/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2024/02/Miri-Regev-Israel.jpg)
Miri Regev-Israel: ইজরায়েলের পরিবহণমন্ত্রী মিরি রেগেভ। (ছবি- পিটিআই)
Israel-Red Sea & Mundra port: প্যালেস্তাইন ইস্যুতে আরবভূমিতে রক্তপাত আরও ছড়িয়ে পড়েছে। হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইজরায়েলি জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালাচ্ছে। তার জেরে ইজরায়েলের পরিবহণমন্ত্রী মিরি রেগেভ সম্প্রতি গৌতম আদানির নিয়ন্ত্রণে থাকা গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরকে সংযুক্ত করে বাণিজ্যের একটি বিকল্প পথের কথা ঘোষণা করেছেন। এই পথে বাণিজ্য কীভাবে চলবে, কীভাবে এতে ইজরায়েলের বাণিজ্য লাভবান হবে, সম্ভাব্য ক্ষতিগুলোই বা কী, তা নিয়ে এখন চলছে বিচার-বিশ্লেষণ।
- - বাণিজ্যের নতুন পথ ইজরায়েলের।
- - গৌতম আদানির মুন্দ্রা বন্দরের মাধ্যমে বাণিজ্যের পরিকল্পনা।
- - হুতি বিদ্রোহীদের জ্বালায় লোহিত সাগর এড়াচ্ছে নেতানিয়াহুর দেশ।
লোহিত সাগরে সমস্যাটা কোথায়?
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইজরায়েলের জাহাজগুলোর ওপর হামলা চালাচ্ছে। গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইজরায়েলের ক্ষতি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। গাজায় ইজরায়েলের অভিযান এখনও বন্ধ হয়নি। তার জেরে হুতি বিদ্রোহীদের এই আঘাত। কিন্তু, ইজরায়েল যেহুতু বিশ্ব বাণিজ্যের এক বড় শক্তি, তাই হুতি বিদ্রোহীদের ইজরায়েলি জাহাজে হামলা বিশ্বজোড়া বাণিজ্যকে ব্যাহত করছে। কারণ, বিশ্বে বাণিজ্যের ১২ শতাংশই লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে হয়। লোহিত সাগর, সুয়েজ খালের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরকে ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এই পরিস্থিতিতে লোহিত সাগর অঞ্চলের বিপদ এড়াতে, ইজরায়েলের জাহাজগুলো আফ্রিকার দক্ষিণের রাস্তা ধরছে। আর, কেপ অফ গুড হোপ অতিক্রম করছে। যা খরচ এবং সময় বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে একটি শিল্পচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যা অনুযায়ী, নাবিকরা চাইলে আর লোহিত সাগরের ওপর দিয়ে জাহাজ নিয়ে না-ও যেতে পারেন।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/08/Modi_Adani.jpg)
নতুন রুট কী?
এই পরিস্থিতিতে, ইজরায়েল লোহিত সাগরকে এড়িয়ে বাণিজ্যপথ খুঁজছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ইজরায়েলের পরিবহণমন্ত্রী রেগেভ এক্স-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যাতে তিনি মুন্দ্রা বন্দরকে যুক্ত করে তাঁর দেশের নতুন বাণিজ্যপথের বর্ণনা দিয়েছেন। এই পথে ইজরায়েলের পণ্য, মুন্দ্রা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাইয়ের জেবেল আলি বন্দর হয়ে স্থলপথে সৌদি আরব এবং জর্ডানের মধ্যে দিয়ে ইজরায়েলে যাবে। স্থল পরিবহণের একটি বড় অংশই চলবে ট্রাকের মাধ্যমে। ইজরায়েলি এবং আরব মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, এই ট্রাকগুলো দুটি শিপিং কোম্পানি- ইজরায়েলের ট্রাকনেট এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পিওরট্রান্সের। সংস্থাগুলোই তাদের ট্রাকের নিরাপত্তা দেখভালের ব্যবস্থা করবে।
המלחמה מציבה בפנינו אתגרים רבים - אחד הפתרונות לאחד האתגרים הוא ציר עוקף חות׳ים.@israelinMumbai@PMOIndiapic.twitter.com/cUZdxQLTvz
— מירי רגב (@regev_miri) February 13, 2024
পরিকল্পনা প্রকাশ
এই প্রসঙ্গে প্রকাশিত এক ভিডিওয় রেগেভ বলেছেন, 'আমরা এখন উত্তরে ভারতের বৃহত্তম বন্দর মুন্দ্রায় আছি। যেখান থেকে পণ্য কন্টেনারে করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে রফতানি করা হবে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে তা স্থলপথে যাবে ইজরায়েলে। যুদ্ধ আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে। ইজরায়েলে পণ্য আমদানিতে বাধা দিতে চাইছে। বিদ্রোহীদের সুবিধা হয়েছে, কারণ ইজরায়েল একটি উপকূলীয় রাষ্ট্র। এখানে বেশিরভাগ পণ্য সমুদ্রপথে আসে। এবার থেকে আমদানি করা পণ্য মুন্দ্রা থেকে সমুদ্রের মাধ্যমে সৌদি আরব এব জর্ডানের বন্দরে যাবে। সেখান থেকে ট্রাক বা ট্রেনে চেপে পৌঁছবে ইজরায়েলে।' গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ভারত থেকে আরবভূম হয়ে ইউরোপে অর্থনৈতিক করিডোর (আইএমইসি) তৈরির চেষ্টা চলছে। সেখানেও এই ধরনের রুট ব্যবহার করা হতে পারে। আইএমইসি প্রকল্পের লক্ষ্য, মধ্যপ্রাচ্যের মাধ্যমে ভারতকে ইউরোপের সঙ্গে সংযুক্ত করা। তবে, সেই নতুন পথের চূড়ান্ত রূপটি এখনও স্থির হয়নি। শুধু তাই নয়, গাজায় যুদ্ধের জেরে তা আরও বিলম্বিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন- অশান্ত সন্দেশখালি! শুধুই তৃণমূল-বিজেপি কোন্দল, নাকি আসলটা আরও বড় কিছু?
নতুন রুটের সুবিধা কী, খরচই বা কেমন?
এই স্থলপথের কথা হঠাৎ করে ভাবা হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই তা ভাবার কাজ চলছিল। লন্ডন ভিত্তিক আরব সংবাদমাধ্যম, 'আল-আরবি আল-জাদেদ' অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ নেহাদ ইসমাইলকে উদ্ধৃত করে বলেছে, আব্রাহাম চুক্তির সময় (ইজরায়েল এবং কিছু আরব রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে হওয়া চুক্তি) স্থল করিডোরের প্রস্তাব প্রথমবার উঠেছিল। সেটা ২০২০ সালে। স্থলপথটি ইজরায়েলে ভ্রমণের সময় এবং খরচ কমিয়ে দেবে। পরিবহণ ফি এবং শুল্কের বিচারে সৌদি আরব এবং জর্ডানের রাজস্ব বাড়াবে। যদিও, ট্রাকে একটি জাহাজের তুলনায় অনেক কম পণ্য বাহিত হবে। ফলে, বাণিজ্যের পরিমাণ কমবে। পাশাপাশি, এই পথে বাণিজ্য ততক্ষণই চলতে পারে, যতক্ষণ ইজরায়েল দুই আরব দেশ সৌদি আরব এবং জর্ডানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে যাবে।