Advertisment

বিশ্লেষণ: রাষ্ট্রসংঘে ভারত-পাকিস্তান বাগযুদ্ধের ইতিহাস

শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ভাষণের পর পাল্টা আসবে ইমরান খানের কাছ থেকে। গত পাঁচ বছরে ভারতীয় ও পাকিস্তানের নেতৃত্ব রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যে ভাষণ দিয়েছেন তার সংক্ষেপসার-

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India-Pak, UN

রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সারা দুনিয়ার প্রতিনিধিদের সামনে ভারত ও পাকিস্তান সাধারণত বাগযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, মূলত জম্মু কাশ্মীর ইস্যুতে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। এই দিনই মোদীর পর বক্তব্য রাখবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

Advertisment

২০১৪ সালের পর, এই প্রথমবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মোদী ভাষণ দিতে চলেছেন। এর পরের তিন বছর, অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সারা দুনিয়ার প্রতিনিধিদের সামনে ভারত ও পাকিস্তান সাধারণত বাগযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, মূলত জম্মু কাশ্মীর ইস্যুতে।

পাঁচ বছর আগে, ২০১৪ সালে, সময়টা ছিল আশার। মোদী সকলকে চমকে দিয়ে তাঁর প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, শরিফ সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন শান্তির বারতা। সে বছর অগাস্ট মাসে ভারতে নিযুক্ত পাক হাই কমিশনার কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর মোদী সরকার বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক বাতিল করে দিয়েছিল বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও আশা ছিল রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন দু দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হবে।

কিন্তু সাধারণ অধিবেশনে শরিফ কাশ্মীরে মৌলিক অধিকার হরণ ও সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলার পর দু দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আর হয়নি।

পাঁচ বছর পর মোদী ফিরেছেন বিপুলতর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে, ৩৭০ ধারা বাতিল হয়েছে, পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়ে যাবার সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে, এবং দু দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক বিপন্নতর হয়েছে।

আরও পড়ুন, “সিমলা চুক্তি বুঝতেই পারেননি রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব”

ইমরান খান এখন ভারত ও মোদীকে নিয়ে আগুনঝরা ভাষণ দিয়ে চলেছেন। এ সময়ে দাঁড়িয়ে তিনি যে তাঁর বক্তব্যের লক্ষ্য কাশ্মীরেই স্থির করবেন এবং উপত্যকায় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কথা বলবেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত।

প্রধানমন্ত্রীরা যেহেতু বিদেশমন্ত্রীদের আগে ভাষণ দিয়ে থাকেন, সে কারণে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভারত ও পাকিস্তান কে আগে বলবে তা নির্দিষ্ট থাকে না।

গত পাঁচ বছরে ভারতীয় ও পাকিস্তানের নেতৃত্ব রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যে ভাষণ দিয়েছে তার সংক্ষেপসার-

২০১৪

মোদী- "প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বই আমাদের প্রথম লক্ষ্য"

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন ভারত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য প্রস্তুত। তবে একই সঙ্গে তিনি পাকিস্তানকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেন।
মোদী বলেছিলেন, "ভারত নিজের উন্নয়নের জন্যই শান্তিপূর্ণ ও সুস্থিতির বাতাবরণ চায়। একটি দেশের ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকে তার প্রতিবেশীরাও। সে কারণেই আমার সরকার দেশের প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার বিষয়টিকে চূড়ান্ত অগ্রাধিকার দিয়েছে।""এর মধ্যে পাকিস্তানও রয়েছে। আমাদের মধ্যেকার বন্ধুত্ব ও সমন্বয়কে বাড়াতে আমি পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, যে আলোচনা হবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, সন্ত্রাসবাদের ছায়াহীন। তবে পাকিস্তানকেও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির জন্য দায়িত্ব নিতে হবে।""এই মঞ্চে ইস্যু উত্থাপন করার মাধ্যমে দু দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক উন্নত হবে না। তার বদলে আজ আমাদের ভাবা উচিত জম্মু কাশ্মীরের বন্যাদুর্গতদের কথা। ভারতে আমরা বিশাল ভাবে বন্যা ত্রাণের কাজ শুরু করেছি, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরেও আমরা সহায়তার হাত বাড়াতে চেয়েছি।"

নওয়াজ শরিফ- "কাশ্মীর ইস্যুর উপর আমরা পর্দা টাঙাতে পারি না"
"কাশ্মীরিদের বহু প্রজন্ম কর্মহীনতার মধ্যে বাস করছেন, সঙ্গে রয়েছে হিংসা এবং মৌলিক অধিকার হরণ। বিশেষত কাশ্মীরি মহিলারা চূড়ান্ত দুর্ভোগ ও লাঞ্ছনার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।""দশকের পর দশক ধরে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে রাষ্ট্রসংঘের তত্ত্বাবধানে বা লাহোর চুক্তি মেনে দ্বিপাক্ষাক আলোচনার মাধ্যমে। জম্মু কাশ্মীর নিয়ে আসল সমস্যা সমাধান করতে হবে। এ দায়িত্ব আন্তর্জাতিক দুনিয়ার। আমরা কাশ্মীর ইস্যুর উপর পর্দা টাঙিয়ে দিতে পারি না।" ২০১৫

 সুষমা স্বরাজ- "সন্ত্রাসবাদ ছাড়ুন, আলোচনায় বসুন"

২০১৫ সালের মার্চ মাসে জম্মু-পাঠানকোট সড়কের উপর রাজাবাগ থানায় এবং সাম্বার কাছ মহেশ্বরে সেনা ছাউনিতে পরপর হামলা হয়। এর পর জুলাই মাসে পাঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলায় দিনানগর থানায় হামলা হয়।

রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শরিফ একটি চতুর্মুখী শান্তি উদ্যোগের কথা বলেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, চারটি নয়, একটি বিষয়ই এ প্রসঙ্গে প্রয়োজন- তা হল ভারতে সন্ত্রাস চালানো বন্ধ করুক পাকিস্তান।

সুষমা বলেন, "সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে আমি বলতে চাই যে আমরা সকলেই জানি, এ ধরনের হামলা হচ্ছে ভারতের সুস্থিতি বিনষ্ট করার জন্য এবং ভারতের অন্তর্ভুক্ত জম্মু কাশ্মীরে পাকিস্তানের বেআইনি দখলদারির জন্য।"

"এ ব্যাপারে আমাদের ভাবনা স্পষ্ট করে বলার জন্য এই মঞ্চ বেছে নিচ্ছি। ভারতের কাছে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। কিন্তু আলোচনা ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। গতকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, যাকে তিনি চতুর্মুখী শান্তি উদ্যোগ বলে বর্ণনা করেছেন। আমাদের চতুর্মুখ দরকার নেই আমাদের দরকার শুধু একটিই- সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করুন এবং বসে কথা বলুন।"

আরও পড়ুন, চন্দ্রযান ২: মিশন কি সত্যিই ব্যর্থ?

 শরিফ- "কাশ্মীরিদের তিন প্রজন্ম প্রতিশ্রুতিভঙ্গ দেখেছে, দেখেছে বর্বর নিপীড়ন"

শরিফ বলেন, "১৯৪৭ থেকে কাশ্মীরের সমস্যা অসমাধিত থেকেছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব মানা হয়নি। তিন প্রজন্ম ধরে কাশ্মীরিরা দেখেছেন প্রতিশ্রতিভঙ্গ ও বর্বর নিপীড়ন। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য লড়াই করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন ১ লক্ষের বেশি মানুষ। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘ লাগাতার ভাবে ব্যর্থ থেকেছে।"

"আমি যখন ২০১৩ সালের জুন মাসে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসি, তখন আমার অন্যতম লক্ষ্য ছিল ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা... আজ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন বেড়ে চলেছে, যার ফলে নারী ও শিশু সহ সাধারণ মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।"

২০১৬

সুষমা স্বরাজ- "বালোচিস্তানে ক্ষমতার গুরুতর অপব্যবহার চলছে"

এ বছরই পাঠানকোটে সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং উরি হামলার ঘটনা ঘটেছিল।

এ বছরের জুলাই মাসে হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর বিষয় পাকিস্তান উত্থাপন করার পর স্বরাজ তার উত্তর দেন বালোচিস্তানে পাকিস্তানের ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে।

"আমাদের মধ্যে এমন রাষ্ট্র রয়েছে যারা সন্ত্রাসবাদের ভাষায় কথা বলে, তাকে পোষণ করে, তাকে রফতানি করে। এদের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া। আমাদের এই দেশগুলিকে চিহ্নিত করা উচিত, তাদের কাছ থেকে জবাব চাওয়া উচিত। ২১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই মঞ্চে আমার দেশের সম্পর্কে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলেছেন। আমি শুধু বলতে চাই যাঁরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলছেন, তাঁদের নিজেদের দিকে তাকানো উচিত এবং বালোচিস্তান সহ নিজেদের দেশে ক্ষমতার গুরুতর অপব্যবহারের ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। বালোচ জনগণের উপর যে বর্বরতা চলছে তা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের চূড়ান্ত রূপ।"

 শরিফ- "ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ রাষ্ট্রসংঘকে দেব"

"ভারতের বেআইনি দখলদারির বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের নতুন প্রজন্ম জেগে উঠছে- তারা দখলদারদের হাত থেকে স্বাধীনতা চাইছে।" শরিফ বলেন, "বুরহান ওয়ানি, যে তরুণ নেতা ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে মারা গিয়েছে সে উঠে এসেছিল কাশ্মীরিদের লড়াইয়ের সাম্প্রতিক প্রতীক হিসেবে। এই শান্তিপূর্ণ স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাশ্মীরিরা- পুরুষ নারী, তরুণ বৃদ্ধ নির্বিশেষে, এঁদের নিজেদের বিশ্বাসের অস্ত্রে সজ্জিত... এঁদের হৃদয়ে স্বাধীনতার ক্ষুধা... আমি জানাতে চাই যে অধিকৃত জম্মু কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্যপ্রমাণের ডসিয়ের রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবকে পাকিস্তান দেবে।"

আরও পড়ুন, আসাম এনআরসি: ১৯ লক্ষ নাম বাদ পড়ায় কেন খুশি নয় বিজেপি-আসু

২০১৭

সুষমা স্বরাজ- "আমরা স্কলার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র বানাই। আপনারা সন্ত্রাসবাদী বানান।"

এ বছরেই কুলভূষণ যাদবকে পাকিস্তানের আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল এবং ভারত আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হয়।

নিজের কঠোরতম ভাষণের একটি ছিল সুষমা স্বরাজের এই ভাষণ। তিনি বলেন, "বৃহস্পতিবার এই মঞ্চে পাক প্রধানমন্ত্রী শহিদ খারান আব্বাসি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে অনেকটা সময় নষ্ট করেছেন। উনি ভারতকে রাষ্ট্র স্পনসর্ড সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত করেছেন, অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার লঙ্ঘনে। যারা শুনছিলেন, তারা নিশ্চিত ভাবেই বলছিলেন দেখ কে বলছে?"

"ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল কয়েকঘণ্টা আগে-পরে। কেন আজ ভারত পৃথিবীতে তথ্য প্রযুক্তির সুপারপাওয়ার বলে পরিচিত আর পাকিস্তানকে দুনিয়া চেনে সন্ত্রাসের রফতানিকারক হিসেবে। কেন?  আমরা স্কলার,ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র বানাই। আপনারা কী বানান? আপনারা সন্ত্রাসবাদী তৈরি করেন। ডাক্তাররা মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচান, সন্ত্রাসবাদীরা মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।"

শাহিদ খাকান আব্বাসি- "রাষ্ট্রসংঘের উচিত কাশ্মীরে তদন্তদল পাঠানো"

প্রধানমন্ত্রী আব্বাসি কাশ্মীরিদের নায়কোচিত যুদ্ধের কথা বলেন, বলেন ভারতের নিপীড়ক শাসকদের হাত থেকে তাঁদের মুক্তি ও কাশ্মীরিদের উপর ভারতের ব্যাপক বলপ্রয়োগের কথা। "পাকিস্তান দাবি করছে কাশ্মীরে ভারতের অপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্ত হোক। আমরা রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবকে এবং মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারকে অনুরোধ করছি একটি তদন্ত কমিশন বসিয়ে দেখা হোক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারত কতটা মানবাধিকার লক্ষ্ঘন করে চলেছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের উচিত কাশ্মীরের জন্য বিশেষ রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা।"

এ বছরেই রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের প্রতিনিধি মাবেহা লোধি গাজার এক আহত মেয়ের ছবি দেখিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেন যে ওই মেয়েটি কাশ্মীরে পেলেট গানের শিকার।

আরও পড়ুন, রোমিলা থাপার বনাম জেএনইউ: প্রফেসর এমিরেটাস কাকে বলে?

২০১৮

সুষমা স্বরাজ- "পাকিস্তান হত্যাকারীদের মহিমান্বিত করে"

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরান খান অভিষিক্ত হবার পরেও দু দেশের মধ্যে বাগযুদ্ধ চলতে থাকে এবং একবার স্থির হওয়ার পরেও দু দেশের মধ্যে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক বাতিল হয়।

২০১৪ সালের পেশওয়ার স্কুল হামলায় ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি। তার উত্তরে সুষমা স্বরাজ বলেন, "আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে, আমরা শান্তি আলোচনা ভেস্তে দিয়েছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা বহুবার আলোচনা শুরু করেছি। যদি সে আলোচনা বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে তা হয়েছে পাকিস্তানের ব্যবহারে।"

"পাকিস্তান বারবার ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। সন্ত্রাসবাদীর চেয়ে বেশি মানবাধিকারকে লঙ্ঘন করে! যারা যুদ্ধের আবডালে নিরীহ মানুষের জীবন নেয়, তাদের রক্ষকরা অমানবিক ব্যবহারের রক্ষক, মানবাধিকারের নয়। পাকিস্তান হত্যাকারীদের মহিমান্বিত করে, ওরা নিরীহ মানুষের রক্ত দেখতে পায় না।"

পাক বিদেশমন্ত্রী কুরেশি- "সমঝোতা হামলা, পেশোয়ার হামলার কথা ভুলব না"

কুরেশি বলেন "পাকিস্তান কখনও ২০১৪ সালে পেশোয়ারে স্কুল হামলায় ১৫০ জন শিশুর মৃত্যু, ২০১৮ সালে ভারতীয় সন্ত্রাসবাদীদের মদতে মাস্তুং হামলা এবং ভারতের মাটিতে নিরীহ পাকিস্তানি বহনকারী সমঝোতা এক্সপ্রেস হামলার কথা ভুলবে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানের হেফাজতে একজন ভারতীয় নৌবাহিনীর আধিকারিক রয়েছেন, যিনি প্রমাণাদিসহ স্বীকার করে নিয়েছেন যে তাঁর দেশের সরকারের নির্দেশে, সরকারের অর্থে, সরকারের পরিকল্পনা মোতবেক পাকিস্তানে সন্ত্রাস ও হিংসা চালিয়েছেন তিনি।"

কুরেশি একই সঙ্গে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট তুলে ধরেন, যা ভারত খারিজ করে দিয়েছিল। "রাষ্ট্র সংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দফতর সম্প্রতি যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, পাকিস্তান তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। কাশ্মীরি জনসাধারণের উপর যে নিপীড়ন নামিয়ে আনা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদের দোহাই দিয়ে তাকে আর আড়াল করা যাবে না।"

Read the Full Story in English

PM Narendra Modi pakistan Sushma Swaraj United Nations
Advertisment