মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ঘিরে একের পর এক ইতিহাস। এখনও ভোটগণনা পর্ব শেষ হয়নি। তবে ট্রেন্ড বলছে আমেরিকার কুর্সি দখলে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস কার তা সরকারিভাবে ঘোষণা না হলেও মার্কিন রাজনীতিতে বদল যে আসন্ন তা প্রায় নিশ্চিত।
সত্তরোর্ধ্ব দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জারি রয়েছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে কিংবা ভোট চলাকালীন প্রচার মঞ্চে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়েননি কেউ কারওকে। বরং ভাষার তীব্রতা ও স্ট্র্যাটেজিতে কার্যত ধুইয়ে দিয়েছেন একে অপরকে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে জো বাইডেন যদি প্রেসিডেন্ট হন তাহলে কী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি আমূল সংস্কার করে নতুন আমেরিকা গঠন করতে পারবেন? মনে রাখতে হবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন নির্বাচন জিতে এসেছিলেন সেবার ইস্যু ছিল একটাই- 'মেক ইন আমেরিকা'! বাইডেন কী পারবেন?
প্রাক্তন বিদেশসচিব বিজয় গোখলের কথায়, "এই প্রতিযোগিতার দৌড়ে যে জিতবেন সেখানে একটা বিষয় পরিষ্কার আমেরিকায় কী হবে তা ঠিক করবেন আমেরিকানরাই। তা সে রিপাবলিকানই হোক কিংবা ডেমোক্র্যাট। মার্কিন যুক্ররাষ্ট্র এগোবে ইতিহাসের নিয়ম মেনেই। ট্রাম্প আমেরিকানরাই সংজ্ঞায়িত করবেন তা।"
আরও পড়ুন, হোয়াইট হাউস দখলের দোরগোড়ায় বিডেন, মামলা দায়ের ট্রাম্প শিবিরের
মার্কিন কুর্সি দখলের যে হিসেব তা যদি উলটে যায় এখন, অর্থাৎ ধরে নেওয়া যাক ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি পুনরায় জয়লাভ করেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাহলে বুঝতে হবে সব ক্ষতি মেনেও কিন্তু ট্রাম্পে আস্থা রাখছেন তাঁরা। রিপাবলিকান এই প্রার্থীর ঝুলিতে কিন্তু খুব একটা কম ভোটও পড়েনি। আর যদি ট্রাম্প হেরে যান তাহলে জো বাইডেনকে কিন্তু মনে রাখতে হবে ব্যালট বক্সে ডোনাল্ড সমর্থকের সংখ্যা। আসলে নতুন যুগের সুচনা দেখতে কে না ভালবাসে! কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্কে তা মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন কি না বাইডেন, তা এখনও সময়ের অপেক্ষা।
যদিও একটি বিষয় স্পষ্ট, আমেরিকার মুক্ত সীমানা এবং অবাধ বাণিজ্যের দিনগুলিকে কিন্তু বাইডেন ও তাঁর দল ফিরিয়ে আনতে পারবেন না, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশ টেনে দিয়েছেন। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা হয়তো শিথিল করতে পারেন, কিন্তু অভিবাসন নীতিকে আমূল বদলে দিতে তিনি পারবেন না। ওয়ার্ক-ভিসার কয়েকটি বিভাগে কিছুটা রদ বদল করতে পারবেন, কিন্তু মার্কিন কর্মক্ষেত্রে বিদেশিদের একচেটিয়া রাখতে পারবেন না। ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনকালে যে যে নীতি-নিয়ম চালু করেছেন তা বাদ দিতে পারবেন না জো বাইডেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত বাইডেন ডেমোক্র্যাট দলের হলেও তাঁর ব্যাণিজ্যিক কৌশলে কিন্তু রয়েছে ট্রাম্পেরই ছায়া।
তবে কিছুই কি বদল হবে না? যুক্তি বলছে হবে। জো বাইডেন জিতলে আমেরিকা ট্রান্স-আটলান্টিক জোটের সূচনা করে মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুনরায় সংযোগ স্থাপন হতে পারে এবং পারস্পরিক সম্মান বাড়তে পারে। তবে তিনিও তো আমেরিকান, তাই দিনের শেষে তিনি আমেরিকান নীতিই গঠন করবেন তা বলাই বাহুল্য।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন