পার্বত্য রাজ্য মণিপুরে কর্মসংস্থানের অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। কর্মহীনের হার জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ ছুঁয়েছে। বেকারত্বের হারই বুঝিয়ে দিচ্ছে, দেশের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে উন্নয়নের হার ঠিক কেমন। পরিষেবার হালই বা কেমন। আর, এই কর্মসংস্থান সংকটকে মণিপুরের অস্থিরতার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ বলে দায়ী করা হচ্ছে।
২০২১-২২ সালের বার্ষিক শ্রমশক্তির সমীক্ষা রিপোর্ট (পিএলএফএস) থেকে জানা যাচ্ছে, মণিপুরের বেকারত্বের হার দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলোর চেয়ে বেশি। শুধু তাই নয়, তা ২০২১-২২ সালে ৯ শতাংশ পৌঁছেছে। একই বছরে জাতীয় বেকারত্বের হার যখন ৪.১ শতাংশ, মণিপুরের হার তার দ্বিগুণেরও বেশি। এই সমীক্ষা রিপোর্ট, ১৫ বছর ও তার বেশি বয়সিদের হিসেব অনুযায়ী।
পার্বত্য এই রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। প্রধানত পার্বত্য অঞ্চলেই হারটা বেশি। এই পার্বত্য অঞ্চলে কুকি এবং নাগা উপজাতীয় মানুষের সংখ্যাই বেশি। ২০২১-২২ সালে PLFS অনুযায়ী, গোটা মণিপুর যখন বেকারত্বের হার ছিল ৯.৫ শতাংশ, সেখানে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার, অর্থাৎ যেখানে মেইতেইদের সংখ্যা বেশি, সেখানে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৬ শতাংশের সামান্য কম। সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মণিপুরের প্রায় ৬৫ শতাংশ পুরুষ গ্রামীণ এলাকায় স্বেচ্ছাদ্যোগী। যা এক্ষেত্রে সর্বভারতীয় হার ৫৯ শতাংশের তুলনায় বেশ বেশি।
আরও পড়ুন- মণিপুরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে, উদ্বেগের মধ্যেই সেনার ট্রাকে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের
বাণিজ্য, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহণ, যোগাযোগ এবং রিয়েল এস্টেট, সাব-সেক্টর-সহ সবক্ষেত্রেই পরিষেবার হার অত্যন্ত খারাপ। যার জেরে মণিপুরের গ্রস স্টেট ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা জিএসডিপি হ্রাস পেয়েছে। যা তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সেই তুলনায় কেবল জনপ্রশাসনই যেটুকু ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছে।
যার গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড বা জিভিএ ২০২০ অর্থবর্ষে ১১.৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে বেড়েছে ৩২ শতাংশের বেশি। আর, ২০২২ সালে তা দ্বিগুণ বেড়েছে। জনপ্রশাসন হল চাকরি-সহ সরকারি খরচ। আর, সেই কথা মাথায় রেখেই সংরক্ষণভুক্তির জন্য মণিপুরে এত লড়াই। অতীতে যে ধরনের লড়াইয়ের সাক্ষী হয়েছে মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থানের মত বিভিন্ন রাজ্য।