Advertisment

করোনার ন্যাজাল ভ্যাকসিনে সাফল্য, কী ভাবে?

Inhaled Covid-19 vaccine Explained: ইন্ট্রান্যাজাল এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে প্রাণী থেকে প্রাণীতে করোনা ছড়ানো প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ইউনিভার্সিটি অফ আইওয়া এবং ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়ার গবেষকদের একটি দল ইঁদুরের উপর এই জাতীয় গবেষণা চালিয়ে সাফল্য পেয়েছে।

এত দিন করোনার প্রতিষেধক সুচ ফুটিয়ে ‌দেওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এবার নাকের মাধ্যমে প্রতিষেধক নিয়েও চর্চা চলুক। ন্যাজাল স্প্রে ভ্যাকসিনেশনের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি আমরা। এমন কথা বলাটা একেবারেই অনুচিত হবে না। কারণ, ইউনিভার্সিটি অফ আইওয়া এবং ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়ার গবেষকদের একটি দল ইঁদুরের উপর এই জাতীয় গবেষণা চালিয়ে সাফল্য পেয়েছে।

Advertisment

দেখা গিয়েছে, ইন্ট্রান্যাজাল এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে প্রাণী থেকে প্রাণীতে করোনা ছড়ানো প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে। এবং ভ্যাকসিন দেওয়া কোন‌ও ইঁদুরের কোভিড হচ্ছে না। এই ভ্যাকসিনের আরও গুণ আছে। যা পঞ্চমুখে না বললে চলছে না। যেমন এর এক ডোজেই কেল্লা ফতে। ফলে এখন এই যে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় কবে পাবো, আদৌ পাবো কি না, হাজার আলোচনা তর্ক-বিতর্ক, দ্বিতীয় ডোজের সময় পিছানো নিয়েও অনুযোগ-সমালোচনা-টকশো।

সে সবে সেলোটেপ সেঁটে দেবে এই ভ্যাকসিন। শুধু তাই নয়, এটি রেফ্রিজারেটরে রেখে দেওয়া যাবে অন্তত তিন মাস। আর ভ্যাকসিন দিতে গেলে: ওরে বাবা কী ভয় করছে রে, ডাক্তারবাবু লাগবে না তো? ইনজেকশনে আমার জানেন তো খুব আতঙ্ক, মরে যাবো না তো! এই ছবিটা নাক-ভ্যাকসিন বাজারে এলে গায়েব হয়ে যাবে, এটাই বা কম কী!

আরও পড়ুন জিকা ভাইরাস ছড়াচ্ছে, কতটা ভয়ের কারণ এই অসুখ?

ভ্যাকসিন তৈরি কীভাবে?

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নির্বিষ প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বা পিআইভি ৫-এর স্পাইক প্রোটিনের বদল ঘটিয়ে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের চেহারা দেওয়া হয়েছে। যাতে এটি শরীরে ঢুকলে করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে রক্তে। কী ভাবে তা সম্ভব হবে? করোনা ভাইরাসের ছবি যদি দেখেন, তাহলে দেখতে পাবেন, ভাইরাসটির চার দিকে খোঁচাখোঁচা কতগুলো বস্তু রয়েছে। অনেকটা ক্রাউন বা করোনা মানে মুকুটের মতো দেখতে (তাই নাম হয়েছে করোনাভাইরাস)।

করোনা ছড়ানোর কাজে স্পাইক প্রোটিনের বড় ভূমিকা রয়েছে। এখন ওই করোনা বা সার্স কোভ-টু-র স্পাইক প্রোটিনওয়ালা নিরীহ পিআইভি ফাইভ শরীরে ঢুকলে শরীর স্বাভাবিক নিয়মে তার বিরুদ্ধে‌ প্রতিরোধ তৈরি করবে, তখন তৈরি হ‌ওয়া অ্যান্টিবডি ওই ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন চিনে রাখবে। এর পর করোনাভাইরাস শরীরে ঢুকলে, যেহেতু করোনা প্রতিরক্ষায় আগে থেকেই প্রস্তুত শরীর, কারণ করোনার স্পাইক প্রোটিনের জ্ঞান রয়েছে অ্যান্টিবডির। সার্স কোভ-টু দাঁতনখ বার করার আগেই বা দেহে প্রবেশ করা মাত্রই প্রতিরক্ষা ক্ষমতার হাতে ভাইরাসটা বলি হয়ে যাবে। দেখা যাচ্ছে লোকালাইজড ইমিউন রেসপন্স বা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রতিরোধ শক্তি তৈরি করছে এই নব-আবিস্কৃত ন্যাজাল ভ্যাকসিন। কোষ ইমিউনড হয়ে উঠছে এর ফলে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভ্যাকসিন দেওয়া ইঁদুরগুলি করোনা সম্পূর্ণভাবে রুখে দিতে পারছে।

আরও পড়ুন কোভিডে উদাসীন বিভিন্ন দেশ, নতুন ভয়ে কাঁটা হু, কেন তাদের ধারাবাহিক সতর্কতা?

তা ছাড়া কোভিডের ক্ষেত্রে সবচেয়ে চিন্তার ব্যাপার হল-- এর সংক্রমণের প্রবল ক্ষমতা। বাজার চলতি ভ্যাকসিন দেওয়া কারওর যদি কোভিড হয়, তা হলে কোভিড ছড়ানো আটকানোর কোন‌ও প্রশ্ন নেই। আইওয়া এবং জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতিষেধক দেওয়ার ফলে আক্রান্ত ইঁদুর থেকে ভ্যাকসিন না-নেওয়া এবং করোনা না-হওয়া ইঁদুরের শরীরে কোভিড আটকানো যাচ্ছে। ‌

ভ্যাকসিনটি সবে মাত্র ইঁদুর-পরীক্ষা পেরিয়েছে। এখন‌ও অনেক অনেক দূর যেতে হবে। ধাপে ধাপে ট্রায়াল চলবে। হাজারো প্রশ্ন উঠবে। তর্ক বিতর্ক চলবে। সে সব পেরোতে পারলে তবে আমার আপনার শরীরে প্রবেশের ছাড়পত্র পাবে। আপাতত যে আশা দেখাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা, সত্যিই-- এক কথায় দুরন্ত।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Explained coronavirus
Advertisment