সুদানে সংঘর্ষ অব্যাহত। নিহত ৪০০ জনেরও বেশি। আহত অন্ততপক্ষে ৩,০০০। বাস্তুচ্যুত অসংখ্য মানুষ। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে ইদের মধ্যেও যুদ্ধ থামেনি। শনিবার, ২২ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চিন এবং ফ্রান্সের কূটনীতিবিদদের সামরিক বিমানে সুদান থেকে সরে যাওয়ার ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছে। এমনটাই জানিয়েছেন সংবাদসংস্থা এপি। পরিস্থিতে একেবারেই স্থিতিশীল নয়।
পরিস্থিতি ভয়াবহ
অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে বিমানবন্দরগুলোও নিরাপদ নয়। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত বিদেশি রাষ্ট্রগুলো এখনও তাদের নাগরিকদের সুদান থেকে সরাতে পারেনি। সেদেশে আধাসামরিক বাহিনী রাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষ চলছে। তার জেরেই তৈরি হয়েছে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি। রাজধানী খার্তুমের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দখলে রাখার চেষ্টা করছে বিবাদমান উভয়পক্ষই।
গৃহযুদ্ধে আটকে বিদেশিরা
আটকে পড়া বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩,০০০ ভারতীয়। পাশাপাশি, কেরলের এক বাসিন্দা ৪৮ বছর বয়সি অ্যালবার্ট অগাস্টিন এলোপাথাড়ি গুলি বিনিময়ের মধ্যে পড়ে নিহত হয়েছেন। তারপরও সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের কারওরই যুদ্ধ থামানোর কোনও লক্ষণ নেই। যাকে এককথায় গৃহযুদ্ধই বলা হচ্ছে।
সেনাপ্রধানের মুখের কথা
এই পরিস্থিতিতে শনিবার সুদানের সেনাপ্রধান তথা দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এক সাক্ষাৎকারে অল আরবিয়া টিভিকে বলেছেন, 'একজন সুদানি হিসেবেই যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনায় বসা উচিত। কারণ, এই যুদ্ধে বিবাদমান সকলেই হেরেছে। এই পরিস্থিতিতে জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধারের সঠিক উপায় খুঁজে বের করা প্রয়োজন।'
গণতন্ত্রের পক্ষে পালটা লড়াই
সুদানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যারা যুদ্ধ করছে, সেই শক্তিশালী আরএসএফ তৈরি হয়েছিল ২০১৩ সালে। ২,০০০ সাল নাগাদ যাঁরা দারফুরে যুদ্ধের সময় সুদান সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল, সেই সমস্ত জানজাওয়েদ জঙ্গিদের নিয়ে এই বাহিনী তৈরি হয়েছিল। এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন মহম্মদ হামদান দাগালো। তিনি হেমেদতি নামেও পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন- ইদ উল আযহা এবং ইদ উল ফিতরের মধ্যে পার্থক্য কি?
সূত্রপাত ৪ বছর আগে
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আগেই রিপোর্টে জানিয়েছে, বর্তমান সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছিল ২০১৯ সালে। সেই সময় সুদানের কয়েক দশকের শাসক তথা প্রেসিডেন্ট ওমর অল-বশিরকে সামরিক বাহিনীর প্রধানরা দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যেই উৎখাত করে। কিন্তু, সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতা চলে গেলেও সুদানের বিক্ষোভকারীরা থামেনি। তারা গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের দাবি জানায়। এই দাবির সমর্থনে লড়াই করছে আরএসএফ। আর, সুদানের সেনাবাহিনী চাইছে না, গণতন্ত্রের রাস্তায় হাঁটতে।