কলকাতায় করোনা সংক্রমণে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটার পর মৃতদেহের সৎকার নিয়ে শ্মশানে ব্যাপক ঝামেলা হয়েছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেও কথা বলতে হয়েছে। অথচ অনেক আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক কোভিড ১৯-এ মৃত রোগীদের মৃতদেহ নিয়ে কী করতে হবে সে সম্পর্কিত নির্দেশিকা জাারি করেছে। তারা বলেই দিয়েছিল, মৃতদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর কথা নয়। তবে এ রোগে মৃতদের অটোপ্সির সময়ে মৃতদেহের ফুসফুস যদি ঠিকভাবে নাড়াচাড়া না করা হয়, তাহলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে মৃতদেহের বায়োসেফটি লেভেল, মেডিক্যাল সরঞ্জাম ইত্যাদি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা রয়েছে। কোভিড ১৯ মৃতদের ক্ষেত্রে হু বায়ো সেফটি লেভেল ৩ মেনে চলা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ওম শ্রীবাস্তব বলেছেন, "বায়ো সেফটি লেভেল ৩-এ মৃতদেহ লিকপ্রুফ প্লাস্টিকে ভরে পুড়িয়ে দিতে হবে। সে সময়ে আত্মীয়দের শরীর স্পর্শ করতে দেওয়া হবে না।" প্লাস্টিকে মোড়া শরীরকে কোনও ভাবেই না খোলার নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সাধারণ সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাতের স্বাস্থ্য, জলপ্রতিরোধী অ্যাপ্রন, দস্তানা, মাস্ক, গগলস ব্যবহার এবং যে ব্যাগে দেহ রয়েছে তার জীবাণুমুক্ত করণ ও বিছানার জীবাণুমুক্তকরণ। মন্ত্রকের পরামর্শ পরিবার যেন মৃতদেহ না জড়ায়, না ধোয়ায়, না চুম্বন করে।
চিকিৎসক ও মর্গ কর্মীরা যাতে মৃতদেহ নির্গত তরল বা তৎসংলগ্ন বাতাসের সংস্পর্শে না আসেন, সে কারণে বলা হয়েছে কোনও গুরুতর সন্দেহ না দেখা দিলে এই রোগীদের অটোপ্সির প্রয়োজন নেই। মুম্বইয়ের কেইএম হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান হরিশ পাঠক বলেন, "যদি অটোপ্সি করা আবশ্যিক হয়, তাহলে আমাদের সুরক্ষা পোশাক পরতে হবে এবং তারপর গোটা অটোপ্সি রুম ও সমস্ত ইনস্ট্রুমেন্ট সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।" যদি সঙ্গে সঙ্গে মৃতদেহ দাহ না করা হয়, তাহলে তা মর্গে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় রাখতে হবে।
হু এবং এইমস, দু পক্ষেরই পরামর্শ, পরিবার যদি চাপাচাপি না করে, তাহলে দেহ দাহ করাই ভাল। মহারাষ্ট্র ডিরেক্টরেট অফ হেলথ সার্ভিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ডক্টর সতীশ পাওয়ার জানালেন "H1N1 প্রকোপের সময়ে কবর দেবার অনুমতি ছিল। তিনি জানান, আমরা সে পরামর্শ দিতাম কবর দেবার সময়ে পরিবার যেন মৃতদেহ স্পর্শ না করে।"