিশ ছিল, এই কাউন্সিলটি স্থায়ী কমিটি হিসেবে গঠন করা হয় যেন। ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রপতির একটি নির্দেশ বলে এটি বাস্তবায়িত হয়।

প্রধানমন্ত্রী এই পরিষদের চেয়ারম্যান। সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এর সদস্য। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রধানও সদস্য এর। প্রধানমন্ত্রী এই কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন ছ'জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে।

কী কী বিষয় মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন তুলে ধরেছেন?

ডিএমকে প্রধান প্রধানত তুলে ধরেছেন এই কাউন্সিলের নিয়মিত বৈঠকের না হওয়ার বিষয়টিকে। কারণ, কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছে গত ছ'বছরে মাত্র এক বার, অথবা, ২০১৬ সালের জুলাই মাসের পর থেকে এটির কোনও বৈঠক হয়নি। ১৯৯০ সালে তৈরির পর থেকে কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছে মাত্র ১১ বার। যদিও নিয়ম বলছে, প্রতি বছর অন্তত তিন বার এই কাউন্সিলকে বৈঠকে বসতে হবে।

আরও পড়ুন Explained: ৪ বছরের চুক্তিতে ‘ঠিকা সেনা’! ‘অগ্নিপথ’ নিয়ে গোটা দেশ অগ্নিগর্ভ কেন?

এই কাউন্সিলের পুনর্গঠন করা হয়েছে গত মাসে, যে পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন স্ট্যালিন। এখন এই পরিষদে স্থায়ী আমন্ত্রিত হিসবে থাকবেন ১০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কাউন্সিলের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত সহ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য।

তামিলনাড়ুর তরফে এই কমিটি তৈরির দাবি জানানোর ইতিহাস রয়েছে। ১৯৬৯ সালে স্ট্যালিনের বাবা এম করুণানিধি কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে একটি কমিটি গঠনের দাবি জানান। কয়েক মাস পর, তা তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা, সেই লক্ষ্যে করুণানিধি সরকার মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি পি ভি রাজকুমারের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি গঠন করে। ১৯৭১ সালে রিপোর্ট জমা দেয় সেই কমিটি, বলে, ইন্টার-স্টেট কাউন্সিল এখুনি তৈরি করা দরকার।

আরও পড়ুন Explained: মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার পথে বিল পাশ, কিন্তু এবার কী? ‘দিল্লি’ কতটা দূর?

গত ইন্টার স্টেট কাউন্সিলের বৈঠকে কী হয়েছিল?

১৯১৬ সালের ওই বৈঠকে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে পুঞ্চি কমিশনের সুপারিশের বিষয়টি উঠেছিল। সেই বৈঠকে নিজে হাজির ছিলেন না তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা, তা নিয়ে তোপ দেগেছিলেন করুণানিধি। পুঞ্চি কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। কেন্দ্রীয়করণ বা সেন্ট্রালাইজেশন নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষে রাজ্যগুলি সওয়াল করে। ৩৫৬ ধারা বা কোনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের বিরুদ্ধে উদ্বেগপ্রকাশ করা হয়। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, যিনি তখন এক বিরোধী মুখ, রাজ্যপালের পদটি তুলে দেওয়ার দাবি জানান।

PM Narendra Modi MK Stalin
Advertisment