Iran Hezbollah: লেবানন ভিত্তিক এবং ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে তার মহাসচিব হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি ২৮ সেপ্টেম্বর নিশ্চিত করেছে। ৩২ বছর ধরে নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর মহাসচিব ছিলেন। একমাস ধরে ইজরায়েল হিজবুল্লাহর ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। আর, তাতেই নিহত হয়েছে এই জঙ্গিগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতাদের প্রায় সকলেই। নাসরাল্লাহর মৃত্যু, ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবে কিছুটা হলেও ধাক্কা দিল। কারণ, এই জঙ্গিনেতার ওপর ভর করেই শুধু লেবানন নয়। মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর দাদাগিরি চালাচ্ছিল ইরান।
কার্যত নাসারুল্লাহ ছিলেন ইরানের 'প্রতিরোধ অক্ষ'-এর অংশ। তাঁর প্রাণহানি 'প্রতিরোধ অক্ষ'-এর পুনর্বিন্যাস করতে ইরানকে বাধ্য করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে ইজরায়েলের মূল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিল ইরান। গত কয়েক দশক ধরে এই ইরানের সঙ্গে ভারতের আর্থিক এবং নানা সম্পর্ক বেশ ভালো। ভারতের খনিজ তেলের চাহিদা পূরণে ইরান ব্যাপক সাহায্য করেছে। আব্রাহাম চুক্তিতে ইরানের সঙ্গে ইজরায়েলের সন্ধি হওয়ার পর ভারত আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। এমনকী, গাজায় ইজরায়েলের হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারানোর পর ইরানের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক ছিন্ন করেনি।
ভারতের অবস্থান
শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বাণিজ্যপথও ভারত খুঁজে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গাজার ওপর ইজরায়েলের লাগাতার হামলায় আরব দেশগুলোও মিলিতভাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। যা ভারতকে ইজরায়েল-ঘেঁষা মধ্যপন্থা অবলম্বনে সাহায্য করেছে। অবশ্য এর পিছনে মূল কৃতিত্ব আমেরিকা। কারণ, তারা সৌদি আরবের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে। যাতে সৌদি আরব সরাসরি ইরানের পাশে দাঁড়ায়নি। তবে, এখনও রাশিয়া ইরানের পাশে রয়েছে। ফলে, ইরান আক্রান্ত হলে বিশ্বযুদ্ধ যে বাঁধতে পারে, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আরও পড়ুন- করোনার পর নতুন চিনা 'শক'! আশঙ্কায় কাঁপছে ভারত-সহ বিশ্ব
এই পরিস্থিতিতে নাসারুল্লাহর প্রাণহানি মধ্যপ্রাচ্যে ভারতের ইরানি তাসকে ক্রমশ ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকী তেহরান এবং নয়াদিল্লি পারস্পরিক সম্পর্কটাকে চাবাহার উন্নয়নে সীমাবদ্ধ রাখলেও সাম্প্রতিক যুদ্ধের আবহ নয়াদিল্লির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। যেকথা মাথায় রেখেই, ভারতের কৌশলগত ক্যালকুলাসে ইরানের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। কারণ, এই মূল্য হ্রাস না হলে ভারতের যে কোনও কিছুর ওপর পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হতে পারে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।