Wolves attacks on humans: মার্চ মাস থেকে, উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলায় নেকড়েদের আক্রমণ কমপক্ষে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যেই আরও দুটি মৃত্যুর পিছনে নেকড়েরা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এই সময়ের মধ্যে নেকড়েদের আক্রমণে অন্তত ৩৪ জন আহত হয়েছেন। রাজ্য বন দফতর এই হামলার জেরে চারটি নেকড়েকে ধরেছে। অন্তত আরও দুটি নেকড়েকে ধরতে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়েছে। ওই দুটি নেকড়েও মানুষখেকো বলেই আশঙ্কা করছেন বনকর্মীরা। সেগুলো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেই বন দফতরের আধিকারিকদের আশঙ্কা।
পুরাণ এবং সাহিত্যে নেকড়ের উল্লেখ
মহাভারতে মধ্যম পাণ্ডব ভীমের খিদের কথা বোঝাতে গিয়ে তাঁকে 'বৃকোদর'-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। সংস্কৃতে 'বৃক' শব্দের অর্থ হল নেকড়ে। আর, 'উদর' শব্দের অর্থ হল পেট। অর্থাৎ, যাঁর নেকড়ের মত উদর বা পেট। অথবা, নেকড়ের মত খিদে। পশ্চিমী বিশ্বের লোককাহিনিতেও নেকড়ের কথা রয়েছে। সেই সব কাহিনিতে যুদ্ধে উন্মত্ত নেকড়ে এবং বিরাট আকারের হিংস্র নেকড়ের কল্পনা করা হয়েছে। এই সব কাহিনিগুলো গ্রিক দেবতা অ্যাপোলো ও রোমান দেবতা মার্সের সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি, রোমান কাহিনিতে আছে স্ত্রী নেকড়ে রোমের পৌরাণিক প্রতিষ্ঠাতা রোমুলাস এবং রেমাসকে লালনপালন করেছিল। আবার, রুডইয়া কিপলিংয়ের জঙ্গল বুক-এও নেকড়ের কথা আছে। যেখানে ভিলেন হল শের খান।
আরও পড়ুন- জাতিশুমারি নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত সংঘের কেরল বৈঠকে! এবার অবস্থান বদলাবে বিজেপিও?
ভারতে নেকড়ের ইতিহাস
নেকড়েরা ভারতে দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। ভারতে তাদের নেকড়ে বাঘ বলে ডাকা হয়। ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বেঙ্গল আর্মির ক্যাপ্টেন বি রজার্স লিখে গিয়েছেন যে ১৮৬৬ সালে দক্ষিণবঙ্গে নেকড়ের আক্রমণে ৪,২৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একদশক পর, ১৮৭৫ সালে উত্তরভারতে নেকড়ের আক্রমণে ১,০১৮ জন মারা গিয়েছিলেন। এমনটাই লিখে গিয়েছেন সার্জেন জেনারেল জোসেফ ফেরার। বাংলার পাশাপাশি নেকড়ের আক্রমণে পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট এবং দাক্ষিণাত্যের মালভূমিতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এরপরই সরকারি নির্দেশে আনুমানিক ১ লক্ষ নেকড়েকে হত্যা করা হয়েছিল। যার বেশিরভাগই করা হয়েছিল উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ এবং আওধ (পরে ইউনাইটেড প্রদেশে) অর্থাৎ বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ। এই হত্যা করা হয়েছিল ১৮৭১ থেকে ১৯১৬ সালের মধ্যে। সুতরাং, ভারতে মানুষের ওপর নেকড়ের আক্রমণ নতুন কিছু না। তবে, ঘটনাগুলো সত্যিই নেকড়ের আক্রমণ কি না, তা খতিয়ে দেখছে বনদফতর এবং পুলিশ।