মণিপুরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে, উদ্বেগের মধ্যেই সেনার ট্রাকে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের

কড়া নিরাপত্তায় সব সামলাচ্ছেন রক্ষীরা।

কড়া নিরাপত্তায় সব সামলাচ্ছেন রক্ষীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Manipur

সোমবার সন্ধ্যায় ইম্ফলের খুমান লাম্পাক স্পোর্টস কমপ্লেক্সে উদ্বিগ্ন মানুষজন জড় হয়েছিলেন। নিজেদের উপস্থিতি তাঁরা আরও অনেক বেশি স্পষ্ট করে দিলেন একসঙ্গে হাততালি দিয়ে। এই হাততালি দেওয়ার কারণ, সেনাবাহিনীর কনভয়ের ট্রাক শিবিরে এসে পৌঁছনো। ওই ট্রাকে ছিলেন শিবিরে আশ্রয় নিতে আসা বেশ কয়েকজন। যাঁরা সেনার ট্রাকে চেপে সেই সময় শিবিরে এলেন। তাঁরা উপস্থিত বাকিদের হাততালির মধ্যে দিয়ে সেনার ট্রাক থেকে শিবিরের মাটিতে নামলেন।

Advertisment

তাঁদের অন্যতম হলেন কবিতা। তাঁর মেয়ে নার্সিং ছাত্রী ২১ বছরের তনুজা তখন শিবিরেই। মাকে জীবন্ত অবস্থায় ট্রাক থেকে নামতে দেখে তনুজা কান্নায় ভেঙে পড়েন। কবিতা বলেন, 'যেন একটা মৃত্যুর অভিজ্ঞতার মধ্যে কাটিয়েছি। এখনও যেন সেটা জীবন্ত। আমার কিছুই বলার নেই।' কবিতা চূড়াচাঁদপুর জেলার ত্রাণ শিবিরে আটকে পড়া সেই ৫০০ জনের অন্যতম, যাঁরা সেনার কড়া নিরাপত্তায় সোমবার বিকেল ৫টা ২০ নাগাদ ইম্ফল পৌঁছলেন। আবার ইম্ফলের ত্রাণ শিবিরে আটকে থাকা একই সংখ্যক লোক আগের দিন বিকেল ৩টা নাগাদ চূরাচাঁদপুরে পৌঁছন।

৩ মে, পার্বত্য রাজ্য মণিপুরে মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষের পর থেকে দুটি উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলের মধ্যে এটাই প্রথম শিবির অদলবদল। কুকি-অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর থেকে মেইতিদের এবং মেইতি-অধ্যুষিত ইম্ফল থেকে কুকিদের সরিয়ে নেওয়াকেই প্রাথমিকভাবে নিরাপদ রাস্তা বলে মনে করেছে প্রশাসন। দুই জায়গাতেই কুকি ও মেইতিদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের জেরে উত্তাপ ছড়িয়েছিল। সোমবারের পরিস্থিতি বুঝিয়ে দেয় যে সেই অগ্নিগর্ভ অবস্থার অনেকটাই বদল ঘটেছে।

Advertisment

আরও পড়ুন- মণিপুর নিয়ে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্টও, বাইরে চুপ সরকার সত্যিটা ফাঁস করল আদালতে

সোমবার আরও ৪৬৭ জনকে মোরেহ থেকে ইম্ফল নিয়ে যায় সেনার ট্রাক। সোমবার সন্ধ্যায় যাঁরা ইম্ফল পৌঁছন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৭২ জন চূড়াচাঁদপুর মেডিকেল কলেজের ছাত্র এবং ৪ মে থেকে তাঁদের জেলা প্রশাসনের কমপ্লেক্সে একটি ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছিল। প্রথম বর্ষের মেডিক্যাল পড়ুয়া বছর ২০-র জয়শ্রী সালাম বলেন, 'আমরা কল্পনাও করতে পারিনি যে এই ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে পারে। আমরা ৩ মে রাতে আমাদের হস্টেলে আটকে ছিলাম। ৪ মে ক্যাম্পে পৌঁছই। সোমবার সকালে, জেলাশাসক আমাদের জানান যে ইম্ফলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। সেখানে খুব কড়া নিরাপত্তা ছিল, তাই যাত্রার সময় আমরা ভয় পাইনি।'

Violence Manipur army