ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক অফিসার তাদের হাতে বন্দি বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সেনা। পাক সেনার তরফ থেকে এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
পাকিস্তান কী দাবি করছে
পাকিস্তান সেনা বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বুধবার বিকেলে বলেছেন, ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি বিমান পাকিস্তানের এলাকায় ঢুকে পড়ে এবং তাদের গুলি করে নামানো হয়।
আরও পড়ুন: কার্গিল যুদ্ধের সময় কেন নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোতে পারে নি বায়ুসেনা?
ওই মুখপাত্র বলেন, "আমাদের সেনাবাহিনী দুই পাইলটকে গ্রেফতার করে, তাদের মধ্যে একজনকে আহত অবস্থায় সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং, ঈশ্বরের ইচ্ছায় তার দেখভাল করা হবে। অন্যজন আমাদের সঙ্গেই রয়েছে।"
সন্ধেয় গফুর টুইটারে বিষয়টি নিয়ে বলেন, পাকিস্তান সেনার হেফাজতে একজন ভারতীয় পাইলটই রয়েছেন। সেনা নীতি মেনে চলা হচ্ছে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের সঙ্গে।
আটক অফিসারের একটি ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি, যে ছবিতে তাঁকে বাহ্যত ওই বিমানবাহিনীর অফিসারই মনে হচ্ছে।
ভারতের বিবৃতি
বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে যে ভারত পাক বিমানবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে একটি মিগ ২১ হারিয়েছে, এবং অ্যাকশনে এক পাইলট নিখোঁজ হয়েছেন। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তান দাবি করছে যে ওই পাইলট তাদের হেফাজতে রয়েছেন। মুখপাত্রটি আরও বলেছেন, আমরা তথ্য খতিয়ে দেখছি।
জেনিভা কনভেনশন
তৃতীয় জেনিভা কনভেনশন (১৯৪৯)-এ যুদ্ধবন্দিদের সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে, যাতে যুদ্ধবন্দিদের অধিকারকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এবং তাদের সঙ্গে কীরকম ব্যবহার করা হবে এবং কীভাবে মুক্তি দেওয়া হবে, সে সম্পর্কিত আইনও নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি (আইসিআরসি) এ বিষয়ে জানিয়েছে, যুদ্ধবন্দিরা সাধারণভাবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং সংঘর্ষের সময়ে তারা অন্য পক্ষের হাতে ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: সার্জিকাল স্ট্রাইক ২: আগাম অসামরিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ বলতে কী বোঝায়?
জেনিভা কনভেনশন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী আইন যথাযথ ভাবে লাগু করাকে সুনিশ্চিত করা আইসিআরসি-র কাজ। আইসিআরসি সামরিক ও অসামরিক দু ধরনের বন্দিদের সঙ্গেই দেখা করে।
জেনিভা কনভেনশনের আওতায় পাকিস্তান বিমানবাহিনীর অফিসারকে অক্ষত অবস্থায় ফেরৎ পাঠাতে বাধ্য। সব দেশকেই সবরকম অবস্থায় যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার হয়। যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে হিংসাত্মক ব্যবহার করা চলে না, তাদের অপমান করা যায় না। তাদের বাসস্থান, খাবার দাবার, জামাকাপড়, স্বাস্থ্য, চিকিৎসার একটা ন্যূনতম ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হয়।
তবে পাকিস্তানকে কবের মধ্যে ওই অফিসারকে ফেরত পাঠাতে হবে, তার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা কিন্তু নেই। এ প্রসঙ্গে লেফটেন্যান্ট কাম্বামপতি নচিকেতার কথা মনে করা যেতে পারে। ১৯৯৯ সালের ২৭ মে, কার্গিল যুদ্ধের সময়ে বাতালিক সাবসেক্টরে শত্রুদের ধ্বংস করতে গিয়ে তাঁর মিগ ২৭ বিমানে আগুন ধরে যায়। ধরা পড়ে যান নচিকেতা। এক সপ্তাহ পাকিস্তানের হেফাজতে থাকার পর, সে বছরেরই ৩ জুন তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয়।
Read the Full Story in English