সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩- গাজা শহরে ইজরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়রা শোক প্রকাশ করছেন। (এপি ছবি/ফাতিমা শাবাইর)
ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন বিরোধে রক্তপাতের সর্বশেষ অধ্যায়ে, ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী হাজার হাজার সাধারণ নাগরিককে গাজা শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কারণ, তারা সম্ভাব্য স্থলভাগে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমানে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাতের কারণগুলো অনেকেই জানেন। প্যালেস্তিনীয়রা বলেন যে ইজরায়েল জোর করে তাঁদের মাতৃভূমি দখল করেছে। আর, ইজরায়েল দাবি করে যে বাইবেলের জন্মভূমিতে তাদের অস্তিত্বের অধিকার রয়েছে। প্রশ্ন হল, কীভাবে ইহুদিদের 'ইজরায়েল'-এ প্রথম স্থানান্তর শুরু হয়েছিল? ১৯৪৮ সালের মে মাসে ইজরাইল সৃষ্টির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে, কীভাবে এর জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল? ব্রিটিশ এবং অন্যান্য আরব শক্তির ভূমিকাই বা তাতে কী ছিল?
ইহুদি বিরোধিতা হিব্রু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, 'ইজরায়েল' হল ঈশ্বরের দেওয়া নাম। এই নামটি দেওয়া হয়েছিল ইব্রাহিমের নাতি জ্যাকবকে। যাঁকে তিনটি 'আব্রাহামিক' ধর্মের পিতৃপুরুষ বলে মনে করা হয়। ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম। আব্রাহামের বংশধররা কেনানে বসতি স্থাপন করেছিল। যা মোটামুটি আধুনিক ইজরায়েলের অঞ্চল। পরবর্তী সহস্রাব্দ থেকে ১৯ শতকের শেষের দিকে, কেনান ভূমিটি (গ্রিক, রোমান, পারসিক, ক্রুসেডার, ইসলামপন্থী) অটোমান-সহ বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। যেখানে ইহুদিরা বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাস করত। প্রায়শই নিপীড়নের শিকার হত। বিশেষ করে ইউরোপে। যেমন, রাজতন্ত্রের রাশিয়ায়, ১৮৮০-র দশকে ইহুদিদের লক্ষ্য করে হামলা হয়েছিল। ফ্রান্সে, ১৮৯৪ সালের ড্রেফাসে একজন ইহুদি সৈন্যকে জার্মানির কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়ার জন্য মিথ্যাভাবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই সবের পিছনে ছিল প্রচলিত ইহুদি-বিরোধী কুসংস্কার।
প্যালেস্তাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং বিদেশমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাওয়ের সঙ্গে ১৯৮২ সালের ২১ মে, দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁর আগমনের সময়। ভারতই প্রথম অ-আরব রাষ্ট্র, যে প্যালেস্তাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। (ছবি: এক্সপ্রেস আর্কাইভ)
Advertisment
জায়নবাদ এর ফলে, ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি অনুভূতি বাড়তে শুরু করে যে তাদের নিজেদের বলে একটি দেশ না-থাকা পর্যন্ত, তারা নিরাপদ হয়। এই আন্দোলন, ইহুদি দেশ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বা জায়োনিজম নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। ১৮৯৬ সালে, থিওডর হার্জল, একজন অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান, ইহুদি জাতি সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করে 'ডের জুডেনস্টাট' নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। এই পুস্তিকাটি এমন জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে হার্জলকে রাজনৈতিক জায়নবাদের জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রাথমিকভাবে, উগান্ডা এবং আর্জেন্টিনার মত দেশগুলিকে ইহুদি জাতির জন্মভূমির জন্য সম্ভাব্য দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। যাই হোক, শীঘ্রই ইহুদিরা প্যালেস্তাইনে বসতি স্থাপন করেন। সেখানে ইহুদিদের একসময় ধর্মভূমি ছিল। যার মধ্যে অনেক পবিত্র স্থান আজও রয়ে গিয়েছে।