India rain: ভারতে এবছর ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। ফলে জলাধারগুলোয় জল যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। যেহেতু দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ২ জুলাই থেকেই গোটা দেশে ছেয়ে ফেলেছিল, তাই দেশের বেশিরভাগ ভৌগোলিক অঞ্চলে অবিরাম বা একটানা বৃষ্টিপাত হয়েছে এই সময়। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, দেশে ৮৩৬.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা চলতি মরশুমের জন্য ৮% উদ্বৃত্ত।
দেশের ১৫৫টি জলাধারে মোট ১৮০.৮৫২ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (BCM) জলধারণ ক্ষমতা আছে। তারমধ্যে, বর্তমানে জলের পরিমাণ হল- ১৫৩.৭৫৭ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (BCM)। যা মোট জলধারণ ক্ষমতার ৮৫%। গত বছর একই সময়ে মজুদ মোট জলের পরিমাণ ছিল ১১৯.৪৫১ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (BCM)। ১০ বছরের গড় ধরলে পরিমাণটা হল- ১৩০.৫৯৪ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (BCM)। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ১৫৫টি জলাধারের মধ্যে, ১৪১টিতে জলধারণ ক্ষমতা ৮০%-এর বেশি। মাত্র পাঁচটির জলধারণ ক্ষমতা ৫০% বা তার কম।
২০২৩ সালের সঙ্গে তুলনা
২০২৩ সালের চেয়ে বর্তমানে দেশের জলধারণের পরিমাণ ভালো। ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, বিহার, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, নাগাল্যান্ড, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, কেরল এবং তামিলনাড়ুতে মজুদ জলের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ভালো। গোয়া এবং তেলেঙ্গানায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। তবে, হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডে বর্তমানে ধারণ করা জলের পরিমাণ ২০২৩ সালের চেয়ে খারাপ।
নদীর অববাহিকা অনুযায়ী অবস্থা
প্রধান নদী অববাহিকায় বর্তমানে জলস্তর স্বাভাবিক বা তার বেশি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বরাক এবং সংলগ্ন অন্যান্য অঞ্চল (৯৮.৭২%), কৃষ্ণ (৯৪.৫৩%), কাবেরী (৯৩.৫৪%), নর্মদা (৯২.১৯%), গোদাবরী (৯১.৮৫%), তাপি (৮৫.৯৬%), গঙ্গা (৮৩.২৯%), মহানদী (৮৩.৪৮%) ), মাহি (৮৩.৯১%) এবং ব্রহ্মপুত্র (৬৬.৯৩%)।
আরও পড়ুন- বদলে গিয়েছেন মোদী? সংসদে চার কমিটির নেতৃত্বে কংগ্রেস
এবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। তার জন্যই জল প্রচুর পরিমাণে মজুদ রয়েছে। গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র, উভয় জায়গাতেই এই মরশুমে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে গুজরাট ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছিল। কচ্ছের মরুভূমিতেও বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ ভারতেও গত চার মাসে প্রচুর এবং ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমনকী তামিলনাড়ু, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তাদের আশেপাশের এলাকা- যেখানে দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষা থেকে খুব বেশি বৃষ্টিপাত হয় না, সেখানেও চলতি মরশুমে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। যাতে বাঁধের জল বেড়েছে। কর্ণাটকের জলাধারগুলো গ্রীষ্মে প্রায় শুকিয়ে গিয়েছিল। এখন প্রায় পুরোপুরি ভর্তি। এমনিতে ভারতে শীতের সময় সাধারণত বৃষ্টি হয় না। তবে, জলবায়ু বদলাচ্ছে। তার রকমসকমও বদলে যাচ্ছে। ফলে, আগামী দিনেও যদি একটু ভালোমানের বৃষ্টি হয়, তবে বন্যার আশঙ্কা উপেক্ষা করা যাচ্ছে না।