পুরষ্কারজয়ী আমেরিকান ক্রাইম সিরিজ ডেক্সটারের সঙ্গে অনেকেই মেহরৌলি হত্যা মামলার মিল খুঁজে পেয়েছেন। ধৃত হত্যাকারী ২৮ বছরের আফতাব পুনাওয়ালা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে সে তার লিভ-ইন পার্টনারের শরীর টুকরো করে সেই দেহাংশ অন্যত্র ফেলে দেওয়ার আইডিয়াটা টিভির ক্রাইম সিরিজ থেকেই পেয়েছিল। মাইকেল সি. হল ডেক্সটার মরগান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ওই ক্রাইম সিরিজে ডেক্সটারের হত্যাকারী চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন মরগান।
সেই চরিত্রকে নকল করেই চলতি বছরের মে মাসে, আফতাব পুনাওয়ালা তার ২৭ বছর বয়সি লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছে যে সে শ্রদ্ধাকে 'চুপ করাতে' চেয়েছিল। সেজন্যই শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। খুনের পর শ্রদ্ধার শরীরের দেহাংশগুলো ছোট কালো পলিব্যাগে রেখেছিল।
ক্রাইম সিরিজে দেখান হয়েছিল যে ডেক্সটার একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। মিয়ামি মেট্রো পুলিশ বিভাগে কাজ করে। যখন ডেক্সটার সকল অপরাধের সমাধান করে, সেই সময়ই সে একজন সতর্ক সিরিয়াল কিলারের মত বিচক্ষণ সমান্তরাল জীবন যাপনও করে। এমন খুনিদের হত্যা করে, যাদের আদালত পর্যাপ্ত শাস্তি দেয়নি।
ডেক্সটারের হত্যার কায়দা ছিল, সে হত্যার পর দেহ কেটে ফেলত। তা টুকরো টুকরো করে কালো আবর্জনার ব্যাগে ভরে রাখত। তারপরে সেই ব্যাগ গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যেত। সেখান থেকে তুলত নৌকোয়। ব্যাগগুলোর ওজন বাড়াতে তার মধ্যে পাথর ভরে রাখত। সিল করা সেই সব ব্যাগ মহাসাগরের খালে ফেলে দিত।
শ্রদ্ধা ওয়াকারের শরীরের বিভিন্ন অংশ টুকরো টুকরো করার পরে, পুনাওয়ালা সেগুলো সংরক্ষণ করার জন্য একটি নতুন ফ্রিজ কিনেছিলেন। পরের দুই থেকে তিন মাস সে মেহরৌলি বনাঞ্চলে একাধিকবার গিয়েছিল। আর, সেখানে ব্যাগ থেকে শ্রদ্ধার দেহাংশগুলো ফেলে দিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে সে প্রথমে শ্রদ্ধার শরীরের অন্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলেছিল। কারণ, সেসব সহজেই পচে যায়।
আরও পড়ুন- প্রেমিকাকে কেটে ৩৫ টুকরো! দিল্লির Dexter আফতাবের চরম শাস্তি চান স্বরা ভাস্কর
টিভি শোয়ের সঙ্গে বাস্তবের হত্যার ঘটনা জড়িয়ে যাওয়া, সেটা কিন্তু, এবারই প্রথম ঘটল না। ২০১১ সালের এপ্রিলে কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা মার্ক অ্যান্ড্রু টুইচেল, ৩৮ বছর বয়সি একজন ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। ২০০৮ সালে টুইচেল তার শিকারকে একটি গ্যারেজে ডেকেছিল। সেখানে তাঁকে ব্যাপক মারধর করে খুন করে। তারপর দেহগুলো কেটে ফেলে। কিছু দেহাংশ পুড়িয়ে ফেলার পর সেগুলো আবর্জনার ব্যাগে ভরে ময়লা বেরিয়ে যাচ্ছে, এমন নর্দমায় ফেলে দেয়।
বিচার চলাকালীন, আদালত ডেক্সটার মরগানের চরিত্রের সঙ্গে টুইচেলের আচরণের মিল খুঁজে পায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমও টুইচেলকে ডেক্সটার সিরিজের সেই হত্যাকারী বলে উল্লেখ করে। কিলার বলে অভিহিত করেছে। টুইচেল এমনকি একটি 'হত্যার ঘরও' বানিয়েছিল। এমন ঘর, যেখানে কোনও ফরেনসিক প্রমাণও পাওয়া যাবে না। সেখানেই সে খুন করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল।
Read full story in English