বিশ্বকাপ ফুটবল ম্যাচে অবাক-কাণ্ড ঘটালেন ইরানের ফুটবলাররা। ম্যাচ শুরুর আগে স্টেডিয়ামে বাজবে জাতীয় সংগীত। আর, সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে গলা মেলাবেন ইরানের ফুটবলাররা। এটাই রীতি, সব দলই করে। কিন্তু, দেখা গেল, ইরানের ফুটবলাররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন। আসলে ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একমাস ধরে প্রতিবাদ চলছে। যা গোটা ইরানকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তারই প্রতিবাদে এভাবে মৌন থাকা। এবারের বিশ্বকাপে এটাই ছিল ইরানের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।
ম্যাচের আগে প্রতিবাদ
ম্যাচে ইংল্যান্ড ৬-২ গোলে জয়ী হয়েছে। যা কার্যত যেন ইরান দলেরই বার্তা হয়ে উঠল। শুধু মাঠেই নয়। গ্যালারিতেও দেখা গেল একই পরিস্থিতি। জাতীয় সংগীত বাজছে। আর, ইরানের দর্শকরা ছিঃ! ছিঃ! করছেন। যাঁর হত্যার ঘটনায় ইরানজুড়ে মানবাধিকার ইস্যুতে এতবড় প্রতিবাদ চলছে, তিনি হলেন মাহসা আমিনি। সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, ইরানের ম্যাচ শুরুর আগে কিছু দর্শককে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের বাইরে, 'তাঁর নাম বলুন, মাহসা আমিনি' স্লোগান দিতেও দেখা গিয়েছে।
বিশ্বকাপে প্রতিবাদ কেন?
গত সেপ্টেম্বরে ২২ বছরের মাহসা আমিনি ইরানে পুলিশের হেফাজতে প্রাণ হারিয়েছেন। তার মৃত্যুর পরই ইরানজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে। আমিনির দোষ ছিল, তিনি ঠিকমতো বোরখা পরেননি। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লব ঘটে। তার পর কঠোর ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই ঘটনার পর আমিনির মৃত্যুতেই সবচেয়ে বড় ধরনের প্রতিবাদের সাক্ষী হল আরব রাষ্ট্রটি। পালটা, বিক্ষোভ রুখতে ব্যাপক দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন- জামাই তোরেসকে দলে না রাখলেই মাথা কাটবে মেয়ে! বিশ্বকাপে এসে প্রবল ‘দুশ্চিন্তায়’ শ্বশুর এনরিকে
পুলিশের অত্যাচার
একাধিক মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ করেছে, কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েকশো মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে অসংখ্য বিক্ষোভকারীর বিচার হয়েছে। তার মধ্যে ছ'জন বিক্ষোভকারীকে প্রাণদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। এমনকী, এই ম্যাচ যখন হয়েছে, সেই সময়ও ইরানের পুলিশ পিরানশাহর এবং জাভানরুদের মত কুর্দিশ প্রধান শহরগুলোয় বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে।
Read full story in English