Advertisment

কেন লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি পেট্রোল-ডিজেলের? জানলে অবাক হবেন!

Petrol-Diesel Price Hike: করোনায় লকডাউনে দেশের অর্থনীতির গতি মুমূর্ষু, তার উপর অগ্নিমূল্য তেল মড়ার উপর যেন খাঁড়ার ঘা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Petrol and Diesel price hike in bengal 23 october 2021

পেট্রোল একশো পেরিয়েছিল বেশ কিছুদিন আগেই, এবার পালা ডিজেলের।

Petrol-Diesel Price Hike: লাগাম ছাড়া ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে তেল। পেট্রোল, ডিজেলের দাম। কেন? সোমবার কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাম-বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের ঊর্ধ্বগামী মূল্যকেই দায়ী করেন। করোনায় লকডাউনে দেশের অর্থনীতির গতি মুমূর্ষু, তার উপর অগ্নিমূল্য তেল মড়ার উপর যেন খাঁড়ার ঘা।

Advertisment

মে মাস থেকে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা, ফলে অন্তত ৬টি রাজ্যে এর দাম লিটার পিছু ১০০ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। মুম্বইতে খুচরো বাজারে পেট্রোলের লিটার পিছু দাম ১০১ টাকা ৫০ পয়সা, ডিজেলের দাম ৯৩ টাকা ৬০ পয়সা। আর বছরের শুরু থেকে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ১১ টাকা ৬০ পয়সা, ডিজেলের দাম-বৃদ্ধি ১২ টাকা ৪০ পয়সা।

ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেলের দাম পেট্রোল-ডিজেলের দামে প্রভাব ফেলে কী ভাবে?

২০২১-এ বিশ্ব অর্থনীতি কোভিডের ক্ষত সারিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্রুড অয়েলেরও দাম বাড়ছে। ব্রেন্ট ক্রুড বেড়েছে ৩৭.১%, ব্যারেল পিছু ৫১.৮ ডলার থেকে বেড়ে ৭১ ডলার পৌঁছেছে। যদিও বর্তমানে পেট্রোলের যে দাম, তা ২০১৪ অর্থবর্ষের পেট্রোলের দামের চেয়েও বেশি, যখন ভারতে অশোধিত তেলের গড় দাম ছিল ব্যারেলে ১০৫. ৫ ডলার। আর ২০১৩-র জুন মাসে ভারতে ক্রুড অয়েল বাস্কেটের গড় দাম ছিল ব্যারেল পিছু ১০১ ডলার।

আরও পড়ুন Explained: সেন্ট্রাল ভিস্তা ও হেরিটেজে আঁধার

ভারতের গড় ক্রুড বাস্কেট বা ইন্ডিয়াস অ্যাভারেজ ক্রুড বাস্কেট কী? এর অর্থ, দুবাই, ওমান এবং ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের গড় মূল্য। ভারতের তেল আমদানির ক্ষেত্রে এটিকে সূচক হিসেবে ধরা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার এ দিকেই নজর রাখে। তা, ২০১৩ সালের জুনে ভারতের গড় ক্রুড বাস্কেটের দাম যখন ব্যারেল পিছু ১০১ ডলার, তখন পেট্রোল খুচরো বাজারে বিক্রি হয়েছে লিটার পিছু ৬৩ টাকা ০৯ পয়সা অথবা ৭৬ টাকা ৬০ পয়সায় (ডলারের তুলনায় টাকার অবচয় বা ডেপ্রিসিয়েশন যদি হিসাবে করা হয়)।

একই ভাবে ২০১৮-র অক্টোবরে যখন ভারতের গড় ক্রুড অয়েল বাস্কেটের দাম ছিল ব্যারেল পিছু ৮০.১ ডলার, তখন ডিজেলের দাম ছিল লিটার পিছু ৭৫ টাকা ৭০ পয়সা।

তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে করের প্রভাব কেমন?

উপরের বিশ্লেষণ থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে, তেলের দামে শুধু ক্রুড অয়েলের খেলা নেই, আছে আরও কিছু। কারণ যখন অশোধিত তেলের দাম তুলনায় বেশি, তখন পেট্রোল-ডিজেলের দাম কম, আবার কখনও উল্টোটা। তা হলে ওই আরও কিছুটা কী? সেটি হল তেলের দামে বসানো মহামূল্যবান কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের কর। দেখা যাচ্ছে তেলের দাম এই যে রেকর্ড উঁচুতে, তার জন্য দায়ী ওই করের কামালই, যদিও কেন্দ্র ও রাজ্য দুই পক্ষই ক্রুড তেলের আড়াল করতে করতে চায় নিজেদের। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকার। যেন কড়কড়ে করের বোঝাটা কিছুই না। একটা হিসাবেই তা বোঝা যাবে। ২০২০-র শুরুর তুলনায় এখন মাত্র ৩.৫ % বেশি ক্রুড অয়েলের দাম, এবং গত বছরের এপ্রিলে তো ক্রুড শূন্যের নিচে নেমে যায়, সরকারের করের কারণেই তেলের দাম কিন্তু বেড়েইছে।

আরও পড়ুন ক্রমশ কেন দাম বাড়ছে রান্নার তেলের?

২০২০-এ প্রখর অতিমারীতে যখন নাভিশ্বাস উঠছে, তখন কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোলে শুল্ক বাড়িয়েছে লিটার পিছু ১৩ টাকা, ডিজেলে ১৬ টাকা। রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়ের মতো কয়েকটি রাজ্য তেলের করে কাটছাঁট করলেও, কেন্দ্র শত চাপেও সে পথে হাঁটেনি। এমনকী মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য কর ছাঁটাই করতে কেন্দ্রকে আরবিআই বললেও তারা কান দেয়নি।
ধর্মেন্দ্র প্রধানের অবশ্য সাফ কথা, কেন্দ্র এখন তেলের কর ছাঁটাইয়ের কথা ভাবছে না। তাঁর যুক্তি, এখন স্বাস্থ্যক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে, তাই এ পথে হাঁটা যাচ্ছে না। ফলে আম জনতাই তেলের মূল্যে বলি প্রদত্ত। তেলের টাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা। তাতেও অক্সিজেন বাড়ন্ত, ভ্যাকসিনে নেই-রাজ্য।

অনুবাদ: নীলার্ণব চক্রবর্তী

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

petrol diesel price
Advertisment