Advertisment

জম্মু কাশ্মীর জন নিরাপত্তা আইন কী?

কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন এ সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করলে জন স্বার্থের হানি হতে পারে তাহলে তাঁরা আটকের ব্যাপারে কোনও তথ্য না-ও দিতে পারেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
PSA, Jammu and Kashmir

বিরোধীরা একে অপরের বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ আনেন

জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদু্ল্লার বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। এর জেরে দু বছর বা তার বেশি সময় পর্যন্ত আটক রাখা হতে পারে ন্যাশনাল কনফারেন্সের এই নেতাকে।

Advertisment

ফারুক আবদুল্লার আগে জম্মু কাশ্মীরের আরেক নেতা শাহ ফয়জলকেও এই আইনে আটক করা হয়েছে। একবার দেখে নেওয়া যাক এই আইনের সংস্থানগুলি কী কী।

জম্মু কাশ্মীর জনসুরক্ষা আইন কী?

১৯৭৮ সালের ৮ এপ্রিল জম্মুকাশ্মীর জনসুরক্ষা আইনে সিলমোহর দেন জম্মু কাশ্মীরের তৎকালীন রাজ্যপাল। এ আইনকে প্রায়শই ড্রাকোনিয়ান আইন বলে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

শেখ আবদুল্লার সরকার এ আইন লাগু করেছিল। কাঠ চোরাই এবং চোরাকারবারিদের আটকাতে এই কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনবলে ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে কোনও ব্যক্তিকে বিনা বিচারে দু বছর পর্যন্ত আটকে রাখা যায়।

আরও পড়ুন, জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা আসলে কী? কোথা থেকে এল এই আইন?

তবে শুরু থেকেই এ আইনের ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে এবং ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন সরকার সর্বদাই রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর এ আইন প্রয়োগ করে গিয়েছে। সন্ত্রাসবাদের উত্থানের পর থেকে জম্মু কাশ্মীর সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত জনসুরক্ষা আইন লাগু করেছে।

২০১৬ সালে হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর শয়ে শয়ে যুবকদের জনসুরক্ষা আইনে আটক করা হয়েছে এবং তাদের আটকের সময়সীমা বাড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে এই আইন সংশোধন করা হয়। সংশোধনীর ফলে রাজ্যের বাইরেও কোনও ব্যক্তিকে এই আইনবলে আটক করা যেতে পারে।



রাজ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নকারী বিষয় জড়িত থাকলে এই আইনের আওতায় কোনও ব্যক্তিকে ২ বছর পর্যন্ত এবং আইনশৃঙ্খলাজনিত বিষয়ে যুক্ত থাকলে ১ বছর পর্যন্ত কোনও ব্যক্তিকে আটক করে রাখা যেতে পারে।

জনসুরক্ষা আইনের আওতায় আটক করার নির্দেশ দিতে পারেন ডিভিশনাল কমিশনার বা জেলা শাসকরা। কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন এ সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করলে জন স্বার্থের হানি হতে পারে তাহলে তাঁরা আটকের ব্যাপারে কোনও তথ্য না-ও দিতে পারেন।

এ বছরের গোড়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে, যাতে ২০১২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে জনসুরক্ষা আইনে আটক ২০০ জনের কেস স্টাডি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে জম্মু কাশ্মীর বিধানসভায় জানিয়েছেন, ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ২৪০০ জনসুরক্ষা আইনে আটকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাক মধ্যে ৫৮ শতাংশই আদালত খারিজ করে দিয়েছে। মেহবুবা বিধানসভায় এও জানিয়েছেন যে ২০১৬ সালে জনসুরক্ষা আইনের আওতায় ৫২৫ জনকে এবং ২০১৭ সালে ২০১ জনকে আটক করা হয়েছে।

জম্মুকাশ্মীরের দলগুলি একে অন্যের বিরুদ্ধে জনসুরক্ষা আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ এনে থাকে। এ বছর ভোটে জিতলে জনসুরক্ষা আইন প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওমর আবদুল্লা। তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিল মেহবুবা মুফতির পিডিপি এবং সাজ্জাদ লোনের পিপলস কনফারেন্স।

Article 370 jammu and kashmir
Advertisment