গত ৪ এপ্রিল, মঙ্গলবার ফিনল্যান্ড উত্তর আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)-এ যোগ দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাজনৈতিক মেরু বদলাল এই দেশ। এতে ইউরোপের রাজনৈতিক ভারসাম্য, মানচিত্র যেমন বদলাল। তেমনই বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়া আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল। রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ১,৩৪০ কিলোমিটার সীমানা রয়েছে। ৭০ বছরের অবস্থান বদলে ছোট নর্ডিক দেশটি তাই ন্যাটোয় যোগ দেওয়ায় রাশিয়া সীমান্তে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর শ্বাস বাড়ল। ঠান্ডা যুদ্ধের দিনগুলোয় ফিনল্যান্ড নিরপেক্ষতার নীতি নিয়েছিল। ফিনল্যান্ডাইজেশন নামে যা পরিচিত।
রাশিয়া আক্রমণ করার আগে এই ফিনল্যান্ডাইজেশন ছিল ইউক্রেনেরও নীতি। কিন্তু, পুতিন আর তার রাশিয়ার আক্রমণাত্মক নীতি ইউক্রেনের পাশাপাশি ফিনল্যান্ডকেও ঠেলে দিল মস্কোর শত্রু শিবিরে। শুধু ফিনল্যান্ডই নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার ভূমিকা দেখে ফিনল্যান্ডের প্রতিবেশী সুইডেনও ইতিমধ্যে ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার আবেদন করে বসে আছে। ন্যাটোর নিয়ম হল, সেখানে যোগ দিতে গেলে পুরনো সদস্যদের সম্মতি লাগে। ফিনল্যান্ড সম্মতি পেয়ে ন্যাটোয় ৩১তম দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হল। তবে, সুইডেনের আবেদন এখনও অপেক্ষার প্রহর গুণছে। কারণ, তুরস্ক ও হাঙ্গেরি সুইডেনের আবেদনে এখনও সম্মতি দেয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিপক্ষ হিসেবে ন্যাটো জোট আমেরিকার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন- রামনবমী নিয়ে আদালতে, হনুমান জয়ন্তীতেও বাংলায় কোমর বাঁধছে VHP
১৯৪৯ সাল থেকে বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিলে ন্যাটো গঠন করে। সেই হিসেবে প্রতিষ্ঠাতা দেশের সংখ্যা ছিল ১২। পরে ১৯৫২ সালে গ্রিস এবং তুরস্ক এই জোটে যোগ দেয়। ১৯৫৫ সালে যোগ দেয় জার্মানি। ১৯৮২ সালে স্পেন, চেচিয়া, হাঙ্গেরি এবং পোল্যান্ড। ১৯৯৯ সালে যোগ দেয় বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া। স্লোভেনিয়া ২০০৪ সালে যোগদান করে। ২০০৯ সালে আলবেনিয়া এবং ক্রোয়েশিয়া যোগ দিয়েছে ন্যাটোয়। ২০১৭ সালে মন্টিনিগ্রো, ২০২০ সালে উত্তর মেসিডোনিয়া। আর, ২০২৩ সালে ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিল।