প্রথম যিনি করোনাভাইরাস দেখেছিলেন

গ্লাসগোর এক অ্যাপার্টমেন্টে বড় হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অ্যাকাডেমিক দক্ষতা থাকলেও অর্থের অভাবে ১৬ বছর বয়সে তাঁকে স্কুল ছাড়তে হয়, ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এ কথা লিখেছেন তাঁর মেয়ে জয়েস।

গ্লাসগোর এক অ্যাপার্টমেন্টে বড় হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অ্যাকাডেমিক দক্ষতা থাকলেও অর্থের অভাবে ১৬ বছর বয়সে তাঁকে স্কুল ছাড়তে হয়, ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এ কথা লিখেছেন তাঁর মেয়ে জয়েস।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

মানুষে প্রথমবার করোনাভাইরাস দেখেছিলেন যে মহিলা, তিনি ভাইরোলজিস্ট জুন আলমিডা। ভাইরাল ডায়াগনোসিসের জন্য তিনি ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি নামের একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন, এবং ১৯৬৫ সালে প্রথম মানুষে করোনাভাইরাস দেখতে পান।

Advertisment

হাত ধোয়ার কথা যে চিকিৎসক প্রথমবার বলেছিলেন

কে ছিলেন জুন আলমিডা?
গ্লাসগোর এক অ্যাপার্টমেন্টে বড় হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অ্যাকাডেমিক দক্ষতা থাকলেও অর্থের অভাবে ১৬ বছর বয়সে তাঁকে স্কুল ছাড়তে হয়, ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এ কথা লিখেছেন তাঁর মেয়ে জয়েস।

১৯৪৭ সালে স্কুল ছাড়বার পর আলমিডা গ্লাসগো রয়াল ইনফার্মারিতে হিস্টোপ্যাথিওলজির ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করেন, ভাতা পেতেন সপ্তাহে ২৫ শিলিং। নিজের কাজে দক্ষতা প্রদর্শন করে তিনি একজন ভাইরোলজিস্ট হয়ে ওঠেন। যেসব ভাইরাসের গঠন আগে পরিচিত ছিল না, সেরকম ভাইরাস তিনি যেমন আবিষ্কার করেছেন, তেমনই তাঁর কাজের মাধ্যমে ভাইরাল সংক্রমণের প্যাথোজেনেসিসের উপর আলো ফেলেছে।

Advertisment

বিয়ের পর আলমিডা ও তাঁর স্বামী কানাডায় চলে যান। সেখানকার টরন্টোর অন্টারিও ক্যানসার ইনস্টিট্যুটের ইলেকট্রনিক মাইক্রোস্কোপি টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।

অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ন্যাশনাল বায়োগ্রাফিতে লেখক জে ই বানাটভালা বলেছেন অটলান্টিকের অপর পারে পুঁথিগত প্রশিক্ষণের উপর কম জোর দেওয়া হত বলেই সম্ভবত তিনি সেখানে কাজের সুযোগ পান।

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় এবং হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও বেঙ্গল কেমিক্যাল- রটনা বনাম বাস্তব

কানাডায় আলমিডার কাজ নজর কাড়ে এবং অসংখ্য বৈজ্ঞানিক প্রকাশনায় তাঁর নাম উল্লিখিত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাইরাল ডায়াগনোসিস ল্যাবটেরির ১৯৭৯ সালের ম্যানুয়াল তৈরির কাজেও তিনি প্রভূত সহযোগিতা করেছিলেন।

ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোস্কোপি
আলমিডা ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোস্কোপি নামের একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এই পদ্ধতিতে ভাইরাসকে অ্যান্টিবডির সংস্পর্শে আনা হয়। নেগেটিভ স্টেইনিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, তিনি অ্যান্টিবডির সঙ্গে জুড়ে থাকা ভাইরাসের কাঠামো দেখতে পান।

১৯৮৪ সালে প্রকাশিত এক পত্রে আলমিডা বলেন ভাইরাস ডায়াগনোসিসের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর একটি পদ্ধতি নেবে যা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

এই পদ্ধতির মাধ্যমেই তিনি প্রথম রুবেলা ভাইরাস দেখতে পান। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের যে দুটি পৃথর উপাদান রয়েছে তা খুঁজে বের করার পিছনেও তাঁর ভূমিকা ছিল।

প্রথম মানব করোনাভাইরাস আবিষ্কার
পশুর শরীরে রোগটি ধরা পড়বার বেশ কয়েক বছর পর ১৯৬৫ সালে এই ভাইরাস আবিষ্কার করেন ডিজে টারেল ও এমএল বায়নো।

তাঁরা এর নাম দিয়েছিলেন বি ৮১৪ ভাইরাস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ব্যালান্স শিট- কোথা থেকে অর্থ আসে, কোথায় খরচ হয়

এই আবিষ্কারের দু বছর পর অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি পদ্ধতির দ্বারা এই ভাইরাস দেখতে চেষ্টা করেন।

আলমিডা ও টাইরেল যৌথভাবে দেখতে পান যে তাঁদের সংগৃহীত নমুনায় যে ভাইরাস রয়েছে চা আভিয়ান ব্রংকাইটিস ও মাউস হেপাটাইটিসের মতই।

তাঁরা এর নাম দেন করোনাভাইরাস। ১৯৬৮ সালে এই নাম গৃহীত হয়।

১৯৮৪ সালে এক গবেষণা পত্রে এ নিয়ে তিনি বিস্তারিত লেখেন। ২০০৭ সালে, ৭৭ বছর বয়সে মারা যান আলমিডা।

coronavirus corona