Jamaat-e-Islami Bangladesh: জামাত-ই-ইসলামি বাংলাদেশ। এই সংগঠন বাংলাদেশের বৃহত্তম ইসলামিক সংগঠন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে জামাতকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। কারণ, তারা 'ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধিতা' করেছিল। ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধিতা কার্যত বাংলাদেশের সংবিধানেরই বিরোধিতা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বুধবার (২৮ আগস্ট) জামাতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ওই সংগঠনের সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসার পথ সুগম করেছে। শেখ হাসিনা সরকার জামাতকে 'জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী' সংগঠনের তকমা দিয়েছিল। তাদের দমন করেছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর সংঘটিত 'যুদ্ধাপরাধ'-এর জন্য হাসিনার আমলে জামাতের অনেক শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অনুযায়ী, বুধবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, জামাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত'। এই নিষেধাজ্ঞা মতাদর্শগত কারণে আরোপ করা হয়নি। তাদের ওয়েবসাইটে জামাত বলেছে যে তারা 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব এবং ইসলামিক মূল্যবোধ রক্ষা করতে' এবং 'বাংলাদেশকে একটি ইসলামিক কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষে ইসলামিক জীবনবিধি বাস্তবায়ন করতে চায়।'
পাকিস্তানে জামাতের সৃষ্টি
বাংলাদেশের 'সবচেয়ে বড় ইসলামিক দল'-এর শিকড় রয়েছে ১৯৪১ সালে লাহোরে ইসলামিক ধর্মতাত্ত্বিক আবুল আলা মওদুদির প্রতিষ্ঠিত জামাত-ই-ইসলামিতে। এর মূল লক্ষ্য ছিল ভারতে ইসলামিক মূল্যবোধের প্রচার করা এবং অবশেষে উপমহাদেশে একটি ঐক্যবদ্ধ ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু, কিছু লোক সক্রিয়ভাবে জামাতের বিরোধিতা করে মওদুদির মূল পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। ১৯৪৭ সালের পর, জামাত-ই-ইসলামি সংগঠনটি বাংলাদেশের লাইনে বিভক্ত হয়। ভারতে আবার রাজনৈতিক অপ্রাসঙ্গিকতার জন্য জামাত ভেঙে যায়। কিন্তু, পাকিস্তানে এই সংগঠনের শাখা ক্রমশ বেড়ে ওঠে।
আরও পড়ুন- ভারতের এক মহারাজা, যাঁকে আজও সেলাম ঠোকে পোল্যান্ড, কিন্তু কেন?
বাংলাদেশ সৃষ্টির বিরুদ্ধে জামাত
স্বাধীনতার পর ভারত ধর্মীয় ভিত্তিতে বিভক্ত হয়েছিল। আর, পাকিস্তান ভৌগোলিকভাবে পৃথক এবং সাংস্কৃতিকভাবে ভিন্ন পূর্ব ও পশ্চিমকে একত্রিত করার জন্য সংগ্রামে জড়িয়ে গিয়েছিল। প্রাচ্যের বাংলাভাষী জনগণ উর্দুভাষী পশ্চিম পাকিস্তানি অভিজাতদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। প্রথমে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দাবি করেছিল। শেষ পর্যন্ত একটি পৃথক দেশ দাবি করতে শুরু করেছিল। সেই সময় জামাত, মুসলমানদের একত্রিত রাখার লক্ষে, পাকিস্তানের বিভাজনের বিরোধিতা করেছিল। আর, পশ্চিম পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ধ্বংস করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠিত আধাসামরিক বাহিনী এবং কমিটিকে জামাত নেতৃত্ব দিয়েছিল। তাদের জনবল এবং অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিল।