Advertisment

Explained: বিরল রোগের চিকিৎসায় শুল্কে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র, কতটা সুবিধা হল রোগীদের?

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শুল্ক ছাড়ের কথা জানানো হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Medicines

জাতীয় বিরল রোগ ২০২১-এর অধীনে তালিকাভুক্ত সমস্ত বিরল রোগের চিকিত্সায় ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আমদানি করা সমস্ত ওষুধ এবং খাবার, কেন্দ্রীয় সরকার মৌলিক শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত পেমব্রোলিজুমাব (কিট্রুডা)-কেও মৌলিক শুল্ক থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

Advertisment

শুল্ক অব্যাহতির ব্যাপারটা কী?
২৮ মার্চ, কংগ্রেস নেতা এবং তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর এক যুবক দম্পতির গল্প শেয়ার করেছিলেন। এই যুবক দম্পতি ওষুধের শুল্ক ছাড়ের জন্য তাঁর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ওই ওষুধ তাঁদের অল্পবয়সি মেয়ের জন্য আমদানি করতে হচ্ছিল। তাঁদের মেয়ে ক্যান্সারে ভুগছিল। ওই দম্পতি জানান, তাঁরা ওই ওষুধের ওপর আরোপ করা বিপুল পরিমাণ শুল্ক দিতে অক্ষম।

থারুর বলেন, 'ওই পরিবার টাকার জন্য সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছিল। নিজেদের যাবতীয় সঞ্চয় খরচ করেছে। ধার করেছে। লোকের কাছে হাত পেতেছে। কিন্তু, যখন ওষুধটি আমদানি করতে হচ্ছিল, তার জিএসটির জন্য অতিরিক্ত ৭ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। যা তারা দিতে পারেনি। তারা আমার কাছে গেলে আমি ১৫ মার্চ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে চিঠি লিখে মানবিক কারণে ওই দম্পতিকে জিএসটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সাহায্য চেয়েছিলাম। কোনও উত্তর না-পেয়ে ওই দম্পতি রবিবার (২৬ মার্চ) আবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইনজেকশন মুম্বই বিমানবন্দরে আটকে ছিল। কিন্তু, কাস্টমস জিএসটি পেমেন্ট ছাড়া সেটা ছাড়বে না।'

থারুর বলেন, 'আমি এবার সরাসরি মিসেস সীতারমনকে ফোন করলাম। আমি তাঁকে বলেছিলাম যে এই শিশুটির ওপর অবিলম্বে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু, ওষুধটি সময়ে ব্যবহার না-করলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। কাস্টমসের হেফাজতে থাকলে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সীতারামন শুনে সহানুভূতি দেখালেন। জানালেন, আমার চিঠি দেখেননি। তাই আবার আমি চিঠি পাঠালাম। আধঘণ্টার মধ্যে তাঁর পিএস, সেরনিয়া ভুটিয়া ফোন করে আমাকে জানালেন যে পরোক্ষ কর বিভাগ এবং কাস্টমস বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ১০ মিনিটের মধ্যে কাস্টমস বোর্ডের চেয়ারম্যান বিবেক জোহরি আমাকে আরও নথির জন্য ফোন করলেন। আজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে জিএসটিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে।' থারুর 28 মার্চ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই টুইট পোস্ট করেন।

নতুন শুল্ক ছাড় কীভাবে কাজ করবে?
বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ কার্যকর হওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি), 'ড্রাগস বা ওষুধের পরিবর্তে ড্রাগস বা মেডিসিনস বা ফুড ফর স্পেশাল মেডিক্যাল পারপাসেস (এফএসএমপি)'-তে ছাড় দেওয়া হয়েছে।' বলে জানিয়েছেন। এখন, এই ছাড়ের সুবিধা পেতে, আলাদাভাবে ওষুধ আমদানিকারী ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় বা রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা আধিকারিক বা জেলার জেলা মেডিক্যাল অফিসার বা সিভিল সার্জেনের থেকে একটি শংসাপত্র তৈরি করতে হবে। অর্থ মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'যদিও মেরুদণ্ডের পেশীর অ্যাট্রোফি বা ডুচেন মাসকুলার ডিস্ট্রোফির চিকিত্সার জন্য নির্দিষ্ট ওষুধের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে, সরকার অন্যান্য বিরল রোগের চিকিত্সায় ব্যবহৃত ওষুধ এবং ওষুধের জন্য শুল্ক ছাড়েরও অনেক আবেদন পেয়েছে। এসব রোগের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ বা বিশেষ খাবার অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আর, তা আমদানি করতে হয়। এটা মনে করা হয় যে ১০ কেজি ওজনের একটি শিশুর জন্য, কিছু বিরল রোগের চিকিত্সার বার্ষিক খরচ ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে। যার চিকিৎসা খরচ আজীবন বহন করতে হয়। আর, ওষুধের ডোজ এবং খরচ, বয়স ও ওজনের সঙ্গে বাড়ে। এই ছাড়ের ফলে রোগী ও তাঁর পরিবারের যথেষ্ট খরচ সাশ্রয় হবে। তাঁরা অনেকটাই সুবিধা পাবেন।'

আরও পড়ুন- দলাই লামার উত্তরাধিকার বিশ্বে কতটা প্রভাব ফেলবে, কী বলছে তিব্বতের ঐতিহ্য?

জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও ওষুধের ওপর কর কত?
এই ছাড়ের পর ওষুধ বা ওষুধগুলোর ওপর সাধারণত ১০ শতাংশ মৌলিক শুল্ক থাকবে। আর, জীবন রক্ষাকারী কিছু ওষুধ বা টিকার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। আর, কিছু ক্ষেত্রে কোনও ছাড়ই দেওয়া হবে না। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তার বৈঠকে, জিএসটি কাউন্সিল বেশ কয়েকটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ওপর করের হার কমিয়েছিল। মেরুদণ্ডের পেশীর অ্যাট্রোফির চিকিত্সায় ব্যবহৃত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ জোলজেনসমা এবং ভিল্টেপসো ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আমদানি করার সময় জিএসটি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে কিট্রুদার জন্য জিএসটির হার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল।

Modi Government medicine patients with Symtomps
Advertisment