ইতিহাসের দোরগোড়ায় বিজেপি, কী ভাবে?

বামেদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জাতীয় স্তরে তাদের আসন পাঁচের বেশি পেরোবে না বলেই মনে হচ্ছে। কেরালায় ক্ষমতাসীন এলডিএফের একজন ছাড়া সব প্রার্থী পিছিয়ে রয়েছেন।

বামেদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জাতীয় স্তরে তাদের আসন পাঁচের বেশি পেরোবে না বলেই মনে হচ্ছে। কেরালায় ক্ষমতাসীন এলডিএফের একজন ছাড়া সব প্রার্থী পিছিয়ে রয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
BJP

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট বেড়েছে দ্বিগুণ

বিজেপি ২৯২ আসনে এগিয়ে আছে, বেলা এগারোটার পর এ খবর এসে পৌঁছল। দেখা যাচ্ছে ২০১৪ সালের তুলনায় ১০ গুণ বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৩০০-র বেশি আসনে এগিয়ে।

Advertisment

অকংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীই প্রথম, যিনি পর পর দুবার পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আসছেন। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি ক্ষমতায় আসে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে। ১৯৮৪ সালে রাজীব গান্ধীর কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবার এ ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৯ সালে যা দেখা যাচ্ছে, জওহরলাল নেহরুর কংগ্রসের মতই মোদীর বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে।

আরও পড়ুন, ভোটের বলে বলীয়ান নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার সরকার গড়ার মুখে

দেখা যাচ্ছে দেশ জুড়ে বিজেপির ভোট শেয়ারে ঢেউ উঠেছে, যা প্রায় অবিশ্বাস্য।

Advertisment

২০১৪ সালের তুলনায় যেসব রাজ্যে বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে গুজরাট, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, কর্নাটক, মধ্য প্রদেশ, দিল্লি, ওড়িশা, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিম বঙ্গ।

দেশের অন্যত্র, বিজেপির বিরোধীরা আর দাবি করতে পারবে না যে বিজেপি শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেয়েছে। দশটিরও বেশি রাজ্যে বিজেপি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের হিসেবানুসারে, হিমাচল প্রদেশে ৬৯ শতাংশ, অরুণাচল প্রদেশে ৬৩ শতাংশ, গুজরাটে ৬২ শতাংশ, উত্তরাখণ্ডে ৬১ শতাংশ, রাজস্থানে ৫৯ শতাংশ, মধ্য প্রদেশে ৫৮ শতাংশ, দিল্লিতে ৫৭ শতাংশ, হরিয়ানায় ৫৭ শতাংশ, কর্নাটকে ৫২ শতাংশ, উত্তর প্রদেশে ৫০ শতাংশ এবং ছত্তিসগড়ে ৫০ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি।

আরও পড়ুন, Lok Sabha Election 2019 Winning, Losing Candidates: অমেথিতে পিছিয়ে রাহুল, রায়বেরিলিতে এগিয়ে সোনিয়া, বাকি আসনে এগিয়ে কারা?

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট শেয়ার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, ২০১৪ সালে তারা এ রাজ্যে পেয়েছিল ১৮ শতাংশ ভোট, এবার তারা পেয়েছে ৩৯ শতাংশ ভোট। গত লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে ২টি আসন পেয়েছিল বিজেপি, এবার তারা ইতিমধ্যেই ১৭টি আসনে এগিয়ে। এ রাজ্য থেকে মুছে যেতে চলেছে বামেরা।
বরং ওড়িশায় বিজেপির উন্নতি তত চোখ ধাঁধানো নয়, এখানে তারা সাতটি আসনে এগিয়ে, ভোট শেয়ার ৩৭ শতাংশ।

রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস মধ্য প্রদেশে একটি আসনে এগিয়ে এবং রাজস্থানে তারা এখনও শূন্য। এ দুই রাজ্যে মাত্র চার মাস আগে বিধানসভা ভোটে জিতেছে তারা। ছত্তিসগড়ে কেবলমা্তর বস্তার এবং মহাসমুন্দে এগিয়ে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন দলটি।

কংগ্রেসের একমাত্র সুসংবাদ পাঞ্জাব এবং কেরালা। কেরালায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ ২০টির মধ্যে ১৯টি আসনে এগিয়ে। একমাত্র এ রাজ্যেই দলীয় নেতৃত্বের হিসাব মিলেছে। তাঁদের বক্তব্য ছিল রাহুল গান্ধী ওয়েনাড় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভাল ফল করবে কংগ্রেস।

তবে আমেথিতে পিছিয়ে রয়েছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর আস্থাভাজন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া (গুণা), দীপেন্দর হুডা (রোহতক), গৌরব গগৈ (কালিয়াবুর্গ), সুস্মিতা দেব (শিলচর)- সকলেই পিছিয়ে রয়েছেন। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা বিদায়ী লোকসভায় কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভুপিন্দর হুডা, মধ্য প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এম বীরাপ্পা মইলি সকলেই নিজ নিজ কেন্দ্রে পিছিয়ে।

আরও পড়ুন, LIVE: দিল্লির সিংহাসন কার? উনিশের রায়ের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ

বামেদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জাতীয় স্তরে তাদের আসন পাঁচের বেশি পেরোবে না বলেই মনে হচ্ছে। কেরালায় ক্ষমতাসীন এলডিএফের একজন ছাড়া সব প্রার্থী পিছিয়ে রয়েছেন। শবরীমালা ইস্যুতে বিজেপি এ রাজ্যে প্রভূত প্রভাব ফেললেও তা ভোটে রূপান্তরিত হয়নি। তবে এ ইস্যুতে সিপিএমের ভোটের কুপ্রভাব পড়েছে।

বিজেপি-বিরোধী শিবিরের হাল অত্যন্ত খারাপ। উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা-আরএলডির মহাজোট বিজেপিকে ব্যাপক বেগ দেবে বলে মনে করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে বিজেপি এ রাজ্যে ৮০টির মধ্যে ৭১টি আসন জিতেছিল। বেলা সাড়ে এগারোটার হিসেব অনুসারে বিজেপি এগিয়ে ৫৬ আসনে, এবং মহাজোট এগিয়ে কেবল ২১টি আসনে।

এনডিএ বিহারে সুইপ করে গেছে, ৪০টির মধ্য়ে ৩৮টি আসনে এগিয়ে তারা। লালুপ্রসাদ এবং তাঁর পুত্র তেজস্বী যাদবের পক্ষে এ এক বড়সড় ধাক্কা।
তবে আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে দক্ষিণের রাজ্যগুলি বিজেপিকে কড়া লড়াই দিচ্ছে। তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের সহযোগী ডিএমকে প্রায় সব আসনে জিততে চলেছে এবং ট্রেন্ড অনুসারে অন্ধ্র প্রদেশে ওয়াইএসআরসিপি এবং তেলেঙ্গানায় টিআরএস ব্যাপক হারে এগিয়ে রয়েছে।

election commission bjp