Advertisment

Explained: গাজায় ইজরায়েলের স্থলপথে অভিযান! কোন বিরাট আশঙ্কায় শিউড়ে উঠছেন বিশেষজ্ঞরা?

হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েল স্থল হামলার রাস্তায় হাঁটছে। তাদের কাছে কোনও সহজ বিকল্প খোলা নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Israel invades gaza

শনিবার (১৪ অক্টোবর, ২০২৩), গাজা উপত্যকার সীমান্তের কাছে ইরেজের বাইরে ইজরায়েলি ট্যাংক। ইজরায়েল একটি স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাস্তুচ্যুত প্যালেস্তিনীয়রা খাদ্য এবং আশ্রয়ের খোঁজ চালাচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘ সতর্ক করেছে যে গাজায় পরিষ্কার জল ফুরিয়ে যাচ্ছে৷ (সের্গেই পোনোমারেভ/দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস)

ইজরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী প্যালেস্তাইনের গাজা ভূখণ্ডের উত্তরে বসবাসকারী ১১ লক্ষ মানুষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরে যেতে বলেছে। এই ভূখণ্ডের প্রান্তে কয়েক হাজার সৈন্য, ট্যাংক এবং গোলন্দাজ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইজরায়েল কেন গাজা আক্রমণ করতে চায়? অভিযানের প্রস্তুতি কেমন ভাবে চলছে? অভিযানের প্রতিকূলতাই বা কী? এর কী প্রভাব পড়তে পারে? তা, দেখে নেওয়া যাক।

Advertisment
Israel invasion gaza
২০১৪ সালে আইডিএফের প্যারাট্রুপারস ব্রিগেড গাজা স্ট্রিপে হামলা চালিয়ে হামাসের নেটওয়ার্ক টানেল খুঁজে তা ধ্বংস করে। (উইকিমিডিয়া কমন্স)

লক্ষ্য: হামাসকে 'চূর্ণ' করার জন্য অভিযান
ইজরায়েলের এই অভিযানের লক্ষ্য বেশ স্পষ্ট। প্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বুধবার (১১ অক্টোবর) এক টেলিভিশন ভাষণে হামাসকে 'ধ্বংস ও চূর্ণ' করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'হামাসের প্রত্যেক সদস্যই মৃত।' মেজর জেনারেল আমোস গিলিয়েড, ৩০ বছর ধরে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (আইডিএফ) দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিবিসিকে বলেছেন যে এই আক্রমণ ইজরায়েলের সীমানার বাইরে গাজার মধ্যে ঘটতে পারে। ২০০৫ সালে গাজা ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার পর, ইজরায়েল দু'বার গাজায় স্থল অভিযান চালিয়েছে। তার মধ্যে প্রথমটি ২০০৮ সালে এবং দ্বিতীয়টি ২০১৪ সালে চালিয়েছিল। গিলিয়েড বলেন, 'আমাদের আরও অনেক বড় কিছু করতে হবে।' তিনি যোগ করেছেন যে একটি বড় আকারের সামরিক পদক্ষেপ এই অঞ্চলে হিজবুল্লাহ এবং ইরানের উত্থানকেও বাধা দেবে।

প্রস্তুতি: কয়েক হাজার সৈন্য প্রস্তুত, গাজায় সরবরাহ বন্ধ
যেদিন (অক্টোবর ৭) হামাস আক্রমণ করেছে, সেদিন থেকে ইজরায়েল গাজায় অবিরাম বোমাবর্ষণ করেছে। জঙ্গি গোষ্ঠীর আস্তানা এবং অন্যান্য কাঠামোয় আঘাত করেছে। শুক্রবার পর্যন্ত গাজায় ছয় হাজারের বেশি বোমা ফেলেছে। একটি তুলনা হিসেবে, ২০১১ সালে লিবিয়ায় পুরো যুদ্ধের সময় ন্যাটো জোট ৭,৭০০টি বোমা ফেলেছিল। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। এপর্যন্ত বিমান হামলায় অন্তত ২,২১৫ প্যালেস্তিনীয় নিহত হয়েছেন এবং ৮,৭১৪ জন আহত হয়েছেন। বোমাবর্ষণ ছাড়াও, ইজরায়েল প্যালেস্তাইন সীমান্তে ৩৬০,০০০ জন সৈন্য মোতায়েন করেছে। যা তার, মোট জনসংখ্যার ৩ শতাংশেরও বেশি। হামাসকে যাতে সমুদ্রপথে অস্ত্র সরবরাহ করা না-যায়, সেটা নিশ্চিত করতে ইজরায়েলের নৌবাহিনী একটি সম্পূর্ণ নৌ-অবরোধ কার্যকর করেছে। উপরন্তু, ইজরায়েল গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং জল সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে, জঙ্গি গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করা কঠিন হয়।

Israel invasion gaza
শনিবার, ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর, গাজা উপত্যকার দক্ষিণে দেইর আল-বালাহতে ইজরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনের পাশে প্যালেস্তিনীয়রা। (এপি ছবি/হাতেম মুসা)

গাজাকে দুই ভাগে ভাগ করে অভিযান
দ্য ইকোনমিস্টের ডেপুটি এডিটর শশাঙ্ক জোশীর মতে, যদি বড় আকারের আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়, ট্যাংক-সহ সাঁজোয়া ব্রিগেড সম্ভবত গাজাকে দুই ভাগে ভাগ করবে। ইজরায়েলি সেনার আরও দুই থেকে তিনটি ব্রিগেড সম্ভবত খান ইউনিস এবং রাফাহ আক্রমণ করতে পারে। এই দুই শহরই দক্ষিণে অবস্থিত। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে হামাসের নেতাদের পরিকাঠামো ধ্বংস করা। আকাশপথে তা করা কঠিন। কারণ, তাতে বড় আকারে সাধারণ নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা ঘটবে। আরেকটি লক্ষ্য হবে, যে টানেল দিয়ে হামাসের জঙ্গিরা পালায়, তা ধ্বংস করা। আর, এসবের ফলে অনেক নিরীহ নাগরিকেরও মৃত্যু ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন- হামাসের সঙ্গে ধুন্ধুমার যুদ্ধ, কীভাবে তৈরি হয়েছিল ইজরায়েল?

israel palestine war Israel Israel-Palestine clash
Advertisment